কলকাতায় শীতকাল বড় মনোরম, বড়ই রঙিন। তবু এই মরসুমে ছন্দ কেটেছে বারবার। সময় অস্থির হয়ে উঠেছে। তবু এমন অস্থির সময়েই শহরের মন ভালো করে দিতে এসেছে ফুলের মেলা। আলিপুরের হটিকালচার সোসাইটিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০০ বছরের পুষ্প প্রদর্শনী।
পোশাকি নাম এগ্রিহটিকালচারাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়া। পথ চলা শুরু ১৮২০ সালে। কলকাতা তখন সবে একশ বছর পার করেছে। সেই সময় থেকেই হটিকালচার সোসাইটিতে হয়ে আসছে পুষ্প প্রদর্শনী। ৯ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত চলবে এই ফুলের মেলা।

ডালিয়া, গাঁদা, স্প্যাঞ্জি, পিটুনিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, শীতকালের মরসুমি সব ফুলের মেলা বসেছে হটিকালচারের সুবিশাল মাঠ জুড়ে। কলকাতা আর আশেপাশের মফঃস্বল থেকেই ফুলগাছ প্রেমীরা প্রতি বছর ফুল পাঠায় এখানে। প্রতিযোগিতাও হয়। তবে ফুলে ফুলে বোধহয় প্রতিদ্বন্দিতা হয় না কোনও দিন। নামেই প্রতিযোগী ওঁরা।

ইট কাঠ পাথরের শহরে নিজের দেশলাই বাক্সের ফ্ল্যাট বাড়িটায় একটু সবুজের ছোঁয়া দিতে ব্যাকুল যারা, তারাও হতাশ হবেন না। এক চিলতে বারান্দাতেই বাগান করার জন্য এখানে পাবেন অঢেল চারা গাছ, ফুলের টব, ক্যাকটাস, বনসাই আরও কত কী! সকাল থেকেই ভিড় করছে আট থেকে আশির দল। স্কুল থেকে একঝাক ফুল আসছে রাশি রাশি ফুল দেখতে।
ভাবছেন রবিবারের ফ্লাওয়ার শো ফুরিয়ে গেলেই আর এসে লাভ নেই? ভুল ভাবছেন। কংক্রিটের জঙ্গলে এই শহরের প্রাণ হারিয়ে যাচ্ছেন যারা ভাবেন, যারা একটু অক্সিজেনের জন্য ছুটে ছুটে বেড়ান, তাঁরা এখানে আসুন। একা আসুন, দলবল নিয়ে আসুন। গল্প আড্ডা তর্ক জমুক এই মাঠে। গাছের ছায়ায় বসুন, এই প্রজন্মের খুদেদের একটু সবুজের কাছে কাছে থাকতে শেখান।
কঠিন সময়ে একটু মাটির কাছে থাকুন, একটু প্রকৃতির কাছে। দেখবেন এই প্রজন্মও ঠিক চিনে নেবে ফুল, শিখে নেবে গাছেদের নাম। নদী বুজিয়ে শপিং মল উঠতে দেবে না ওরা। ওরাই বাঁচিয়ে রাখবে আগামীর পৃথিবীটাকে।
এক্সপ্রেস ছবি-শশী ঘোষ।