সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ললিত ঝা-কে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত বাকি চার অভিযুক্তকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বলেছে, এই নিরাপত্তা লঙ্ঘনের পিছনে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র বের করার জন্য একটি গভীর তদন্ত প্রয়োজন। অভিযুক্ত মনোরঞ্জন ডি, সাগর শর্মা, নীলম ভার্মা এবং অমল শিণ্ডে- যাদেরকে গতকাল ইউএপিএ-র ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছিল, তাদের ১৫ দিনের হেফাজত চেয়ে, সরকারি আইনজীবী অতুল শ্রীবাস্তব বলেছেন যে অভিযুক্তরা প্রধানমন্ত্রীকে নিখোঁজ হিসাবে দেখানো একটি প্রচারপত্র বহন করছিল। সেখানে তারা বলতে চেয়েছে, নিখোঁজ প্রধানমন্ত্রীর সন্ধান দিলে 'সুইস ব্যাংক থেকে আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হবে।'
আরও পড়ুন- সংসদে হামলাকারীদের অনুপ্রেরণা ভগৎ সিং? যা জানা গেল
বুধবার সংসদে এই ব্যাপক নিরাপত্তা লঙ্ঘনের কারণে লোকসভা সচিবালয় আট নিরাপত্তা কর্মীকে বরখাস্ত করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হওয়ার সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট জোরদার করা হয়। বিরোধী নেতারা নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়ে আলোচনার দাবি করায় সংসদের উভয়কক্ষে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। কিছুক্ষণ পর, টিএসি সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েনকে শীতকালীন অধিবেশনের বাকি অংশের জন্য সাসপেন্ড করা হয়। হইচইয়ের জেরে সংসদের উভয়কক্ষের অধিবেশন স্থগিত করা হয়।
বুধবার সকালে ধোঁয়ার ক্যানিস্টার নিয়ে দু'জন ব্যক্তি দর্শকদের গ্যালারি থেকে লাফ মেরে সংসদের কক্ষে ছুটে যান। লোকসভার ফুটেজে দেখা যায়, একজন লোক ডেস্ক থেকে ডেস্কে লাফিয়ে বেড়াচ্ছেন। আর, দ্বিতীয় ব্যক্তি দর্শক গ্যালারিতে ধোঁয়া উড়াচ্ছেন। সংসদ কক্ষের ভিতরে উপস্থিত সদস্যরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে নিরাপত্তা ভঙ্গকারীরা, 'তানা শাহি নেহি চলেগি' (এই স্বৈরাচার মেনে নেওয়া হবে না) স্লোগান দিচ্ছিলেন। দু'জনকেই আটক করা হয়।
তদন্তকারীরা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, সংসদের নিরাপত্তা লঙ্ঘনকারী দলের মূল অংশ হিসেবে সন্দেহভাজন ষষ্ঠ ব্যক্তিকে গ্রেফতারের জন্য দিল্লি পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। কলকাতার শিক্ষক ললিত ঝা, এই নিরাপত্তা লঙ্ঘনের প্রধান ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন বলেই পুলিশ জানিয়েছে। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, অভিযুক্তরা বিপ্লবী শহিদ ভগত সিংয়ের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। তারা এমন একটি কাজ করতে চেয়েছিল, যা তাদের প্রতি দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
তদন্তকারীরা এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে এই নিরাপত্তা ভঙ্গকারীদের যোগসূত্র খুঁজে পায়নি। তদন্তকারীদের মতে, অভিযুক্তরা সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরের সংস্পর্শে আসার পরে ছয় জনই ফেসবুকে ভগত সিং ফ্যান পেজে যোগদান করেছিলেন। ললিত, সাগর শর্মা ও মৌরঞ্জন ডি প্রায় এক বছর আগে মহীশূরে দেখা করেছিল। সেখানেই তারা সংসদে প্রবেশের পরিকল্পনা করেছিল। তারা পরে নীলম এবং অমলকেও পরিকল্পনায় যুক্ত করে। একজন শিক্ষক হওয়ার কারণে, ললিত নেতৃত্ব দিয়েছিল। মনোরঞ্জনকে বর্ষা অধিবেশন চলাকালীন সংসদের সমস্ত প্রবেশপথের রেইকি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।