চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণ করে ইতিহাস তৈরির মাত্র ১০ দিন পর, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) সূর্য অধ্যয়নের জন্য তার মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করবে। চেয়ারম্যান এস সোমনাথের নেতৃত্বাধীন ইসরোর বিজ্ঞানীরা আদিত্য-এল১-কে শ্রীহরিকোটা থেকে ২ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টা ৫০-এ উৎক্ষেপণ করবেন। মহাকাশযানটি পৃথিবী থেকে পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যবর্তী ল্যাগ্রেঞ্জ ১ বা এল১ বিন্দুতে ১৫ লক্ষ কিলোমিটার বা ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার ভ্রমণ করবে। এই দূরত্ব চন্দ্রযান অভিযানে পাড়ি দেওয়া দূরত্বের প্রায় চারগুণ। তবে, পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্বের কাছে কিছুই না। কারণ, পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব ১৫ কোটি মিলিয়ন কিলোমিটার। যার অর্থ, তার মাত্র ১% দূরত্ব অতিক্রম করবে আদিত্য ল্যাগ্রেঞ্জ ১ বা আদিত্য-এল১।
আদিত্য-এল ১ অভিযান
আদিত্য-এল ১ অভিযানে পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল (পিএসএলভি) ১,৪৭৫ কেজি ওজনের মহাকাশযান বহন করবে। এই মহাকাশযাটিকে পৃথিবীর চারপাশে একটি উপবৃত্তাকার কক্ষপথে নিয়ে যাওয়া হবে। মহাকাশযানটি সাতটি বৈজ্ঞানিক পেলোড বহন করবে। চাঁদে যে পেলোডগুলো পাঠানো হয়েছে, তার চেয়ে আদিত্য-এল১ এর পেলোড দুই গুণেরও বেশি হালকা। চন্দ্রযান-৩ অভিযানের মতই, সূর্যাভিযানের মহাকাশযানও পৃথিবীর চারপাশে কক্ষপথ এবং গতিবেগ বাড়াবে। র পাশাপাশি মহাকাশযানের গতিবেগ সূর্যের দিকে গুলতি না হওয়া পর্যন্ত বাড়ানো হবে। যেখানে পৌঁছনোর কথা, সেই এল১ পয়েন্টের দূরত্ব প্রায় চার মাসে অতিক্রম করবে মহাকাশযান। পৌঁছনোর পর এল১ পয়েন্টের চারপাশে একটি শূন্য কক্ষপথে ওই মহাকাশযান প্রবেশ করবে। আর, সেখান থেকেই সূর্যে নজরদারি চালাবে। পাঁচ বছর ধরে তথ্য সংগ্রহ করবে।
আরও পড়ুন- রোজগার মেলায় কি ভারতের বেকারত্ব সমস্যার সমাধান সম্ভব?
এল-১ বিন্দু কী?
যে কোন দুটি মহাকাশীয় বস্তুর মধ্যে এল১ থেকে এল৫ পাঁচটি ল্যাগ্রঞ্জ বিন্দু থাকে। এই পয়েন্ট বা বিন্দুসমান স্থানগুলোকে মহাকাশে পার্কিং স্পট হিসাবে ব্যবহার করা হয়। কারণ, এই সব বিন্দুর মত স্থানগুলোয় মহাকাশীয় বস্তুর মহাকর্ষীয় টান অত্যন্ত কম থাকে। এই টানে মহাকাশীয় বস্তুর চারপাশে ঘোরা যায়। কিন্তু, ওই বস্তুর ওপর আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে না। যার ফলে, এইজাতীয় বিন্দুতে স্থাপন করা উপগ্রহকে তার আছড়ে পড়া আটকাতে বা অবস্থান বদলানো ঠেকাতে প্রচুর জ্বালানি ব্যয় করতে হবে না।