ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগে ঋণের কিস্তি না দিতে পারায় ট্রাক্টর দিয়ে পিষে খুন করা হয় তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে। খুনের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে বেসরকারি সংস্থার এজেন্টদের ভূমিকা। গোটা দেশ জুড়ে নিন্দার ঝড়।
মহিলার বাবা দোষীদের ফাঁসি দাবি জানিয়েছে। মৃত মহিলার বাবা মিথিলেশ মেহতা আজ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'আমি সরকারের কাছে কিছু চাই না, কোন ক্ষতিপূরণও চাই না, কোন সরকারি সুবিধাও চাই না। আমি শুধু আমার মেয়ের বিচার চাই এবং আমি অপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি”। সেই সঙ্গে কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি বলেন, দু”টি জীবন এইভাবে শেষ হয়ে গেল, দুটি জীবনের মূল্য মাত্র ১০ হাজার টাকা। ১০ হাজার টাকার জন্য মেরে ফেলা হয়েছে আমার মেয়েকে”।
মিথিলেশ মেহতা পেশায় এক কৃষক এবং মনিকা তার চার সন্তানের মধ্যে বড় এবং গত বছরের মে মাসে নিকটবর্তী ডুমরাঁও গ্রামের একজন ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেছিলেন। তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ প্রতিমন্ত্রী অন্নপূর্ণা যাদব ইতিমধ্যেই পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং দোষীদের শাস্তির বিষয়ে আশ্বাসও দেন। তিনি সরকারের কাছে অবিলম্বে মৃতার পরিবারকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
আরও পড়ুন: < বিরাট সাফল্য পুলিশের, মোহালিতে পড়ুয়াদের ভিডিও ফাঁসের ঘটনায় সিমলা থেকে ধৃত অভিযুক্ত >
হাজারীবাগের সিনিয়র পুলিশ সুপার মনোজ রতন চৌথী বলেছেন যে এই বিষয়ে চারজনের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং তাদের সবাইকে গ্রেফতারের জন্য ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেন্ট রাজীব কুমারের নেতৃত্বে একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে।
মাহিন্দ্রা গ্রুপের এমডি এবং সিইও আনিশ শাহ এক বিবৃতিতে বলেছেন “হাজারীবাগের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত ও স্তম্ভিত। এই ঘটনায় উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, পাশাপাশি থার্ডপার্টি এজেন্সির বাড়বাড়ন্ত বন্ধ করতে আমরা জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করব”।
মাহিন্দ্রা গ্রুপের চেয়ারম্যান আনন্দ মাহিন্দ্রা এক টুইট বার্তায় লিখেছেন “ভয়ানক দুঃখ জনক ঘটনা। আমি অনীশ শাহের বক্তব্যকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করছি। আমি এই সংকটে পরিবারের পাশে আছি”।
ঝাড়খণ্ড কিষাণ মহাসভার কার্যনির্বাহী সভাপতি পঙ্কজ রায় বলেন, কোভিডের কারণে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সামান্য কটা টাকার জন্য এভাবে দুটি প্রাণ চলে গেল, এই ঘটনার নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, ব্যাঙ্ক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লোন নেওয়া মানুষজন বিদেশে আরামে রয়েছে। আর এখানে সামান্য কটা টাকার জন্য দুটি প্রাণকে অকালে ঝড়ে যেতে হল”।