ফের অশান্ত মণিপুর। নতুন করে হিংসার ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ভোরে ছড়িয়ে পড়া হিংসার ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে নিহত তিন ব্যক্তিকে গ্রাম পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার সকালে মণিপুরে নাগা-অধ্যুষিত উখরুলের একটি গ্রামে হিংসার ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ।
১২ দিন পর আবারও হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে মণিপুরে। তিনজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় উত্তপ্ত মণিপুর। জেলা সদর উখরুল শহর থেকে প্রায় ৪৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কুকি আদিবাসীদের থাওয়াই কুকি গ্রামে ঘটে এই ঘটনা। টানা ১২ দিন শান্ত থাকার পর ফের অশান্তির আগুন জ্বলে উঠলো মণিপুর। শুক্রবার ভোররাতে, সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা উখরুল জেলায় তিন গ্রাম প্রতিরক্ষা কর্মীদের উপর গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাদের। পুলিশ জানায়, সকাল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা সদর উখরুল শহর থেকে ৪৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কুকি আদিবাসীদের গ্রাম থাওয়াই কুকিতে এ ঘটনা ঘটে।
মণিপুরের ঘটনায় প্রসঙ্গে ট্যুইট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি ট্যুইট বার্তায় লিখেছেন, 'মণিপুরে লাশের স্তূপ! শুক্রবার ভোরে উখরুলে নতুন করে হিংসার ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। পাশাপাশি ৩রা মে থেকে রাজ্যে কমপক্ষে ১৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফাঁপা ভাষণের সময় অনেক আগেই পেরিয়ে গিয়েছে। মণিপুর শুধু কথা শুনতে চায় না, তাদের আরও বেশি প্রাপ্য। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী- যাঁরা নিহত হয়েছেন তাদের রক্তে আপনার হাত রঞ্জিত'।
উখরুলের পুলিশ সুপার এন ওয়াসুম নিশ্চিত করেছেন, “পাহাড় থেকে একদল সশস্ত্র দুর্বৃত্ত গ্রামে প্রবেশ করে এবং গ্রামরক্ষীদের ওপর গুলি চালাতে শুরু করে। এ ঘটনায় ওই গ্রামের তিনজনের মৃত্যু হয়েছে"। তিনি আরও বলেন, "ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। একই সময়ে, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে রাজ্য পুলিশ ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান চলছে"। স্পষ্টতই, এর আগে ৫ আগস্ট বিষ্ণুপুর ও চুরাচাঁদপুর জেলায় গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। দুই সম্প্রদায়ের সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন কুকি এবং তিনজন মেইতি সম্প্রদায়ের।
৩ মে থেকে, রাজ্যে ইম্ফল উপত্যকার সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতি এবং পার্শ্ববর্তী পাঁচটি জেলার প্রভাবশালী উপজাতি কুকি সম্প্রদায়ের মধ্যে হিংসার ঘটনা অব্যাহত। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে এই সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত ১৬০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, এবং হিংসায় বহু মানুষ আহত হয়েছেন। হিংসার জেরে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।