চিনে বসে থাকা মূল পান্ডাদের সঙ্গে যোগসাজশে ভারতে বসে কোটি-কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণা, তিনজনকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। স্বল্পমেয়াদে ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল এই ভুয়ো কারবারিরা। তবে শেষমেশ জাল এই কারবারের পর্দা ফাঁস।
দিল্লির ডিসিপি সমীর শর্মা জানিয়েছেন, প্রতারণার অভিযোগে ইতিমধ্যেই রবি কুমার পঙ্কজ (২৮), জাভেদ রাজা আনসারি (৩০) এবং বিকাশ যাদব (১৯) নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতারণার এই চক্র সম্পর্কে ওই পুলিশকর্তা বলেন, “২২ জুন এক মহিলা একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। তিনি স্বল্পমেয়াদে ঋণ নেওয়ার জন্য একটি অ্যাপ ডাউনলোড করেছিলেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণের টাকা পরিশোধও করেছিলেন। কিন্তু এরপরেও ঋণের টাকা চেয়ে এজেন্টরা ওই মহিলাকে হুমকি দিয়ে ফোন করে ও অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে।”
এদিকে, ওই মহিলার অভিযোগ পেয়েই চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ। ডিসিপি শর্মা জানান, তদন্তে সন্দেহভাজন ফোন নম্বরের সঙ্গে যুক্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন খতিয়ে দেখা হয়। প্রতারকরা একটি কোম্পানির নথি ডাউনলোড করেছিল। সেগুলি পেমেন্ট গেটওয়ে এবং এগ্রিগেটরে একটি অনলাইন সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে ব্যবহার করেছিল। এটি ধৃত পঙ্কজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
ওই অ্যাকাউন্টেই অভিযোগকারী মহিলার টাকা জমা হয়েছিল। অ্যাকাউন্টের সমস্ত লেনদেন পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। এক দিনে ওই অ্যাকাউন্টে ১৯ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকার লেনদেন করা হয়েছিল। এমনকী লেনদেনের সেই টাকা অন্যান্য সংস্থাতেও পাঠানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন- হঠাৎই ভারতের বিমান নামানো হল পাকিস্তানে, শোরগোল ফেলে দেওয়া ঘটনার চর্চা তুঙ্গে
ওই পুলিশকর্তা আরও বলেন, “পঙ্কজকে ৪ জুলাই রাজস্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়। পঙ্কজ স্বীকার করেছে যে সে তার ৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের প্রতিটি ১৫ হাজার টাকায় এক ব্যক্তিকে বিক্রি করে। পরে সেই অ্যাকাউন্টগুলি আনসারির কাছে বিক্রি করেছিল ওই ব্যক্তি। সোমবার আনসারিকেও গ্রেফতার করা হয়।”
দিল্লিতে বসে এই ভুয়ো কারবারের পিছনে চিন যোগ উঠে এসেছে। ডিসিপি শর্মা এপ্রসঙ্গে বলেন, ''চিনের একাধিক স্বল্পমেয়াদী ঋণ অ্যাপ ৭ দিনের মধ্যে টাকা ধার দেয়। তবে এর আগে ওই অ্যাপগুলি যাদের টাকা ধার দেবে বলে ঠিক করেছে, তাদের সব তথ্য জেনে নেয়। এরপর যদি বাড়তি টাকা না দেওয়া হয়, তবে অন্য দেশের কল সেন্টারগুলি থেকে সেই ব্যক্তিদের তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।"
দিল্লি পুলিশের পদস্থ এই কর্তার দাবি, এই চক্রের কিংপিন হংকং থেকে কাজ করছে। আইপি অই্যাড্রেসগুলি ট্র্যাক করে তাকেও ধরার চেষ্টা চলছে।