ছত্তিশগড়ের বিজাপুর জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ১২ জন মাওবাদী নিহত হওয়ার দু'দিন পর, গ্রামবাসীরা দাবি করেছে বাহিনীর হাতে নিহত ১২ জন মাওবাদীই নয়, তারা স্থানীয় বাসিন্দা। গ্রামবাসীরা আরও দাবি করেছেন মাওবাদী হত্যার নামে এটি ছিল বাহিনীর একটি 'ভুয়ো এনকাউন্টার'।
যদিও পুলিশ গ্রামবাসীদের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। আধিকারিকদের দাবি যে এনকাউন্টারে শুধুমাত্র মাওবাদীরা নিহত হয়েছে এবং তারা গভীর জঙ্গলে বাহিনীকে দেখে সাধারণ মানুষের মতো পোশাক পরেছিল, যাতে বাহিনীর চোখে ধুলো দেওয়া যায়।
গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, কিছু গ্রামবাসী জঙ্গল থেকে তেন্ডু পাতা তুলতে গিয়েছিল। ঠিক সেই সময় নিরাপত্তা বাহিনী তাদের টার্গেট করে। তা দেখে গ্রামবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং দ্রুত পালাতে থাকে। দৌড়ে পালানোর সময় বাহিনী তাদের গুলি করে হত্যা করে। অপর এক গ্রামবাসী রাজু বলেন, “পুলিশের গুলিতে নিহত লালু কুঞ্জম মাওবাদী ছিলেন না, একজন কৃষক ছিলেন। এনকাউন্টারে নিহত সকলেই মাওবাদী নয় গ্রামবাসী এবং তাদের এই দুটি গ্রাম থেকে তুলে নিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।”
রাজ্যের বস্তার অঞ্চলে কর্মরত আদিবাসী অধিকার কর্মী সোনি সোরির মতে, “নিহতদের মধ্যে এমন গ্রামবাসীও রয়েছে যারা জঙ্গলে তেঁতুল তুলছিল। পুলিশ ও জওয়ানদের গুলি করতে দেখে তারা দৌড়াতে শুরু করে। আমি নিহতদের পরিবারের কিছু সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তারা আমাকে বলেছে যে গ্রামের কয়েকজনকেও তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে জঙ্গলে মেরে ফেলা হয়েছে।”
তিনি বলেন, "আমরা হাইকোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করব কারণ পুলিশ বাহিনী নিরীহ গ্রামবাসীদের হত্যা করেছে"। অন্যদিকে, পুলিশ তার অবস্থানে অনড়। পুলিশের দাবি নিহত সকলেই মাওবাদী।
দক্ষিণ বস্তার অঞ্চলের পুলিশের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল কমলোচন কাশ্যপ দাবি করেছেন, “মাওবাদীরা পোশাক বদলে গ্রামবাসীদের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। নিহতরা সবাই মাওবাদী, গ্রামবাসী নয়। গ্রামবাসীরা তাদের আত্মীয় মাওবাদীদের মৃতদেহ নিতে এসেছিল। মোট ৭০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গাঙ্গালুর থানায় আনা হয়েছিল, যাদের মধ্যে প্রায় ৯ জন কট্টর মাওবাদী ছিল। এই নয়জন মাওবাদীও মৃতদের মাওবাদী ক্যাডার হিসেবে চিহ্নিত করেছে।”