Advertisment

অসদাচারণবিধি

নির্বাচন কমিশন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর অন্তত সমস্ত দলের উচিত রাজনৈতিক গুণ্ডামি বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Vidyasagar college, বিদ্যাসাগর কলেজ, loksabha election 2019, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

বিদ্যাসাগর কলেজে তাণ্ডবলীলা। ছবি: শশী ঘোষ।

সংবিধানের ৩২৪ ধারা অনুসারে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে দেশের নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গে নির্ধারিত সময়ের ২৪ ঘণ্টা আগে নির্বাচনী প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর দায় রাজ্য সরকারের উপরেই বর্তায়। মঙ্গলবার বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের রোড শোয়ের সময়ে যে হিংসা ছড়িয়েছে তার ভিত্তিতেই নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপ। এর আগে এ রাজ্যে প্রচার চলছিল মেরুকরণের ভিত্তিতেই। গত ৬ দফার ভোটে রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, এবং প্রায় সব ক্ষেত্রেই এ ঘটনায় দায়ী তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। শুধু বিজেপি নয়, কংগ্রেস ও সিপিএম সহ অন্যান্য বিরোধীরাও এ ব্যাপারে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। এখন রাজ্য সরকারকে নির্বাচন কমিশনের সমস্ত কথা শুনে চলতে হবে, এবং বিশৃঙ্খল জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

Advertisment

আরও পড়ুন, মৃত্যুর ১২৮ বছর পর রাজ্যে ভোটের ইস্যু বিদ্যাসাগর

মঙ্গলবার কলকাতা শহরের রাস্তায় যা ঘটেছে তা বাস্তবত কুৎসিত। বিজেপি কর্মী এবং তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক ছাত্ররা বাংলার নবজাগরণের আইকন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তিকেও ছেড়ে কথা বলেনি। বিজেপি কেন্দ্রের শাসকদল, তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের শাসক। দু দলই দুই সরকারে রয়েছে। দু পক্ষের কাছ থেকেই দায়িত্বশীল ব্যবহার প্রত্যাশিত ছিল। তার বদলে, দুই দলের শীর্ষ নেতৃত্বই নির্বাচনী প্রচারে একে অন্য়র বিরুদ্ধে ক্রমাগত আক্রমণ শাণিয়ে গেছেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, তিনি অসাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি রক্ষা করছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের বিরুদ্ধে মেরুকরণ এবং নির্বাচনী সন্ত্রাসের যে অভিযোগ মমতা করেছেন, তা এখন ফাঁপা শোনাচ্ছে।

রাজ্য রাজনীতিতে যা চলছে তার একটা প্রতীক হল বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা। উনবিংশ শতাব্দীর এই সমাজ সংস্কারক এক উদারনৈতিক ব্যবস্থা কায়েম করার স্বার্থে এবং ব্য়ক্তিমানুষের সম্মান ও অধিকার রক্ষার স্বার্থে কাজ করে গিয়েছিলেন। গত কয়েক দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গে যে প্রতিযোগিতার রাজনীতি চলছে, তাতে সমাজ জীবনে ব্যক্তিমানুষের কর্তৃত্ব খর্ব হয়েছে এবং নাগরিক মানুষ দলীয় বিধির আওতায় চলে গিয়েছেন। দলীয় সত্তা আজ অন্য সব সত্তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে এবং দলীয় সত্তা রক্ষা করার জন্য পার্টি কর্মীরা এখন অন্যদের খুন করতে বা নিজে খুন হতেও পিছ পা নন। এই ধরন তৃণমূল তৈরি করেনি, বিজেপি-ও নয়। কংগ্রেস ও বামেরা এলাকা দখল করার জন্য এবং ভোটে জেতার জন্য সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে ১৯৬০ সাল থেকেই। পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা তৃণমূল কংগ্রেস এবং তাদের হঠাতে চাওয়া বিজেপি- দু তরফই তাদের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব কায়েম করার জন্য একই পদক্ষেপ করেছে।

আরও পড়ুন, মোদীর বানানো বিদ্যাসাগরের মূর্তি নেব না: মমতা

পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত অগ্রণী ব্যক্তিত্বদের উচিত রাজনৈতিক সন্ত্রাসের সংস্কৃতি বন্ধ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা। কিন্তু এই মুহূর্তে এ ঘটনার দায় তৃণমূলের উপরেই বর্তায়, কারণ তারা রাজ্যের শাসক দল। আশঙ্কা তৈরি হয়েছে য়ে হিংসার পালা এখনই সাঙ্গ হবে না, প্রচার পর্ব শেষ হওয়ার পর, এমনকি ২৩ মে-র পরেও তা চলবে। মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় সরকারের উচিত এই আশঙ্কা দূর করতে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

Read the Full Story in English

tmc bjp election commission
Advertisment