৪০ লক্ষের মধ্যে এনআরসি-র ক্লেম ফর্ম জমা পড়েছে মাত্র ৭ লক্ষ!

এখনও পর্যন্ত মাত্র ৭ লক্ষ ক্লেম ফর্ম জমা পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। ক্লেম ফর্ম জমা পড়ার সংখ্যা নিয়ে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও যে সন্তুষ্ট নন, তা গত ২৩ নভেম্বর নিজেই জানিয়েছিলেন সর্বানন্দ সোনওয়াল।

এখনও পর্যন্ত মাত্র ৭ লক্ষ ক্লেম ফর্ম জমা পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। ক্লেম ফর্ম জমা পড়ার সংখ্যা নিয়ে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও যে সন্তুষ্ট নন, তা গত ২৩ নভেম্বর নিজেই জানিয়েছিলেন সর্বানন্দ সোনওয়াল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
assam, আসাম

হানিফ আলি, ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

আসামে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ৪০ লক্ষ মানুষের নাম। যে তালিকায় নাম না থাকা নিয়ে নিজেদের দাবি ও আপত্তি পেশ করার জন্য আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। কিন্তু সেই ‘ক্লেম ফর্ম’ জমা দিতে গিয়ে অনেকেই বিপাকে পড়ছেন। এখনও পর্যন্ত মাত্র ৭ লক্ষ ক্লেম ফর্ম জমা পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। ক্লেম ফর্ম জমা পড়ার সংখ্যা নিয়ে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও যে সন্তুষ্ট নন, তা গত ২৩ নভেম্বর নিজেই জানিয়েছিলেন সর্বানন্দ সোনওয়াল। এদিকে, হাতে রয়েছে মাত্র দু’সপ্তাহ, তারপরই সেই চূড়ান্ত দিন। শেষ মুহূর্তে ক্লেম ফর্ম ফাইল করা নিয়ে চূড়ান্ত ব্যস্ত এনআরসি-র তালিকাহীনরা।

Advertisment

গত ৩০ জুলাই এনআরসি-র প্রকাশিত তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন কামরূপ জেলার মেজরটপ গ্রামের বাসিন্দা হানিফ আলি(৪৮)। যিনি এখনও ক্লেম ফর্ম জমা দিতে পারেননি। তাঁর আসল দাদু কে? এ রহস্য উদঘাটন করতে গিয়েই হিমশিম খেয়ছেন তিনি। উত্তরাধিকারের ডেটায় হানিফ তাঁর দাদু মক্রুম আলির নাম উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু পারিবারিক তথ্য যাচাইয়ের সময় এনআরসি আধিকারিকরা লক্ষ্য করেন, যে মক্রুম আলিকে নিজের দাদু বলে উল্লেখ করেছেন হাফিন। তিনি আদপে অন্য কোনও ব্যক্তি। অর্থাৎ, নামে মিল রয়েছে মাত্র। যে কারণেই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে তিনি ও তাঁর পরিবারের ২০ জনের নাম।

আরও পড়ুন, আসাম এনআরসি: দাবি ও আপত্তি নথিভুক্তির সময়সীমা বাড়াল সুপ্রিম কোর্ট

Advertisment

এরপর হাফিন ভেবেছিলেন যে ক্লেম ফর্ম জমা দেওয়ার সময় উত্তরাধিকারের তথ্যে তিনি তাঁর বাবা রুস্তম আলির নাম উল্লেখ করেবেন। যাঁর নাম ১৯৬৬ সালে ভোটার তালিকায় ছিল। কিন্তু এ সংক্রান্ত সুপ্রিম রায়ের জেরে তাও খারিজ করা হয়েছে।

দাদুর সন্ধানে গোয়ালপাড়া গিয়েছিলেন হানিফ। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারলেন যে, দাদুর ঠিকানা হিসেবে এনআরসি-তে ‘৬২ তিলপাড়া’ উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর দাদু থাকতেন ৬৩ তিলপাড়ায়। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘‘ ১৯৫১ সালে এনআরসি ও ১৯৫৪ সালে ভোটার তালিকায় আমার আসল দাদুর নাম পেয়েছি। অনেকটা সময় লাগল। শীঘ্রই ক্লেম ফর্ম জমা দেব।’’

কামরূপ জেলার আরেক বাসিন্দা হাতিশিলা গ্রামের শোরিপান নেসা, যিনি বাবার নাম উল্লেখ করা হিসেবে গ্রাম প্রধানের সার্টিফিকেট পেশ করেছিলেন। কিন্তু তা বাতিল করা হয়েছে। কারণ, এ সংক্রান্ত কোনও তথ্য নথিভুক্ত করা ছিল না। যদিও শোরিপানের মতো অনেকেরই রেশন কার্ড রয়েছে বলে দাবি করেছেন হাতিশিলা-ভালুকবাড়ির পঞ্চায়েত সভাপতি আক্রম হুসেন।

অন্যদিকে ক্লেম ফর্ম ফিল-আপ কীভাবে করতে হয়, তাই-ই অনেকে জানেন না। এ প্রসঙ্গে হুসেন জানালেন, ‘‘অনেক বিভ্রান্তি রয়েছে। কোন নথি জমা দিতে হবে, তা স্পষ্ট নয়। গরিব মানুষরা এত জটিলতা বোঝেনই না। ফলে তাঁদের সমস্যা হচ্ছে খুব।’’

যেহেতু হাতে আর বেশি দিন সময় নেই, তাই শেষবেলায় বেশি সংখ্যক ক্লেম ফর্ম জমা পড়বে বলেই মনে করছে এনআরসির আধিকারিকরা। এদিকে, শেষ মুহূর্তে নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন এনআরসির তালিকাহীনরা।

Read the full story in English

national news nrc