মহারত্ন থেকে নবরত্ন, ৩৮ সরকার পোষিত সংস্থা তাদের কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা তবহিল থেকে পিএম কেয়ারে ২,১০৫ কোটি টাকার বেশি জমা করেছে। চলতি বছর ২৮ মার্চ পিএম কেয়ার তহবিল গঠন করা হয়। তখন থেকে ১৩ অগাস্ট পর্যন্ত এই পরিমান সরকার পোষিত ৩৮ সংস্থার মাধ্যমে অর্থ জমা পড়েছে। তথ্যের অধিকার আইনের মাধ্যমে পিএম কেয়ারে এই অর্থ জমার বিষয়টি দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে।
Advertisment
করোনা মোকাবিলায় পিএম কেয়ার তহবিল গঠন করা হয় মার্চ মাসে। ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই তহবিলে ৩,০৭৬.৬২ কোটি টাকা জমা হয়েছিল। পিএম কেয়ার ওয়েবসাইট অনুযায়ী এই পরিমান অর্থ 'স্বেচ্ছা অনুদান' হিসাবে জমা করা হয়েছে।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস তথ্যের অঝিকার আইনের মাধ্যমে ৫৫ সরকার পোষিত সংস্থার কাছে পিএম কেয়ারে তাদের অনুদানের বিষয় জানতে চেয়েছিল। ১৩ অগাস্ট পর্যন্ত ৩৮ সংস্থা এই আবেদনের ভিত্তিতে প্রতিক্রিয়া দেয়। যাতে উল্লেখ, ২০১৯-২০, ২০২০-২১ বাজেট বরাদ্দ থেকে গত পাঁচ মাসে মোট ২,১০৫.৩৮ কোটি টাকা পিএম কেয়ারে দেওয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছেও দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পিএম কেয়ারে জমা পড়া তবহিল সম্পর্কে জানতে আবেদন করে। উল্লেখ্যোগ্যভাবে গত ২৮ মে পিএমও-এর তরফে জবাব দেওয়া হলেও এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। সেখানে বলা হয়, 'পিএম কেয়ার তহবিল ত্যের অধিকার আইনের ২(এইচ) ধারা অনুসারে পাবলিক অথরিটি নয়, প্রয়োজনীয় তথ্য পিএম কেয়ারস.গভ.ইন মিলবে।'
Advertisment
তবে, ওই ওয়েবসাইটে কোন সরকার পোষিত সংস্থা বা কে কত টাকা দিয়েছে তার উল্লেখ ছিল না। পরবর্তীকালে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের আবেদনের জবাবে পিএমও গত ২৪ জুন জানায়, 'এ সংক্রান্ত বিষয় কোন তথ্যই দেওয়া যাবে না।'
যাইহোক, সরকার পোষিত সংস্থাগুলোর জবাবে ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে যে, কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে বরাদ্দের অব্যবহার্য টাকা পিএম কেয়ারে দেওয়া হয়েছে। ওই অর্থবর্ষের চার দিন বাকি থাকতেই ২৮ মার্চ পিএম কেয়ার তহবিল গঠন করা হয়েছিল।
চলতি অর্থবর্ষের কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে বরাদ্দ চূড়ান্তস্তরে নির্ধারিত না হলেও এখান থেকেও পিএম কেয়ারে অনুদান দেওয়া হয়েছে। একটি সরকার পোষিত সংস্থা স্বীকার করেছে যে, কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা খাতে বরাদ্দের তুলনায় অনেক বেশি টাকা পিএম কেয়ারে দেওয়া হয়েছে।
যে ৩৮ সংস্থা পিএম কেয়ারে অর্থ জমা করেছে তাদের মধ্যে প্রথম প্রথমেই রয়েছে ওএসজিসি। তাদের জমা করা অর্থের পরিমান ৩০০ কোটি।
ওএনজিসি স্বীকার করেছে যে, চলতি অর্থবর্ষের ২০২০-২১ সালের কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর)খাতে বরাদ্দ চূড়ান্ত না হলেও তারা পিএম কেয়ারে সেখান থেকেই অর্থ দিয়েছে। এইচপিসিএল-ও ২০২০-২১ সিএসআর বরাদ্দ থেকে ১২০ কোটি পিএম কেয়ার তহবিলে দিয়েছে।
পাওয়ার ফিনান্স কর্পোরেশন ২০২০-২১ সিএসআর বরাদ্দের তুলনায় বেশি অর্থ পিএম কেয়ারে দিয়েছে। তথ্যের অধিকার আইন মারফত সংস্থা জানিয়েছে যে, চলতি অর্থবর্ষে সিএসআর খাতে ১৫০.২৮ কোটি নির্ধারিত ছিল। তবে ২০০ কোটি পিএম কেয়ারে দেওয়া হয়েছে।
ওয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড জানিয়েছে তারা দুই পর্যায়ে যথাক্রমে ১৩ ও ২৫ কোটি দিয়েছে। পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন দিয়েছে ১৩০ ও ৭০ কোটি। রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন কর্পোরেশন ২০১৯-২০ অর্থবর্ষ থেকে ১০০ কোটি ও ২০২০-২১ অর্থবর্ষ থেকে ৫০ কোটি জমা করেছে।
এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের ৮৩.৭৯ কোটি সিএসআর বরাদ্দ থেকে ১৫ কোটি পিএম কেয়ারে দিয়েছে।
সেইল জানিয়েছে, গত তিন বছর লাভ না থাকলেও চলতি সিএসআর কার্যক্রমের জন্য ৩৩ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে।