রবিবার সকালে কোচির এক কনভেনশন সেন্টারে ধর্মীয় সভা চলাকালীন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ এই বিস্ফোরণে, ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি এই ঘটনায় ২০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলেই জানা গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এটিকে সন্ত্রাসবাদী হামলা বলেই মনে করছে পুলিশ।
সাত সকালেই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ কেরালায় ধর্মীয় সভায়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে সকাল ৯টায় হয় প্রথম বিস্ফোরণ। এরপর ৩টি বিস্ফোরণ ঘটে ওই সভাস্থলে। ভয়াবহ এই বিস্ফোরণে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৪০ জন। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে ইতিমধ্যে হাজির হয়েছে অ্যান্টি টেরর স্কোয়াডের সদস্যরা। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে আহত ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের শরীরের প্রায় ৫০শতাংশই বিস্ফোরণের কারণে ঝলসে গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আইইডি ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে। এদিকে, স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে এনআইএ-র একটি ৪-সদস্যের দল তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।
এক মহিলা এবং অন্য দু'জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে নিশ্চিত করে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেছেন, "এটি একটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। আমরা ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছি। এর্নাকুলামের সমস্ত উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা সেখানে রয়েছেন। আমরা এটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিচ্ছি। আমি ডিজিপির সঙ্গে কথা বলেছি এবং তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।"
ধর্মীয় সভায় চলাকালীন পরপর বিস্ফোরণের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় কেরলে। কোচির এক কনভেনশন সেন্টারে বিস্ফোরণের ঘটনায় হুলস্থূল পড়ে যায়। প্রাথমিক ভাবে এটি সন্ত্রাসবাদী হামলা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। বিস্ফোরণে এক জন নিহত এবং বেশ কয়েকজনের আহত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিন সকাল ন’টায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে বলেই জানা গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের কারণ এখনও জানা যায়নি। টিভি চ্যানেলের ভিজ্যুয়ালগুলিতে দেখা গিয়েছে বিস্ফোরণের পর পুলিশ কর্মীরা বিপুল সংখ্যক লোককে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন। কনভেনশন সেন্টারের বাইরে বহু মানুষকে ভিড় করতেও দেখা গিয়েছে। কোচির কালামাসেরিতে অবস্থিত একটি কনভেনশন সেন্টারে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন মোট তিনটি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে সভাস্থল।
সংবাদ মাধ্যমেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, “প্রার্থনা শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিট পর বিস্ফোরণ ঘটে। কনভেনশন হলের মঞ্চ থেকে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যেখানে প্রায় ২০০০ মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। তিন দিনের ধর্মীয় সভা শুক্রবার শুরু হয়েছিল এবং রবিবার শেষ হওয়ার কথা ছিল”। ইতিমধ্যে পুলিশ হলটি সিল করে দিয়েছে।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন ঘটনাটি দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করার পাশাপাশি বলেছেন, পুলিশ ঘটনাটিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে তদন্ত। রাজ্যের ডিজিপি সহ ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শীর্ষ এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন বিস্ফোরণের পর রাজ্য জুড়ে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
NIA তদন্ত করবে
এই ধারাবাহিক বিস্ফোরণ সম্পর্কে কেরল পুলিশের তরফ থেকে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করা হয়নি, তবে সূত্রের খবর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। বিস্ফোরণের তদন্ত করবে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছতে চলেছে NIA-এর ফরেনসিক দল।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন অমিত শাহ
রবিবার সকাল ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মুখ্যমন্ত্রী পরিস্থিতি সম্পর্কে বিশদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে অবহিত করেছেন। ঘটনার পরই পুলিশ আহতদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা প্রদান করেছে। শাহ কেন্দ্র থেকে সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
কেরলে শিল্পমন্ত্রী এবং কালামাসেরির বিধায়ক পি রাজীব এই ঘটনার বিষয়ে বলেছেন যে আধিকারিকদের সম্ভাব্য সমস্ত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, 'আমি সকল আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। নির্দেশ জারি করা হয়েছে। বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে আমরা এখনও তথ্য পাইনি। তদন্ত করা হোক। বর্তমানে ঘটনাস্থলে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।