করোনা আবহে তবলিঘি জামাত ঘিরে উত্তাল হয়েছিল দেশ। জমায়েতে যোগদানকারী বহু জনের শরীরে মিলেছিল করোনার জীবাণু। কোয়ারেন্টিন সেন্টারে বহু রোগীর বিরুদ্ধে উঠেছিল অসহযাগিতার অভিযোগ। বিতর্ক সরিয়ে এবার তবলিঘি জমায়েতের করোনা সুস্থরাই পথ প্রদর্শক। করোনা আক্রান্ত সংকটাপন্ন রোগীদের প্রাণ বাঁচাতে প্লাজমা দানে রাজি সাড়ে তিনশ জন করোনাজয়ী তবলিঘি জমায়েতকারী। সম্প্রীতির সুর রাজধানী শহরে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়ে ইতিমধ্যেই ২৫ তবলিঘি জমায়েতকারী প্লাজমা দান করেছেন। প্লাজমাদানকারী বছর চল্লিশের ফারহা বাসারের কথায়, 'মানবিকতার তাগিদ থেকে প্লাজমা দান করলাম। এতেই অন্যের জীবন বাঁচানো যাবে বলে শুনেছি। আমার মতই যাঁরা করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করে জিতেছি, তাঁরা সবাই এই মহৎকাজে এগিয়ে আসুন।'
সুলতানপুরী ও নারেলা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ইচ্ছুক প্লাজমাদাতাদের আসতে বলা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। সোমবার রাতেই কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ঘুরে দেখেছেন দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন।
আরও পড়ুন- ৩ মে-র পরও হটস্পটে লকডাউন
নিজামুদ্দিনের তবলিঘি জমায়েতে যোগদানকারী ১,০৮০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন অনেকেই চিকিৎসার মাধ্যমে সেরে উঠেছেন। সেই করোনাজয়ীরাই এবার প্লাজমা দান করে অন্যের বাঁচার পথ সুগম করছেন।
করোনার চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি আশার আলো। দিল্লিতের ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনের শরীরে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ করা হয়েছে। এঁদের অধিকাংশই সুস্থ হয়ে উঠছেন। রাজধানীনে ম্যাক্স হাসপাতালে প্রথম ৪৯ বছরের এক করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্লাজমা থেরাপি হয়। বর্তমানে তিনি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।
গত রবিবার অরবিন্দ কেজরিওয়াল অনুরোধ করেছিলেন, ‘যাঁরা করোনাকে হারিয়েছেন তাঁরা এগিয়ে আসুন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা রোগীদের চিকিৎসার জন্য রক্তের প্লাজমা দান করুন। আমরা সবাই করোনা ভাইরাসের ফলে তৈরি হওয়া এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে চাইছি। যদি আগামীকাল একজন হিন্দু রোগী আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকে, তাহলে কে জানে যে তিনি একজন মুসলিমের দেওয়া প্লাজমা থেকে সুস্থ হবেন না। অথবা যদি একজন মুসলিম রোগী গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় থাকেন তাহলে তাঁকে হয়তো সুস্থ বাঁচাবেন কোনও হিন্দু।’
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন