আজ থেকে ৫০ বছরেরও বেশি আগে, ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায় হিন্দি ছবি 'মেরা সায়া'। সেই ছবি, যেখানে 'বরেলিকে বাজার মে' তাঁর 'ঝুমকা' (বাংলায় আমরা যে কানের দুলকে ঝুমকো বলি) হারিয়ে ফেলেন অভিনেত্রী সাধনা। মনে করুন আশা ভোসলের কণ্ঠে সুরকার মদন মোহনের সেই অমর সৃষ্টি, 'ঝুমকা গিরা রে, বরেলিকে বাজার মে'। আজ এত বছর পর সেই ঝুমকা ফিরল বরেলিতে - যেমন তেমন করে নয়, ১৪ ফুট উঁচু একটি লাঠির মাথায় চড়ে বরেলিতে অধিষ্ঠিত হলো ২৭২ কিলো ওজনের, পিতলের গায়ে রঙবেরঙের পাথর বসানো এই ঝুমকা।
Advertisment
বরেলিতে ঢোকার মুখেই লখনৌ-দিল্লি হাইওয়ের ধারে শনিবার বসানো হয় এই ঝুমকা, যাকে অলঙ্কৃত করছে ওই এলাকার বিখ্যাত জরির কাজ। বরেলি রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) রাজেশ পাণ্ডে তো খুশিতে ডগমগ হয়ে বললেন, "আজ তার ঝুমকা খুঁজে পেল বরেলি। এবার আমরা একেবারে ক্লোজার রিপোর্ট দিয়ে বলে দিতে পারি, হারানো ঝুমকার কেস সল্ভড!" ফেসবুকেও এই মর্মে ঘোষণা করে দেন পাণ্ডে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে পাণ্ডে জানান, অতীতেও এই 'ঝুমকা প্রকল্পের' প্রস্তাব দেওয়া হয় বরেলি ডেভেলপমেন্ট অথরিটিকে, কিন্তু কোনও না কোনও কারণে তা আটকে যায়। এরপর 'স্মার্ট সিটি' প্রকল্পের আওতায় আরেকটি মিটিংয়ে ফের এই প্রসঙ্গ তোলেন ডিআইজি, এবং এবার তা গৃহীত হয়।
পাণ্ডের কথায়, "ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম জনপ্রিয় গানগুলির একটি হলো 'ঝুমকা গিরা রে'। একবার পুরোনো নথিপত্র ঘাঁটতে ঘাঁটতে আমি এবং পুলিশ কমিশনার আবিষ্কার করি যে ব্রিটিশ আমলে এই প্রদেশে দুটি জেলা ছিল - বরেলি এবং রায় বরেলি। এবং সেসময় সকলেই দুটোর মধ্যে গুলিয়ে ফেলতেন। বিভ্রান্তি এড়াতে বরেলিকে 'বাঁশ বরেলি' নামে ডাকতে শুরু করেন স্থানীয়রা, যেহেতু এখানে বাঁশের ফলন খুব ভালো। কিন্তু ওই গানটির দৌলতে 'বাঁশ বরেলি'র পরিচিতি ছড়ায় 'ঝুমকা ওয়ালা বরেলি' হিসেবে।
ডিআইজি জানিয়েছেন, বর্তমানের দৈত্যাকার ঝুমকাটি মোরাদাবাদে তৈরি করা হয়েছে, সময় লেগেছে স্রেফ তিনমাস। তিনি আরও জানিয়েছেন যে এর আগে আরেকটি ঝুমকা বাতিল করা হয়, যেহেতু "দেখতে ঝুমকার মতো হয় নি"।
শনিবার এই ঝুমকা বসানোর সময় স্থানীয় স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা সমস্বরে গেয়ে ওঠে, "ঝুমকা গিরা রে, বরেলি কে বাজার মে..." ক্রমে উপস্থিত সকলের মুখেই ছড়িয়ে পড়ে সেই সঙ্গীত।
আমাদের নিউজলেটার সদস্যতা!
একচেটিয়া অফার এবং সর্বশেষ খবর পেতে প্রথম হন