'আজ যেখানে বর্ষশেষ, কালই সেখানে বর্ষারম্ভ; একই পাতার এ পৃষ্ঠায় সমাপ্তি, ও পৃষ্ঠায় সমারম্ভ - কেউ কাউকে পরিত্যাগ করে থাকতে পারে না।’
উপরের বাক্যগুলি আর কারই বা হতে পারে, ক্রান্তদর্শী রবীন্দ্রনাথ ছাড়া? বাস্তবিকই, সমাপ্তির সঙ্গে আরম্ভ তো চিরদিনই গাঁথা অবিচ্ছেদ্য, একে অন্যের অনিবার্য পরিপূরক।
গত বছরের বর্ষারম্ভে পথ চলা শুরু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার। ১৪২৫-এর সমাপ্তিতে আজ যখন ১৪২৬-এর আবাহন পয়লা বৈশাখের পদধ্বনিতে, বিগত বৈশাখ থেকে চৈত্রে আমাদের যাত্রাপথকে ফিরে দেখার অবকাশ এই লেখায়।
বর্ষপূর্তির দিনে লেখার এটুকুই, শুরুর দিনগুলোর আশা-আকাঙ্খা-অনিশ্চয়তা-উৎকণ্ঠা কাটিয়ে উঠে নিজেদের পায়ের তলার জমিটুকু মজবুত করার আত্মবিশ্বাসটা অন্তত উৎপন্ন হয়েছে গত বারো মাসে। আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে যখন আমাদের পথচলা শুরু হয়, অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিলাম আমরা। আজকের এই 'নিউজ এক্সপ্লোশন' বা খবর বিস্ফোরণের যুগে, যখন হাতে ধরা মোবাইল ফোনের দৌলতে প্রতিনিয়ত হরেক রকম সূত্র মারফত খবর আক্ষরিক অর্থেই পৌঁছে যাচ্ছে আমাদের হাতের মুঠোয়, তখন আমরা কী এমন করব যাতে গড়ে উঠবে এক পৃথক পরিচিতি, মনে হবে, বাংলা ডিজিটাল নিউজ পোর্টালের জগতে আমরা আলাদা।
সেই পরিচিতি গড়ার কাজে আমরা কতটা সফল, পাঠকের বিচার্য। ভুলভ্রান্তি হয়েছে, কখনও কখনও হোঁচট খেয়েছি আমরা, কিন্তু চেষ্টা, পরিশ্রম বা আন্তরিকতায় কোনও ফাঁক ছিল না আমাদের। এবং এই অল্প সময়েই আপনাদের অকুন্ঠ প্রশ্রয় এবং সমর্থনে আমরা বাংলা ডিজিটাল নিউজ পোর্টালের জগতে প্রথম সারিতে জায়গা করে নিতে পেরেছি। সেটাই পরম প্রাপ্তি। কৃতজ্ঞতা জানালাম অনিঃশেষ। আপনারা দায়িত্ব বাড়িয়ে দিয়েছেন আমাদের। উন্নতির রাস্তায় পথচলা এখনও অনেক বাকি।
বর্তমান সময়ে নানাদিক থেকেই নানাবিধ কারণে সংবাদমাধ্যমের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত। যেহেতু ডিজিটাল নিউজ পোর্টালের মাধ্যমটি মুদ্রিত সংবাদমাধ্যমের তুলনায় বয়সে অনেক নবীনতর, এবং এই জেটযুগের প্রযুক্তিপটু প্রজন্মের কাছে তুলনায় অধিকতর গ্রহণযোগ্য, দায়িত্ব তাই আরও বেশি। সৎ, নির্ভীক এবং নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার যে ঐতিহ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সংবাদগোষ্ঠীর চিরকালীন পরিচয়লিপি, সেই পথ ধরেই পায়ে পায়ে এগিয়েছি আমরা।
প্রিয় পাঠক-পাঠিকা, বর্ষারম্ভে রইল শুভেচ্ছা এবং প্রতিশ্রুতি। শুভেচ্ছা, নতুন বছরের। ধুয়ে যাক 'মনের কোণের সব দীনতা মলিনতা'। উদযাপন হোক নতুনের। এবং রইল প্রতিশ্রুতি, বিগত তিনশো পঁয়ষট্টি দিনে আপনাদের অকুন্ঠ সমর্থনের মর্যাদা দেওয়ার আগামি বারো মাসে, খবরে-ছবিতে-প্রবন্ধে বাঙালি মননে জায়গা করে নেওয়ার আন্তরিক চেষ্টার।
পাশে থাকুন। পাঠকের প্রত্যাশা পূরণে সামান্যতম খামতিও থাকবে না আমাদের, আশ্বাস থাকল আন্তরিক।