উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম। হনুমান জয়ন্তী ঘিরে রাজ্যে রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ল সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ। অভিযোগটা মোটামুটি একই। সব জায়গাতেই মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন পালটা স্লোগান দিয়েছে। আর, মিছিল লক্ষ্য করে পাথর ছুড়েছে। এই অভিযোগ থেকে রেহাই পেল না অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুলও। এখানকার হোলাগুন্ডা এলাকায় পাথরের আঘাতে হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে থাকা ১০ বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন বলে মিছিলের আয়োজকদের অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, মিছিলের সঙ্গে ছিল ডিজে। তাতে তারস্বরে ধর্মীয় সংগীত বাজছিল। মুসলিম সম্প্রদায়ের এক ধর্মীয় স্থানের পাশ দিয়ে মিছিল যাওয়ার সময় আয়োজকদের ডিজের গান বন্ধ করতে অনুরোধ করেছিল প্রশাসন। কিন্তু, আয়োজকরা শোনেননি। পুলিশের দাবি, সামান্য সময়ের জন্য গান বন্ধ করা হলেও, ফের তা চালু করে দেওয়া হয়। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অন্য সম্প্রদায়ের লোকজন। তাঁরা হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া শুরু করেন।
কুর্নুল জেলার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, প্রায় মিনিট দশেক পাথরবৃষ্টি চলে। এরপরই মিছিলের বাকি পথে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পাথরের আঘাতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। কিন্তু, কোনও আঘাতই গুরুতর নয় বলেই পুলিশ জানিয়েছে। কেন পাথর ছোড়া হল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ অভিযুক্ত প্রমাণিত হলে তাকে গ্রেফতার করা হবে বলেই পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন। মিছিল কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পর ফের চালু করা হয়।
আরও পড়ুন- ডিজের আওয়াজে শোনাই যায়নি অন্য সম্প্রদায়ের স্লোগান, তারপরও হরিদ্বারে গ্রেফতার ৯
শুধু অন্ধ্রপ্রদেশই না। অন্যান্য রাজ্যেও একইভাবে হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রা ঘিরে অশান্তি ছড়িয়েছে। ধর্মীয় প্ররোচনার মাধ্যমে দেশজুড়ে ধর্মীয় উন্মাদনা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। এমনই অভিযোগ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদীর সরকার দেশবাসীকে 'অচ্ছে দিন'-এর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। কিন্তু, সেই প্রতিশ্রুতি তারা রক্ষা করতে পারেনি। এরমধ্যেই দু'বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছে এই সরকার।
২০২৪ সালে ফের লোকসভা নির্বাচন। বর্তমান পরিস্থিতিতে উন্নয়নের মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফের ক্ষমতায় আসা মোদী সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। সেজন্য সংঘ পরিবার সাম্প্রদায়িক উন্মাদনা চাগিয়ে তুলতে চাইছে। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই হনুমান জয়ন্তীর শোভাযাত্রাগুলো মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আর, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর চেষ্টা চলছে।
Read story in English