Advertisment

কবর দেওয়া হল ১২ টন ইলিশ, তার আগে কিছুটা ‘হরির লুঠ’

মাছ মাটিতে পুঁতে দেওয়ার আগে কিছু মাছ সেখান থেকে ক্রেন দিয়ে তুলে ছড়িয়ে দেওয়া হয় আমজনতার উদ্দেশে। এরপর সাধারণ মানুষের মধ্যে সেই মাছ কুড়োনোর জন্য হুড়োহুড়ি লেগে যায় এলাকায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ধরা পড়ল ১২ টন ইলিশ

নদীর চরে বালির মধ্যে আঁতিপাঁতি খুঁজে চলেছেন অসংখ্য মানুষ। সাইকেল, মোটরবাইক থেকে নেমে হুমড়ি খেয়ে নদীর চরে বসে পড়ে হাতড়াচ্ছেন অনেকে। কেন? হয়তো পেয়ে যেতে পারেন একখণ্ড রুপোলি শস্য। যার আকার হয়তো একটু ছোট্ট । মঙ্গলবার সকালে ওই রুপোলি শস্য জোগাড় করা নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল কাকদ্বীপ মৎস্য বন্দরে।

Advertisment

প্রশাসন সূত্রের খবর, খোকা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ। তাই গত দু’দিনে বারশো টনের বেশি খোকা ইলিশ এর গাড়ি আটক করে সুন্দরবন জেলা পুলিশ। রাজ্য মৎস্য দফতরের আধিকারিকরা তা বাজেয়াপ্ত করেন। জানা গিয়েছে, প্রায় ১২ টন খোকা ইলিশ বাজেয়াপ্ত করা হয়। বাজারে এই ইলিশের আনুমানিক মূল্য ২০ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা। খোকা ইলিশ আটক করার পর কাকদ্বীপ ও হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।

এতদিন সরকারি নিয়মে ছোট ইলিশ বাজেয়াপ্ত করার পর নিলাম করে দেওয়া হত। নিলামের একটা অংশ মালিক পেতেন। কিছু টাকা জরিমানা হিসেবে নিত মৎস্য দপ্তর। কিন্তু এদিন ছোট ইলিশ নিলামে কেনার জন্য কোন পাইকার আসেনি। তার উপর বাজেয়াপ্ত করা মাছগুলি তেইশ সেন্টিমিটারের থেকেও ছোট হওয়ায় সেগুলি মাটিতে পুঁতে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন প্রশাসনিক আধিকারিক এবং মৎস্যজীবী ইউনিয়নের নেতৃত্ব। সেই মতন মঙ্গলবার সকালে কাকদ্বীপ মৎস্য বন্দরের কাছে গর্ত করে বাজেয়াপ্ত মাছ পুঁতে দেওয়ার কাজ চলছিল। কিন্তু সেই সময় এলাকার বহু মানুষ কিছু মাছ পাওয়ার আশায় দাঁড়িয়ে ছিলেন সেখানে। অবশেষে ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে তাঁদের। মাছ মাটিতে পুঁতে দেওয়ার আগে কিছু মাছ সেখান থেকে ক্রেন দিয়ে তুলে ছড়িয়ে দেওয়া হয় আমজনতার উদ্দেশে। এরপর সাধারণ মানুষের মধ্যে সেই মাছ কুড়োনোর জন্য হুড়োহুড়ি লেগে যায় এলাকায়।

এ বিষয়ে জেলার সহ মৎস্য অধিকর্তা (‌সামুদ্রিক)‌ জয়ন্ত প্রধান বলেন, "সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে মাছ পুঁতে দেওয়া হয়েছে। ট্রলার মালিকের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, "আমরা প্রথম থেকেই ছোট ইলিশ নিয়ে সিদ্ধান্ত ট্রলার মালিকদের জানিয়ে দিয়েছিলাম। এই অভিযানে আমরা খুশি। মাছগুলি মাটিতে পুঁতে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।"

প্রশাসন সূত্রে এও জানা গিয়েছে, রবিবার বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, নামখানার বেশ কিছু ট্রলারের জালে প্রচুর ছোট ইলিশ ধরা পড়েছে, এ খবর আগেই ছিল। সেই ছোট ইলিশ সাতটি পিকআপ ভ্যানে আনা হচ্ছিল ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্রবাজারের আড়তে। কিন্তু আনার পথে হারউড পয়েন্ট কোস্টাল থানার অক্ষয়নগর এলাকার কয়েকজন মৎস্যজীবী পিকআপ ভ্যানগুলি আটক করে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে গাড়ি সমেত ইলিশ থানায় নিয়ে চলে আসে। এবছর এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বাজেয়াপ্ত ছোট ইলিশ মাটিতে পুঁতে দেওয়া হল।

উল্লেখ্য, খোকা ইলিশ বাঁচাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৎসজীবীদের সতর্ক করা হয়। মাঝে মাঝেই চলে অভিযান। তার পরেও প্রশাসনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে খোলা বাজারে দেদার বিকোয় খোকা ইলিশ। কাকদ্বীপ মৎস্য অ্যাসোসিয়েশানের এর পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, খোকা ইলিশ ধরার ব্যাপারে চরম নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

Fishermen
Advertisment