Advertisment

নাইটহুড ফিরিয়ে ছিলেন, ২০২০ তে দাঁড়িয়ে জাতীয় পুরস্কারও কি ফিরিয়ে দিতেন রবীন্দ্রনাথ?

ধরে নেওয়া যাক রবীন্দ্রনাথ এই সময়ের। ইতিমধ্যে পেয়েছেন নাম, যশ, খ্যাতি, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মান, সঙ্গে আরও যা কিছু পাওয়া যায়। এই অন্ধকার সময়ে এত পাওয়ার মাঝে একলা লাগত? ফিরিয়ে দিতেন সব স্বীকৃতি?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

রাত ফুরোলেই বৈশাখ, ২৫। ১৬০ তম রবীন্দ্রজয়ন্তী। সালটা ২০২০। সময়টা অশান্ত। সামাজিক-রাজনৈতিক পরিস্থিতি টালমাটাল। এক বছর আগেই পেরিয়ে এসেছি ইতিহাসের কালো অধ্যায়ের অন্যতম কালো অধ্যায় জালিয়ানওয়ালাবাগ কাণ্ডের শতবর্ষ। সেই নৃশংস হত্যাকাণ্ড, যার প্রতিবাদে নাইট উপাধি ফিরিয়ে দেন রবীন্দ্রনাথ। সেও তো ছিল এমনই এক বৈশাখের দিন। ১০১ বছর পরের ভারত। ৭০ পেরোনো স্বাধীন ভারত। এই 'নতুন' ভারতে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রীয় সম্মান, স্বীকৃতি, পুরস্কার নিয়ে কী ভাবতেন মানুষটা? এমনই প্রশ্ন নিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে যোগাযোগ করা হয়েছিল কবি এবং লেখক মন্দাক্রান্তা সেনের সঙ্গে।

Advertisment

আরও পড়ুন, ‘সংস্কৃতিতে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং, তাই রবীন্দ্রনাথ সবার হলেন না’

প্রশ্ন- ধরে নেওয়া যাক রবীন্দ্রনাথ এই সময়ের। বিগত কয়েক বছরে দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, নজিবের হারিয়ে যাওয়া, রোহিতের আত্মহত্যা, কেন্দ্রের নাগরিকত্ব আইন আনা এবং তার বিরুদ্ধে পালটা আন্দোলন সবকিছু প্রত্যক্ষ করেছেন, ধরে নেওয়া যাক এমনটা। ইতিমধ্যে পেয়েছেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মান, সঙ্গে আরও যা কিছু পাওয়া যায়। এই এত পাওয়ার মাঝে একলা লাগত? ফিরিয়ে দিতেন সব স্বীকৃতি?

মন্দাক্রান্তা- ১৯১৯ এ রাষ্ট্রের সংজ্ঞাটা আলাদা ছিল। সেখান থেকে দেখলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য তাঁকে নাইট উপাধি দিয়েছিল। জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করে তিনি এই উপাধি ফিরিয়ে দেন। অর্থাৎ এক অর্থে রাষ্ট্রের অত্যাচারের প্রতিবাদ করেন। আজ দেশ স্বাধীন। আজকের পরিস্থিতির সাপেক্ষে শাসকের পদক্ষেপ, উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। আমি মনে করি এই সময়ে দাঁড়িয়ে কোনও রাষ্ট্রীয় সম্মান পেলে রবীন্দ্রনাথ তা প্রত্যাখ্যান করতেন। এই সরকারের শাসনকালে আগে যদি কিছু পেয়ে থাকতেন, তাও ফিরিয়ে দিতেন।

আরও পড়ুন, রবীন্দ্রচেতনায় কীভাবে এসেছিল বন্দি জীবন?

প্রশ্ন- নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কীরকম ভাবনা হত কবিগুরুর?

মন্দাক্রান্তা- ওঁর একটা লাইনই বলব। "শক হূণ দল, পাঠান মোগল, এক দেহে হল হীন", এটাই ভারতের আত্মা।... নাগরিকত্ব নিয়ে শাসক দল যে প্রশ্ন তুলেছিল, রবীন্দ্রনাথের বোধ, অনুভূতি, ভাবনা, অবস্থান তার বিরোধী বিন্দুতেই থাকত।

প্রশ্ন- এই সময়ে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্র ভাবনা কতোটা প্রাসঙ্গিক?

মন্দাক্রান্তা- এই যে নাগরিকত্বের প্রশ্ন নিয়েই কথা বলছিলাম, এই সময়ে যে ব্রাহ্মণ্যবাদ, মনুবাদ নিয়ে নতুন করে বাড়াবাড়ি শুরু হয়েছে, গোরা উপন্যাসটা এসবের বিরুদ্ধে একটা সপাট উচ্চারণ। রবীন্দ্রনাথের গান, উপন্যাস সব সময়েই প্রাসঙ্গিক। 'হে ভৈরব শক্তি দাও, ভক্তপানে চাহো' কিমবা 'বিপদে মোরে রক্ষা করো, এ নহে মোর প্রার্থনা, বিপদে আমি না যেন করি ভয়", এই  লড়াইয়ের গান তো আমার সময়েরই, ভীষণ ভাবে।

Rabindranath Tagore
Advertisment