আদানি গোষ্ঠী গুজরাটের মুন্দ্রায় ৩৪,৯০০ কোটি টাকার পেট্রোকেমিক্যাল প্রকল্পের কাজ স্থগিত করেছে। কারণ এটি মার্কিন সংবাদ সংস্থা হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদনের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্ষতি সামলাতে আদানি গোষ্ঠী এবার চেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন।
আদানি জানিয়েছে
আদানি গ্রুপ তাদের মেলে জানিয়েছে, তাদের পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি জারি না-হওয়া পর্যন্ত গ্রিন পিভিসি প্রকল্পের সমস্ত কার্যকলাপ বন্ধ রাখা হবে। নিয়োগ বন্ধ থাকবে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা এখন প্রকল্পের পুনরায় মূল্যায়ন করছে। আর ভবিষ্যতের কথা ভেবে, প্রকল্পের ধারাবাহিকতা, সময়সীমা সংশোধন-সহ অন্যান্য বিষয়ে মূল্যায়নে জোর দিয়েছে।
মুন্দ্রা পেট্রোকেমিক্যাল প্রকল্প
আদানি গোষ্ঠীর অধীনস্ত আদানি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড (এইএল) ২০২১ সালে গুজরাটের কচ্ছ জেলায় আদানি পোর্টস এবং স্পেশ্যাল ইকোনমিক জোনের জমিতে গ্রিনফিল্ড কয়লা-টু-পিভিসি প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য একটি সম্পূর্ণ মালিকানাধীন মুন্দ্রা পেট্রোকেম লিমিটেড তৈরি করেছিল। প্ল্যান্টটির পলি-ভিনাইল-ক্লোরাইড (পিভিসি) উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ২,০০০ কেটিপিএ (প্রতি কিলো টন)। যার জন্য বছরে ৩.১ মিলিয়ন টন কয়লা (এমটিপিএ) প্রয়োজন। যা অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া এবং অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা হবে।
আরও পড়ুন- হিন্ডেনবার্গ ইস্যুতে ক্ষতির জের, স্থগিত আদানিদের পেচেম প্রকল্প
কী কাজে লাগে?
পিভিসি হল পলিথিন এবং পলিপ্রোপিলিনের পরে বিশ্বের তৃতীয়-সবচেয়ে ব্যাপকভাবে উত্পাদিত প্লাস্টিকের সিন্থেটিক পলিমার। এটি ফ্লোরিং থেকে শুরু করে স্যুয়ারেজ পাইপ এবং অন্যান্য পাইপ অ্যাপ্লিকেশন, বৈদ্যুতিক তারের নিরোধক এবং অ্যাপ্রন তৈরি ইত্যাদির জন্য কাজে লাগে। এটি প্লাস্টিকের বোতল, অ-খাদ্য প্যাকেজিং, খাদ্য-কভারিং শীট এবং প্লাস্টিকের কার্ড (যেমন ব্যাংক বা সদস্যপদের কার্ড) তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়।
লাভ কী হত?
ভারত ২০২২ সালে মোটামুটি ১.৪৫ মিলিয়ন টন পিভিসি উত্পাদন করেছে। আলকালি ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার তথ্য অনুসারে আরও ১.৫ মিলিয়ন টন পিভিসি আমদানি করেছে। মুন্দ্রা পেট্রোকেমিক্যালস প্রকল্পটি ভারতে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন এবং পিভিসির চাহিদার মধ্যে ব্যবধান পূরণ করার পরিকল্পনা করেই তৈরি হয়েছিল। যাতে আমদানির পরিবর্তে ভারত পিভিসি রফতানি করতে সক্ষম হয়, এই ছিল লক্ষ্য।