সাংবাদিকতার সংজ্ঞা ক্রমশ বদলে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসাবে স্বীকৃত এই গুরুত্বপূর্ণ পেশাটির সমস্ত এথিকস জলছবিতে বদলে যাচ্ছে ক্রমশ। ইন্টারনেটের এই বাড়বাড়ন্তের সময়ে খবর একদিকে যেমন সহজলভ্য এবং সস্তা হচ্ছে, একইসঙ্গে বদলে যাচ্ছে খবরের সংজ্ঞাও। কোনটা আসল খবর আর কোনটা ফেক, কোনটাই বা রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা, তা অনেক পাঠকই বুঝে উঠতে পারেননা ঠিকমতো। সদ্য স্মার্টফোন ব্যবহার করতে শেখা মানুষটিকে আসল নকলের ফারাক চেনাবে কে? কে বাঁধবে এই 'ক্লিকবেইট' সময়ে বিড়ালের গলায় ঘণ্টা? কোম্পানির ক্যাশবাক্সকে মা লক্ষ্মীর কৃপাধন্য করতে বদলে ফেলা হচ্ছে খবর। রোমাঞ্চকর হেডলাইন, ভুয়ো তথ্য এবং আরও বেশি হিটের জন্য ধর্মীয় কুসংস্কার এবং বিকৃত যৌনতার আশ্রয় নেওয়া যে সাংবাদিকতার বিকৃতি, উত্তর-সত্য নির্ভর রাজনীতি যে ক্রমশ বদলে ফেলছে এই পেশার সংজ্ঞা তাই বা কে শেখাবে এঁদের?
একটি সংবাদ সংস্থার বিশ্লেষণ অনুযায়ী ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত আমেরিকার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পর্কিত যে কুড়িটি খবর ফেসবুকে সবচাইতে বেশি জনপ্রিয় হয়েছিল তার সবকটিই ভুয়ো। বিস্ময়ের কথা এই খবরগুলির পরিবেশক তালিকায় বিশ্বের সেরা কুড়িটি সংবাদ সংস্থার একটিও নেই। ভুয়ো খবরের এই নিদারুণ থাবা থেকে মুক্তি পায়নি আমাদের ভাষার বহু সংবাদ সংস্থাই।
অস্থির এই সময়েই আমরা এসেছি পাঠকদের কাছে সঠিক সংবাদ পরিবেশনের অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একশ বছরের বিশ্বাসযোগ্যতার ধ্বজ কাঁধে নিয়ে বেচাল হবার কোন অবকাশই আমাদের কাছে নেই। ভাগ্যিস নেই।
শুধু সত্য পরিবেশনই নয়, আমাদের কাঁধে নিদারুণ দায়িত্ব খবরের পরিবেশনা নিয়েও। রুচিসম্মত বাস্তবসম্মত খবরও যে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করা যায়, তা প্রমাণ করার একবুক ইচ্ছে নিয়ে আমরা তরী ভাসালাম। সঙ্গে থাকুন।