চারদিকে শুধু হাহাকার! বেড আর অক্সিজেনের জন্য হা পিত্যেশ করে অপেক্ষা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যত সক্রিয় হচ্ছে, তত ওপরের চিত্র শিরদাঁড়া বেয়ে ঠাণ্ডা স্রোত বইয়ে দিচ্ছে। সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের শাহদোল মেডিক্যাল কলেজে অক্সিজেনের অভাবে ১২ জন করোনা রোগীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার মধ্যরাতের। শাহদোল মেডিক্যাল কলেজের ডিন ডক্টর মিলিন্দ শিরালকার জানিয়েছেন, ওই কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগীদের মৃত্যুর কারণ মেডিক্যাল অক্সিজেনের অভাব।
মৃতদের পরিবারও হাসপাতালে বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেছেন। তবে মেডিক্যাল কলেজের ডিনের সঙ্গে অবস্থানের তফাৎ রয়েছে অতিরিক্ত জেলা শাসকের। শাহদোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক অর্পিত ভার্মা যদিও এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ‘এই মৃত্যুর সঙ্গে অক্সিজেনের অভাবের কোনও যোগ নেই। এই এলাকায় শাহদোল মেডিক্যাল কলেজেই করোনা মোকাবিলায় সমস্ত রকমের ব্যবস্থা রয়েছে।‘
এদিকে, এই ঘটনার পরই সমালোচনায় সরব মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ। তিনি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন অক্সিজেন নিয়ে তথ্য গোপনের। তাঁর ট্যুইটে শিবরাজ সিং সরকারের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলা হয়েছে। তিনি লেখেন, 'ভোপাল, ইন্দোর, উজ্জয়িন, সাগর, জবলপুর ও খরগোনের পরিস্থিতি দেখেও শিক্ষা হয়নি?'
মধ্যপ্রদেশের শশ্মান, সমাধিক্ষেত্রে সারি সারি মৃতদেহের লাইন। স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনার সঙ্গে ১৯৮৪ সালের ভোপাল গ্যাস ট্রাজেডির তুলনা করেছেন। তাঁদের অনেকেই জানাচ্ছেন ভোপাল গ্যাস ট্রাজেডির পর এই প্রথম এভাবে সারি সারি মৃতদেহের শেষকৃত্য হচ্ছে। ৫৪ বছরের বিএন পান্ডের ভাইয়ের করোনায় মৃত্যু হয়েছে। তাঁর অন্ত্যোষ্টির জন্য আনা হয়েছিল ভোপালের ভদভদা শ্মশানে তিনি জানান, 'ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার সময় আমি ক্লাস নাইনে পড়তাম। সেই সময় এই রকম পরিস্থিতি দেখেছিলাম। আজকে চার ঘণ্টার মধ্যে এখানে ৩০ থেকে ৪০টি করোনায় মৃতদের দাহ করা হল। এখনও বহু মৃতদেহ বাইরে রাখা হয়েছে।'
মধ্যপ্রদেশে করোনা সংক্রমণের সরকারিভাবে যে পরিসংখ্যান দেখানো হয়েছে, অবস্থা তার থেকেও ভয়ানক। ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠছে, মধ্যপ্রদেশ সরকার করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান গোপন করছে।