মণিপুর হিংসা সংক্রান্ত ১১ টি মামলা রাজ্য পুলিশের থেকে কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরোতে (সিবিআই)-য়ের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তিনটি গণধর্ষণের ঘটনা। অপর একটি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তরিত করা হয়েছে। যেখানে সিআরপিএফ সহকারী কমান্ড্যান্টের বিরুদ্ধে ৫৬ বছরের মহিলার গোপনাঙ্গে প্রকাশ্যে লাথি মারার অভিযোগও রয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আরও জানতে পেরেছে, চারটি হিংসা মামলাও রাজ্যপুলিশের হাত থেকে সিবিআইয়ের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। যার মধ্যে তিনটি মেইতি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে এবং একটি মামলা কুকি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত। ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসায় পুড়ছে মণিপুর। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে ২৫ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন থানায় ৬,৫২৩টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
দুটি গণধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তদের এখনও শনাক্ত করা যায়নি। এমনকি একটিতে স্থান ও সময় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তৃতীয় মামলায় এক কিশোরসহ সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সিআরপিএফ সহকারী কমান্ড্যান্টের বিরুদ্ধে ৫৬ বছরের মহিলার গোপনাঙ্গে প্রকাশ্যে লাথি মারার অভিযোগের যে মামলা দায়ের করা হয়েছে সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার তাঁর বক্তব্যে মণিপুরের হিংসার ঘটনায় কংগ্রেসকে দায়ী করেন প্রধানমন্ত্রী। দু’ঘণ্টার বেশি সময় তিনি বক্তৃতা দেন।বৃহস্পতিবার অনাস্থা বিতর্কে অংশ নিয়ে মোদী বলেন, ‘কংগ্রেসের নীতির জন্য আজ মণিপুরের এই দশা। কংগ্রেসের অতীতের নীতিতেই লুকিয়ে রয়েছে মণিপুর সমস্যার মূল কারণ।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা (কংগ্রেস) কখনও উত্তর-পূর্বের আবেগ বোঝার চেষ্টা করেননি। আমি (উত্তর-পূর্ব) ৫০ বার পরিদর্শন করেছি। এটি কেবল একটি তথ্য নয়, এটি উত্তর-পূর্বের প্রতি উত্সর্গ। মণিপুরে কার সরকার ছিল, যখন মহাত্মা গান্ধীর ছবি সরকারি অফিসে লাগানোর অনুমতি ছিল না? কার সরকার ছিল, যখন মণিপুরের স্কুলে জাতীয় সংগীত না-বাজানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল? তাদের (বিরোধীদের) সবকিছুই নির্বাচন ঘিরে। তারা রাজনীতির বাইরে চিন্তা করতে পারে না।’
একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দেন, শীঘ্রই মণিপুরে শান্তি ফিরে আসবে। তিনি বলেন, ‘মণিপুরে আবার শান্তি ফিরে আসবে। আমি মণিপুরের জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই যে রাজ্যটি শীঘ্রই উন্নয়নের পথে ফিরে আসবে। আমরা এর জন্য কোনও চেষ্টাই বাকি রাখব না। মহিলাদের ওপর অত্যাচার থেকে সমস্ত ধরনের অত্যাচারের ক্ষেত্রে দোষীদের কঠোর থেকে কঠোরতম সাজা দেওয়া হবে।’
এরপরই বক্তব্যে নাম না-করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী। রাহুল গান্ধী বুধবারই অভিযোগ করেছিলেন, মণিপুরে আসলে দেশকে অর্থাৎ ভারতকে হত্যা করেছে বিজেপি। কংগ্রেস সাংসদের সেই অভিযোগে বুধবারই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। বৃহস্পতিবার সেই প্রসঙ্গ উঠে এল প্রধানমন্ত্রীর গলাতেও। তিনি বলেন, ‘এই সভায় মা ভারতী সম্পর্কে যা বলা হয়েছে, তা দেশের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করেছে। কিছু লোক মা ভারতীর মৃত্যু নিয়ে কথা বলেছেন। এর চেয়ে দুর্ভাগ্যজনক আর কী হতে পারে!’