Advertisment

ব্যবসা নেই, তবে কি রাজনীতির গন্ধে বঙ্গে ঢুকছেন গণেশ?

সাধারণত বছরের এইসময় বিশ্বকর্মার প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা। এখানেও ঘটে গিয়েছে পরিবর্তন। এখন সেই জায়গা নিয়েছেন উমার আদরের ছোট ছেলে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Ganesh pujo

কুমোরটুলিতে গনেশ প্রতিমার সারি। ছবি- শশী ঘোষ

রাজ্য জুড়ে গণেশ পুজোর ধুম পড়েছে। কলকাতার পটুয়া পাড়ায় শেষ তুলির টানও পড়ে গেছে। যে দিকে তাকানো যায়, সেদিকেই গণেশ মূর্তি। ছোট, বড় নানা ধরনের গণপতি। একেবারে যেন সাম্রাজ্য। এমনকি অর্ডার ছাড়াও চলছে গণেশ মূর্তি তৈরির কাজ। কারণ, গণেশ মূর্তির খদ্দের পেতে অসুবিধা হবে না। কুমোরটুলির এই দৃশ্যই জানান দিচ্ছে, রাজ্যে ব্যবসার হাল যাই হোক না কেন, পুজোর সংস্কৃতিতে আমূল বদল ঘটছে।

Advertisment

কুমোরটুলি কার্টুন গণেশ। ছবি: শশী ঘোষ

সাধারণত বছরের এইসময় বিশ্বকর্মার প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা। এখানেও ঘটে গিয়েছে পরিবর্তন। এখন সেই জায়গা নিয়েছেন উমার আদরের ছোট ছেলে। দিন দিন বাড়ছে তাঁর প্রতিপত্তি। মৃৎশিল্পী দীপক পাল, বিশ্বজিত পালরা বলেন, "বছর ৭-৮ আগে গোটা পঞ্চাশেক গণেশ প্রতিমা তৈরি হত। এরাজ্যে তেমন একটা চাহিদা ছিল না গণেশ প্রতিমার। ২০১৯-এ গণেশ প্রতিমা তৈরির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ থেকে ৯ হাজারে। গতবছরও চাহিদা ছিল সাড়ে পাঁচ হাজারের মতন। শুধু অবাঙালিরা নন, বাঙালিরাও গণেশ পুজোয় মেতেছে।"

kumortuli kolkata, কুমোরটুলিতে দিন-রাত এক করে কাজ করছেন শিল্পীরা। ছবি: শশী ঘোষ

কুমোরটুলিতে এখনও অবধি বিশ্বকর্মার বায়না উল্লেখযোগ্য ভাবে কম। স্বাভাবিক ভাবেই বায়না ছাড়া শিল্পের দেবতার মূর্তি বানাতে এখন আর ইচ্ছুক নন মৃৎশিল্পীরা। অধিকাংশ কলকারখানা বন্ধ। মানুষ ঝুঁকছেন গণেশ পুজোর দিকে। শিল্পী দীপঙ্কর পাল বলেন, "গণেশ পুজোকে রাজনৈতিক রং দেওয়া ঠিক নয়। একসময় রাজ্যে অসংখ্য ছোট-বড় কলকারখানা ছিল। ধুমধাম করে বিশ্বকর্মা পুজো হত। এখন দিন বদলেছে। সুখ-সমৃদ্ধির আশায় গণেশ পুজো বাড়ছে। আমাদের কাছে বায়নাও বাড়ছে।"

ganesh pujo গণপতিকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন গৃহকর্ত্রী। ছবি: শশী ঘোষ

দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য মেনে গণেশ চতুর্থীতে মুম্বইয়ের পথ-ঘাট কেঁপে ওঠে 'গণপতি বাপ্পা মোরিয়া' ধ্বনিতে। কিন্তু এখন মুম্বইয়ের মতন এখানেও অনেকে বছরভর অপেক্ষা করে থাকেন গণেশ চতুর্থীর জন্য। বেশ কয়েক বছর ধরে এই রাজ্যে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে গণেশের আরাধনা। বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, "১০টার ওপর গণেশ পুজোয় নিমন্ত্রণ এসেছে। যেতে তো হবে। আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারাও অনেক পুজো মন্ডপে যোগ দেবেন।" গাঙ্গুলিপুকুর মিনিবাস স্ট্যান্ডে নয় বছর ধরে গণেশ পুজো করে আসছেন রাজ্য যুব মোর্চা নেতা প্রীতম দত্ত। প্রীতমের দাবি, "আমি বিজেপি করি, তাই থানা থেকে শুরু করে কেউ অনুমতি দিচ্ছিল না। হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে গণেশ পুজো করছি। দলের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব এই পুজোতে হাজির থাকবেন।"

ganesh chathurthi সুউচ্চ গণেশ মূর্তি তৈরির কাজ চলছে কুমোরটুলিতে। ছবি: শশী ঘোষ

পুজো বাড়লে বাড়বে পুজোর পুরোহিতের চাহিদাও। খড়দহ হরিসভার পুরোহিত পার্থ চক্রবর্তী বলেন, "এবছর আমার কাছে কুড়িটি গণেশ পুজো করার জন্য আবেদন এসেছিল। গত বছরের তুলনায় সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি। অতগুলো পুজো করার মতন সময় আমার নেই। তবে বুঝতেই পারছি এ রাজ্যে গণেশপুজো জনপ্রিয় হচ্ছে। এই পুজোর মাধ্যমে সুখ, সমৃদ্ধি, ব্যবসা-বানিজ্য, আর্থিক উন্নতি চাইছে বাঙালিও।"

indian festivals
Advertisment