ভারতীয় নাগরিকত্ব মেলার ১৭ বছর পর গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার। গুজরাট থেকে গ্রেফতার ১৯৯৯ সালে পাকিস্তান থেকে এদেশে আসা লবশঙ্কর দুর্যোধন মহেশ্বরী। এদেশে চিকিত্সা করাতে এসে গুজরাটের আনন্দের তারাপুরের শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে পাকাপাকিভাবে বসবাস শুরু করেছিলেন এই ব্যক্তি। পরের কয়েক বছরে নিজেকে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন লবশঙ্কর। পরে ২০০৬ সালে ভারতীয় নাগরিকত্ব পান তাঁরা। এহেন লবশঙ্করই এবার গ্রেফতার গুজরাটের সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াড (এটিএস)-এর হাতে। ভারতীয় সেনাবাহিনী সম্পর্কে সংবেদনশীল তথ্য পাকিস্তানের হাতে পাচারের অভিযোগেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এটিএস-এর অভিযোগ, মহেশ্বরী পাকিস্তানি এজেন্টদের একটি ভারতীয় সিম কার্ড অ্যাক্সেস করতে সাহায্য করেছিলেন। যেটি সেনা স্কুলে ভারতীয় প্রতিরক্ষা কর্মীদের ওয়ার্ডের ফোন হ্যাক করতে ব্যবহার করা হয়েছিল। এটিএস আরও জানিয়েছে, ধৃত মহেশ্বরী তাঁর পরিবারের সদস্যদের ভিসা পেতে পাকিস্তানি আধিকারিকদের সাহায্যের বিনিময়েই চরবৃত্তির কাজ করেছিলেন। মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স (MI)-এর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
১৯৯৯ সালে সন্তানলাভের চিকিত্সার জন্য স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে গুজরাটের তারাপুরে এসেছিলেন মহেশ্বরী। শ্বশুরবাড়িতেই থাকতে শুরু করেন তিনি। তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা আগেই পাকিস্তান থেকে এদেশে চলে এসেছিলেন। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ধৃত ব্যক্তি একটি দীর্ঘমেয়াদী ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন। তাঁর শ্বশুরবাড়ির সহায়তায় তিনি নিজেকে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। প্রথমে একটি মুদি দোকান চালালেও তারাপুরে পরবর্তী সময়ে একাধিক দোকান এবং বাড়ি ভাড়া দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। মহেশ্বরী ও তাঁর স্ত্রীর অবশ্য কোনও সন্তান হয়নি।
সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালের প্রথম দিকে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পর ২০২২ সালে মহেশ্বরী পাকিস্তানে তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, সম্ভবত ওই সময়েই ভিসা তৈরির সময়ে মহেশ্বরীর সঙ্গে পাকিস্তানি এজেন্টদের যোগাযোগ হয়েছিল। পাকিস্তানে বাবা-মায়ের সঙ্গে ৬ সপ্তাহ কাটিয়েছিলেন মহেশ্বরী। সেই সময়ে তাঁর সঙ্গে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর যোগাযোগ হয়েছিল বলেও দাবি সূত্রের।
আরও পড়ুন- মহুয়া মৈত্রের জন্য কোন পরিণতি অপেক্ষায়? অতীতে এমন অভিযোগে কী সাজা হয়েছে?
গুজরাট এটিএস জানিয়েছে, ভারতে ফেরার পরে মহেশ্বরী জামনগরের বাসিন্দা মোহাম্মদ সাকলাইন উমর তাহিমের নামে একটি সিমকার্ড পাকিস্তান দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে সরবরাহ করতে সহায়তা করেছিলেন। এটিএস জানিয়েছে, মহেশ্বরী তাঁর পাকিস্তানে থাকা আত্মীয় কিশোরভাই ওরফে সাভাই জগদীশকুমার রামওয়ানির মাধ্যমে পাক দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।
মহেশ্বরী ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পর পাকিস্তানে যেতে এবং সেদেশের ভিসা পেতে তাঁর আত্মীয় সাভাই জগদীশকুমার রামওয়ানির সঙ্গেই যোগাযোগ করেছিলেন বলে জানতে পেরেছে গুজরাট এটিএস।