Advertisment

রেজিনাল্ড 'রেক্স' ডায়ার - এক ঘাতকের জন্ম ও মৃত্যু

জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ড। পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যার তালিকায় অন্যতম। সেই অভিশপ্ত দিনের শতবর্ষ পরে আজ ফিরে দেখা এই ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু জেনারেল ডায়ারের জীবন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
jallianwala bagh tragedy 100 years

১৯১৯ এর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কয়েক মাস পর জালিয়ানওয়ালা বাগ। ছবি: উইকিপিডিয়া

রাতের গভীর অন্ধকারে যে মোটরগাড়িটা সেদিন জলন্ধর থেকে অমৃতসরে ছুতে আসছিল, তার পিছনের সিটে বসে এক মধ্যবয়স্ক মানুষ ঘন ঘন সিগারেটে টান দিচ্ছিলেন। রোগা এবং ঈষৎ রুগ্ন মানুষটিকে তাঁর বস লাহোর থেকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সে রাত্রে ছুটে যাওয়ার জন্য। তাঁর কাছে নির্দেশ এবং আদেশ, দুইই ছিল, যে কোনও মূল্যে স্বাভাবিক করতে হবে আগ্নেয়গিরির উপর দাঁড়িয়ে থাকা অমৃতসরকে। মানুষটার মধ্যে এই ধারণা জন্মে গেছিল যে, সেদিন ভারতে ব্রিটিশ শাসন রক্ষার সব দায়িত্ব তাঁর।

Advertisment

মানুষটার ডাকনাম রেক্স, ভালো নাম রেজিনাল্ড। রেক্স এবং তাঁর বস, মানে সমগ্র পাঞ্জাব প্রদেশের গভর্নর মাইকেল সাহেবের পদবীটা প্রায় এক, যদিও বানানটা অন্যরকম। রেক্স হলেন 'Dyer', আর মাইকেল সাহেব হলেন 'Dwyer'।

গভীর রাতে রেজিনাল্ড যখন অমৃতসর পৌঁছলেন, তখন সারা শহরের বহু ইউরোপিয়ান আতঙ্কে আশ্রয় নিয়েছেন শহরের রেল স্টেশনে। সেখানেই একটি রেল কামরার ভিতর রেজিনাল্ড ডায়ার বৈঠক করলেন ডেপুটি কমিশনার মাইলস আরভিং-এর সঙ্গে। বলাই বাহুল্য, সে বর্ণনার প্রবল আতঙ্কে ৫৪ বছরের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রেজিনাল্ড ডায়ারের প্রলয়ের ছায়া দেখার যথেষ্ট কারণ ছিল। যে মহাপ্রলয় ১৮৫৭ সালের মে মাসে ব্যারাকপুর থেকে শুরু হয়ে কানপুর, মিরাট, দিল্লি, লখনৌ, ঝাঁসি হয়ে কাঁপিয়ে দিয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বহুজাগতিক সংস্থার শাসনের ভিত। সারা পৃথিবী জুড়ে শাসকের ভূমিকা পালন করা ব্রিটেন যে ভয়াবহ মৃত্যু আর ধ্বংসের মুখে এমন অসহায়ভাবে মাথা নিচু করে নি কোথাও! সেই ৬৩ বছর আগের স্মৃতি যেন বিদেহী আত্মার মতন ফিরে আসছিল অমৃতসর স্টেশনে বারবার। দিনটা ১১ এপ্রিল, ১৯১৯ সাল।

jallianwala bagh tragedy 100 years জালিয়ানওয়ালা স্মৃতিসৌধ। ছবি: বীরেন্দ্র সিং রাণা

এর ঠিক দুদিন পর, অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল বেলা চারটে নাগাদ এই ডায়ার সাহেব কলঙ্কের টিকা মাথায় নিয়ে ঘৃণার ইতিহাসের অংশ হয়ে যাবেন চিরদিনের জন্য। কোনোরকম সতর্কবাণী উচ্চারণ না করে হাজার কুড়ি নিরস্ত্র জনতার উপর তাঁর নির্দেশে নেমে আসবে মিনিট দশেকের আগুনের বর্ষা। ২৫ জন গোর্খা এবং ২৫ জন বালোচ সৈনিকের হাতে গর্জে উঠবে .৩০৩ লি এনফিল্ড রাইফেল থেকে ১,৬৫০ টি বুলেট, যা কেড়ে নেবে ৩৭৯ টি প্রাণ, আর আহত করবে ১,০০০-এর বেশি নারী, পুরুষ, শিশুকে।

আধুনিক পৃথিবীর ইতিহাসে এহেন ভয়াবহ নিষ্ঠুর হত্যালীলা যে মানুষটি সাঙ্গ করবেন, অনুতাপহীন, কঠিন হৃদয়ে, সেই মানুষটি আজও ফিরে ফিরে আসেন আমাদের স্মৃতিতে, উপন্যাসে, সিনেমায়, এবং ইতিহাসের পাতায়। ভাবতে অবাক লাগে, যে মানুষটিকে ভবিষ্যৎ 'the butcher of Amritsar' (অমৃতসরের কশাই) বলে অভিশাপ দেবে অনন্তকাল, সেই হন্তারক মানুষটি ১৮৬৪ সালে জন্মেছিলেন এবং বড় হয়েছিলেন এই ভারতে - যদিও দেশভাগের পর তাঁর সেই জন্মস্থান মারী (Murree) আজ পাকিস্তানে।

রেজিনাল্ডের ঠাকুরদা এবং ঠাকুরমা, অর্থাৎ জন এবং জুলিয়া ডায়ারের বিয়ে হয় কলকাতায়। রেজিনাল্ডের বাবা এডওয়ার্ড ডায়ার পাঞ্জাবের সেনা শহর কসৌলিতে ভারতের প্রথম আধুনিক বিয়ার কারখানা খোলেন ১৮৫৫ সালে। তাঁর সেই বিখ্যাত বিয়ার ব্র্যান্ডের নাম ছিল 'লায়ন'।

ছোট থেকেই চুপচাপ, তোতলা, কিছুটা মাথামোটা, লম্বা ও সুঠাম রেজিনাল্ড জীবনের প্রথম ১১ বছর ভারতবর্ষে কাটানোর পর বিলেত যায় পড়াশোনা করতে। তোতলা এবং ভারতের গরমে তেতেপুড়ে যাওয়া রেজিনাল্ড ও তার দাদাকে স্কুলের ছেলেরা রাতদিন বিদ্রূপ করত। এই অসুখী শৈশব কাটাতে রেজিনাল্ড নিয়মিত চর্চা করত হিন্দুস্তানি ভাষা। স্কুল শেষ করে স্টাফ কলেজ অফ ক্যাম্বারলে-তে ভর্তি হয় রেজিনাল্ড। তখন থেকেই মনে বর্ণবিদ্বেষ, কিন্তু পরিশ্রমি এবং সাহসী। ইতিমধ্যে মায়ের আপত্তি উপেক্ষা করে প্রেমিকা অ্যানি ওমানি-কে বিয়ে।

পুরো বিশ্বযুদ্ধের সময় তাঁকে আমরা কোনও বিশেষ যুদ্ধক্ষেত্রে দেখতে পাই না। শুধুমাত্র সামান্য কিছুদিন পূর্ব পারস্যের ফ্রন্টে ছাড়া। সেসময় একটি অপারেশন অতি দুর্বল করে দেয় তাঁকে, এবং তারপরই, ১৯১৭ সালের এপ্রিলে, ঘোড়া থেকে পড়ে একটি বিশ্রী দুর্ঘটনা তাঁকে প্রায় পঙ্গু করে দেয়। শারীরিকভাবে ভঙ্গুর, মানসিকভাবে অস্থির, যন্ত্রণাবিদ্ধ মানুষটার যখন কর্মজীবন প্রায় শেষ, তখন হঠাৎ ১৯১৮ সালে প্রোমোশন পেয়ে জলন্ধরের ব্রিগেডিয়ার।

jallianwala bagh massacre 100 years ১৯১৯ সালে রেজিনাল্ড ডায়ার। ছবি: উইকিপিডিয়া

অমৃতসর অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ১০ এপ্রিল সকালে, যখন খবর রটে যায়, স্থানীয় নেতা ডাঃ সত্যপাল এবং ডাঃ কিচলু-কে গ্রেফতার করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে ধর্মশালায়, এবং মহাত্মা গান্ধীকে পাঞ্জাবে ঢোকার আগেই ফেরত পাঠানো হয়েছে বোম্বাইতে। উত্তেজিত জনতা ব্যারিকেড ভেঙে সিভিল লাইন অতিক্রম করে আক্রমণ করতে শুরু করে সরকারি আধিকারিকদের বাড়ি ও দপ্তর - এই সময় পুলিশ গুলি চালায়, এবং প্রায় ২৫ জনের মৃত্যু হয়। ইতিমধ্যে ব্যাপক অরাজকতা শুরু হয় সারা শহর জুড়ে। মুহূর্তে যা কিছু ব্রিটিশ শাসনের প্রতীক, সবকিছুর উপর নেমে আসে নিয়ন্ত্রণহীন জনতার দানবীয় আক্রমণ।

