বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) নতুন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদন অনুসারে, এশিয়া হল বিশ্বের সবচেয়ে দুর্যোগ-প্রবণ অঞ্চল। কারণ, এশিয়া মহাদেশ ২০২২ সালে ৮১টি আবহাওয়া, জলবায়ু এবং জল-সম্পর্কিত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে। ৫ কোটিরও বেশি মানুষ সমস্যায় পড়েছেন। প্রায় ৫,০০০ জন মারা গিয়েছেন। আর, ৩,৬০০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তার আগের বছর আবার এশিয়ায় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সংখ্যা ছিল আরও বেশি, প্রায় ১০০টি। কিন্তু, ২০২২ সালে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে।
তাইওয়ান এবং উত্তর ফিলিপিন্সে আঘাত হানার পর চিনেও একটি সুপার টাইফুন আঘাত হেনেছিল। যার ফলে অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। মাত্র কয়েকদিন আগে, গত ১৮ জুলাই চিনের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৫২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যায়। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, এশিয়ায় ২০২২ সালে গড় তাপমাত্রা ১৯৯১-২০২০ সালের গড় তাপমাত্রার থেকে প্রায় ০.৭২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। ১৯৬১-১৯৯০ এই তিন দশকের গড় তাপমাত্রার থেকে ২০২২ সালের তাপমাত্রা প্রায় ১.৬৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। যার মধ্যেই চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলো লক্ষ্য করা গেছে।
উদাহরণস্বরূপ, খরা ২০২২ সালে এশিয়ার বিরাট অংশকে ধ্বংস করেছে। তার মধ্যে বিশেষত চিন গত বছরের মতো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত ইয়াংসি নদীর অববাহিকা গত ছয় দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ খরার মুখে পড়েছিল। এটি শুধু ফসল, গাছপালা, সেই সঙ্গে পানীয় জলের সরবরাহকেই প্রভাবিত করেনি। বরং, প্রায় ৭৬ কোটি মার্কিন ডলারের আর্থিক ক্ষতি করেছে।
আরও পড়ুন- মোদী জমানায় বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হতে চলেছে ভারত?
আবার অন্যান্য অনেক অঞ্চল মারাত্মক বন্যা এবং চরম বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পাকিস্তান হল তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ২০২২ সালে বর্ষার মরশুম শুরুর মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে স্বাভাবিক মোট বর্ষার ৬০ শতাংশ বৃষ্টিপাত হয়েছে পাকিস্তানে। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে শহরে জল জমেছে। পাশাপাশি আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস এবং হিমবাহের হ্রদ বিস্ফোরণে বিস্তীর্ণ অঞ্চল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাকিস্তান জানিয়েছে, সাড়ে ৩ কোটিরও বেশি মানুষ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ১,৭৩০ জনেরও বেশি লোক। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন সব মিলিয়ে প্রায় 8০ লক্ষ পাকিস্তানবাসী।