মেট মিউজিয়াম ভারত থেকে অবৈধভাবে পাচার করা ১৬টি নিদর্শন ভারতে ফিরিয়ে দিয়েছে। নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট (মেট) বলেছে ইতিমধ্যেই ১৬টি ঐতিহাসিক নির্দশন ভারতকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মূর্তিচোর সুভাষ কাপুর! যার পাচার করা ঐতিহাসিক নিদর্শন শোভা পাচ্ছে বিদেশের মিউজিয়ামে।
দ্য ইণ্ডিয়ান এক্সপ্রেস তদন্তে জেনেছে ইতিমধ্যেই এখনও পর্যন্ত ভারত ও অন্যান্য দেশ থেকে ২,৬০০-র বেশি মূর্তি পাচার করেছে মূর্তিচোর সুভাষ কাপুর। নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট (মেট)এর ডিরেক্টর ম্যাক্স হোলেন এক বিবৃতি জারি করে বলেছে, ‘ প্রমাণের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই ১৬টি ঐতিহাসিক নির্দশন ভারতকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার মোট মূল্য এক মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। এর মধ্যে মধ্যপ্রদেশের একটি "অপ্সরা" এবং একাদশ শতাব্দীর বেলেপাথরের ভাস্কর্যের কথারও উল্লেখ রয়েছে।
এই নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (আইসিআইজে) এবং ইউকে-ভিত্তিক ফাইন্যান্স আনকভারড-এর সঙ্গে যৌথভাবে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস একটি তদন্ত চালায়। আর, সেই তদন্তে দেখা গিয়েছে, এই সব মূর্তি চুরির সঙ্গে নাম জড়িয়ে রয়েছে ৭৩ বছরের কুখ্যাত মূর্তিচোর বা স্মাগলার সুভাষ কাপুরের। গত বছরই এই ভাবে ভারত থেকে লাগাতার মূর্তিচুরির জন্য তার ১০ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। বর্তমানে তিরুচিরাপল্লির সেন্ট্রাল জেলে সেই কারাদণ্ড ভোগ করছে এই মূর্তিচোর।
এই কুখ্যাত মূর্তিচোর গ্রেফতার হওয়ার পর দেখা গিয়েছে, গোটা পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে আছে এই মূর্তিচোরের নেটওয়ার্ক। আমেরিকার তদন্ত সংস্থার গোয়েন্দারা বাজেয়াপ্ত হওয়া মূর্তির ভিত্তিতে অনুমান করছেন, সুভাষ কাপুর এখনও পর্যন্ত ভারত ও অন্যান্য দেশ থেকে ২,৬০০-র বেশি মূর্তি পাচার করেছে। একইসঙ্গে গোয়েন্দারা মনে করছেন, সংখ্যাটা অনেক বেশি হতে পারে। যেটা বলা হচ্ছে, সেটা ন্যূনতম।
এই মূর্তিচোরের চক্র আমেরিকার পাশাপাশি ছড়িয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও। আমেরিকার মেট্রোপলিটান মিউজিয়াম অফ আর্ট বা সবচেয়ে বড় মিউজিয়াম এই সুভাষ কাপুরের থেকে বেশ কিছু মূর্তি কিনেছিল। আমেরিকার এই মিউজিয়ামে কাশ্মীর গ্যালারি রয়েছে। কাশ্মীরে জঙ্গিরা বেশ কিছু মন্দির ভেঙেছে। ওই সব মন্দিরের মূর্তি উধাও হয়ে গিয়েছিল। পৌরানিক নির্দশন ফেরত প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের (এমইএ) একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘আইনি প্রক্রিয়া চলছে এবং আমরা এখন এর চেয়ে বেশি মন্তব্য করতে পারি না"।
মেটের তরফে জানানো হয়েছে এই মূর্তিগুলির বেশিরভাগই ১৯৭০ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে যাদুঘরে আনা হয়েছিল।গত ৩০ মার্চ, মেট একটি বিবৃতি জারি করে জানায় যে ভারতকে তারা ১৬ টি ভাস্কর্য ফেরত দিতে চলেছে। যেগুলি ভারত থেকে চুরি গিয়েছিল। জানা গিয়েছে এই সকল মূর্তি চোরাকারবারি সুভাষ কাপুর জাদুঘরে বিক্রি করেন।