১) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সোমবার ঘোষণা করেছেন যে ৩৭০ ধারা বাতিল করা হবে। এই ধারায় জম্মু কাশ্মীর বিশেষ কিছু মর্যাদা পেয়ে থাকে। অমিত শাহ বলেছেন, এখন থেকে এ রাজ্যে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত হবে, একটি লাদাখ ও অন্যটি জম্মু-কাশ্মীর। লাদাখের কোনও বিধানসভা থাকবে না, তবে জম্ম-কাশ্মীরের বিধানসভা থাকবে। এ সম্পর্কিত রাষ্ট্রপতির নির্দেশনামা পড়ে শোনান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
২) কাশ্মীরে গত সপ্তাহে ব্যপাক পরিমাণ নিরাপত্তাবাহিনী মজুত করা হয়েছে, বাতিল করে দেওয়া হয়েছে অমরনাথ যাত্রা। গোটা উপত্যকা জুড়ে এখন একদিকে আতঙ্ক, অন্যদিকে সংশয়। রবিবার গভীর রাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য শ্রীনগর জুড়ে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
আরও পড়ুন, জম্মু কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার; কী রয়েছে নির্দেশে?
৩) উপত্যকার সমস্ত প্রভাবশালী নেতানেত্রীদের গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। এঁদের মধ্যে রয়েছে পিডিপি প্রধান মেহবুবা মুফতি, ন্যাশনাল কনফারেন্সের ওমর আবদুল্লা এবং ফারুক অবদুল্লা এবং জম্মু কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্সের সাজ্জাদ লোন।
৪)সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মোবাইল, ব্রডব্যান্ড এবং কেবল টিভি পরিষেবা।
৫) এর আগে শুক্রবার সরকার বার্ষিক অমরনাথ যাত্রা বাতিল করে দিয়ে যাত্রী ও পর্যটকদের উপত্যকা ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেনাবহিনী জানিয়েছিল, পাকিস্তানের জঙ্গিরা যাত্রার উপর হামলা চালাতে পারে বলে খবর রয়েছে। রবিবারের মধ্য ৯৮ শতাংশ পর্যটক কাশ্মীর ছেড়ে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন বিভাগের ডিরেক্ট নিসার ওয়ানি।
৬) এনআইটি শ্রীনগরের ছাত্রদের হোস্টেল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল ও কলেজে পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। রবিবার একটি বড় অংশের ভিন রাজ্যের শ্রমিকরা কাশ্মীর ছেড়ে চলে গিয়েছেন।
আরও পড়ুন, জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা আসলে কী? কোথা থেকে এল এই আইন?
৭)কাশ্মীর নিয়ে বিজেপি সরকারে কার্যকলাপের সমালোচনা করেছেন বিরোধী নেতারা। সোমবার কংগ্রেস নেতা শশী তারুর টুইট কর বলেছেন, "জম্মু কাশ্মীরে হচ্ছেটা কী! নেতাদের কেন গ্রেফতার করা হয়েছে কোনও কারণ ছাড়াই! যদি কাশ্মীরিরা আমাদের নাগরিক হন এবং তাঁদের নেতারা আমাদেরই অংশ হন, তাহলে যখন আমরা সন্ত্রাসবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে কার্যকলাপ চালাচ্ছি সে সময়ে তো নিশ্চিতভাবেই মূলধারার সবাইকে আমাদের সঙ্গেই তো রাখা উচিত! তাঁদেরই যদি বাদ দিয়ে দিই, বাকি কে থাকে।"
৮) এর আগে সরকারি এক গুচ্ছ নির্দেশে উপত্যকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গত ২৮ জুলাই রেলের এক আধিকারিককে বলা হয় রেলওয়ে আধিকারিকদের চার মাসের রেশন মজুত করে রাখতে, কাশ্মীরে তাঁদের পরিবারের লোকজনকে না রাখতে এবং জরুরি পরিস্থিতির কারণে কর্মীদের ছুটিতে বিধিনিষেধ আরোপ করতে। সেদিনই আরেকটি নির্দেশে পুলিশ উপত্যকার মসজিদ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠায়।
৯) ৩০ জুলাই রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক বলেছিলেন, এসব নির্দেশের কোনওটিই প্রামাণ্য নয়, প্রচুর গুজব ছড়াচ্ছে। রেলের পক্ষ থেকে পরবর্তীকালে ওই নির্দেশ প্রত্যাহার করা হয়। রেলমন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয় ওই আধিকারিক এই ধরনের কোনও চিঠি দেওয়ার অধিকারী নন।
১০) সরকার এই রাজ্যে নিরাপত্তাবাহিনীর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি করে গিয়েছে। ২৫ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ১০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় সশস্ত্র আধা সেনা নিয়োগ করেছে। এ বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা গাড়ি বিস্ফোরণের পর ৪০০ কোম্পানি আধাসেনা নিয়োগ করা হয়েছিল।