আগুন লাগানো হয় পোস্ট অফিস, ব্যাঙ্ক, টেলিগ্রাফ অফিস, চার্চ, মিশনারি স্কুল, সাহেবি দোকান, এমনকি রানী ভিক্টোরিয়ার মূর্তিতে পর্যন্ত। খুন করা হয় পাঁচজন ইউরোপিয়ানকে, যাঁদের কেউ ব্যাঙ্কের ম্যানেজার, কেউ বা রেল কর্মচারী। তিনজন ইউরোপিয়ান আহত হন, এবং সবচেয়ে দুঃখের ঘটনা ঘটে যখন পাঞ্জাবে প্রায় দশ বছর সেবার কাজে নিযুক্ত জনৈক ম্যারিকা শেরউড নামক এক মহিলাকে সাইকেল থেকে নামিয়ে নৃশংসভাবে প্রহার করে জনতা।

১২ এপ্রিল সারাদিন শহর জুড়ে পোড়া ঘরবাড়ি এবং ধ্বংস হওয়া সরকারি সম্পত্তি দেখে রেজিনাল্ড যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে নেন। তখনই খবর আসে, পাঞ্জাবের অন্য আরেক শহর আটারি-তে জনতা আক্রমণ করেছে আরও একটি মিশনারি হাসপাতাল।

১৩ এপ্রিল - সেই অভিশপ্ত দিনে ডায়ার শহর পরিক্রমা করে ঘোষণা করে দেন জরুরি অবস্থার। শহরের ১৯ টি স্থানে উর্দু ও পাঞ্জাবি ভাষায় ঘোষণা করে দেওয়া হয়, যে সবরকমের মিছিল, মিটিং বা জমায়েত নিষিদ্ধ। চারজনের বেশি মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ - রাত আটটার পর বাইরে যাওয়া যাবে না।

এতকিছুর পরেও যখন বিকেল চারটে নাগাদ খবর আসে জালিনওয়ালা বাগ নামে একটা ছোট্ট জায়গায় প্রায় কুড়ি হাজার মানুষ জমায়েত হয়েছেন, এবং সুযোগ বুঝে কংগ্রেসি নেতারা সেখানে একের পর এক রাজনৈতিক ভাষণ দিচ্ছেন, ডায়ার সাহেবের আর বুঝতে বাকি থাকে না যে, তিনি না বাঁচালে আর কেউ ভারতে ব্রিটেনের সিংহকে বাঁচাতে পারবে না।

সুতরাং, কোনোরকম সতর্কবার্তা দিয়ে ভিড়কে খালি করার আবেদন না করে তাঁর আদেশে গর্জে ওঠে অসংখ্য রাইফেল। নিরস্ত্র জনতায় যেখানে মিশে আছে গ্রাম থেকে শহরে বৈশাখী উৎসব পালন করতে আসা অসংখ্য নারী ও শিশু। তাঁদের বুক এবং মাথা নিশানা করে এক "unparalleled act of butchery"-র অধ্যায় লিখে দিলেন এদেশের মাটিতে জন্ম নেওয়া এক ইংরেজ।

১,৬৫০ রাউন্ড বুলেট যখন মাটিতে ফেলে দিয়েছে ৩৭৯ টি লাশ, এবং অগুনতি আহত, অর্ধমৃত মানুষ, তখনই সারা শহরে বিদ্যুৎ এবং জল সরবরাহ বন্ধ করে কারফিউ জারি করেন ডায়ার। বেশিরভাগ আহত মানুষ সেদিন হাসপাতালে পৌঁছতে পারেন নি। মৃতদের আত্মীয়রা সারারাত খুঁজে পান নি প্রিয়জনের দেহ।

এখানেই শেষ নয় - ডায়ার সংবাদপত্র সেন্সর করে দেন - কোনও সাংবাদিক কোনোরকম রিপোর্ট পরের দিন ভারতের কোনও সংবাদপত্রের অফিসে পাঠাতে পারেন নি। বেশ কিছুদিন পর 'বম্বে ক্রনিকল' সংবাদপত্রের সম্পাদক বেঞ্জামিন হর্নিম্যান অনেক ঝুঁকি নিয়ে এই হত্যার খবর ও ছবি প্রকাশ করেন।

publive-image চিরকালীন ক্ষতের স্মৃতি। ছবি: বীরেন্দ্র সিং রাণা

এই কাণ্ডের সাতমাস পর ১৯ নভেম্বর ডায়ারকে লাহোরে ডেকে পাঠানো হয় এক তদন্ত কমিশনের মুখোমুখি হওয়ার জন্য। হান্টার কমিশন নামক সেই তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়ে রেজিনাল্ড ডায়ার নিজের কৃতকর্মের জন্য কোনোরকম দুঃখ প্রকাশ করা তো দূরের কথা, বরং অত্যন্ত আত্মগৌরবের সঙ্গে নিজের কর্তব্য পালনের দৃষ্টান্তকে প্রতিষ্ঠিত করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। খুব স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়ে দেন যে, "The shooting was calculated to produce a moral effect"। তিনি এও জানিয়ে দেন যে এটা করা হয়েছে "to force Indian subjects to submit"। ১৯১৯-এর সঙ্কটকে ১৮৫৭-র সঙ্কটের সঙ্গে বারবার তুলনা করেন ডায়ার। সবচেয়ে অবাক হওয়ার মতন বিষয় হলো এই যে, ডায়ার এই কথাও বলেন যে, তিনি জনতাকে ছত্রভঙ্গ হওয়ার বা সরে যাওয়ার নির্দেশ দিতে কোনোভাবেই ইচ্ছুক ছিলেন না, কারণ তাতে নাকি "people would all come back and laugh at me"।

'Laugh at me'! তবে কি রেজিনাল্ড কোনও হীনমন্যতায় ভুগতেন? কী সেই গোপন যন্ত্রণা, যা তাঁকে এত নিষ্ঠুর করে তুলেছিল? ছোটবেলায় স্কুলে তোতলামির জন্য বিদ্রূপ? নাকি একটা অসফল কেরিয়ার? নাকি অসহনীয় শারীরিক যন্ত্রণা? কোন গোপন দুঃখের কীট তাঁকে ইতিহাসের অন্যতম ঘৃণ্য চরিত্র করে দিল চিরদিনের জন্য?

ডায়ার তাঁর চাকরিটা বাঁচাতে পারেন নি। অবশ্য প্রবল ভর্ৎসনা করা সত্ত্বেও ব্রিটিশ সরকার তাঁকে অবসরকালীন সমস্ত সুযোগ সুবিধে দিতে রাজি হয়েছিল। চাকরি যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডায়ার তাঁর জন্মভূমি পাঞ্জাব ত্যাগ করে বোম্বাই চলে যান, কোনোরকম হোটেল বুকিং ছাড়াই। একটি অত্যন্ত নোংরা বাড়িতে ভারতবর্ষে তাঁর জীবনের শেষ রাত কাটিয়ে লন্ডনের জাহাজ ধরেন জালিয়ানওয়ালা বাগের ঘাতক। বিলেতের সংসদে প্রবলভাবে ধিক্কৃত হলেও ডায়ার তাঁর কর্মকাণ্ডের জন্য অসংখ্য মানুষের চোখে নায়কের পর্যায়ে পরিণত হন। তাঁর জন্য ভারতে ও ইংল্যান্ডে বিশেষ তহবিল সংগ্রহ করা হয়, যার ফলে সেই আমলে ২৬,৩১৭ পাউন্ড চাঁদা ওঠে।

প্রবল ভারত বিদ্বেষী বলে কুখ্যাত উইন্সটন চার্চিল এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করেন, অথচ ভারতের মাটিতে ভূমিষ্ঠ এবং প্রতিপালিত নোবেল পুরস্কার জয়ী ইংরেজ সাহিত্যিক রাডইয়ার্ড কিপলিং ডায়ারকে পূর্ণ সমর্থন জানান - এ এক আশ্চর্য ঘটনা বটে।

জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ইংল্যান্ডে রেজিনাল্ড এডওয়ার্ড হ্যারি ডায়ার নামক মানুষটি এক অপমানিত নায়কের ভূমিকায় বেঁচে থাকেন, যদিও ১৯২৭ সালে সেরিব্র্যাল হেমোরেজে মৃত্যুর আগে তাঁর মধ্যে একটা মিশ্র অনুভূতির সৃষ্টি হয়। নাহলে মারা যাওয়ার কিছুদিন আগে একদা সিমলার বিশপ কটন স্কুলে পোড়া এবং পাঞ্জাবের জল-হাওয়ায় কালো হয়ে যাওয়া ইংরেজ মানুষটা কেন বলবেন, "So many people who knew the condition of Amritsar say I did wrong. I only want to die and know from my Maker whether I did right or wrong"।

৩৭৯ টি মৃত মানুষের পরিবারের অভিশাপ কি তখন সত্যিই ছায়া ফেলতে শুরু করেছিল সেই মানুষটার মনে, যাঁকে আয়ারল্যান্ডের মিডলটন কলেজের বন্ধুরা একসময় "wild Indian" বলে খেপাত?

Advertisment