স্কুল খুললো মুম্বইতে। যা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া নজরে পড়ল। প্রথম দিনে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ৫০ শতাংশেরও কম। বৃহন্মুম্বই পুরনিগমের শিক্ষা বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুসারে সোমবার মাত্র ৪৪ শতাংশ পড়ুয়া অফলাইনে ক্লাস করেছে। অর্থাৎ, এখনও অনলাইনে ক্লাস করার প্রবণতা বেশি।
প্রাক প্রাথমিক স্তর থেকেই স্কুল খুলেছে মুম্বইয়ে। উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা তো বটেই, কচিকাঁচারাও স্কুলে যাচ্ছে। তবে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠানো বাধ্যতামূলক নয় বলেই নির্দেশিকায় জানিয়েছিল মহারাষ্ট্র সরকার। অভিভাবকরা চাইলে বাচ্চাদের বাড়িতেই রেখে দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে অনলাইনে ক্লাস করবে পড়ুয়ারা।
মুম্বইতে মোট স্কুলের সংখ্যা ৪,০৪৩টি। এরমধ্যে সোমবার খুলেছে ৩,৮৫০টি স্কুল। প্রথম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় ১৬,৩৫,৩৭০ জন। এরমধ্যে স্কুল খোলার প্রথম দিন ক্লাসে হাজির হয়েছিল ৭,২০,০৯২ জন পড়ুয়া। তবে, বেশ কয়েকটি বেসরকারি স্কুলেক তরফে জানানো হয়েছে যে, অফলাইনে ক্লাস চালিতে আরও বেশকয়েকদিন সময় লাগবে।
প্রথম দিনেই উপস্থিতির হার ৫০ শতাংশের নীচে। কিন্তু, আগামী কয়েক দিনেই অবস্থার বদল ঘটবে, ক্লাসে বাড়বে পড়ুয়ার সংখ্যা- আশাবাদী শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁরা মনে করছেন অভিভাবকরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। ডি এস হাইস্কুলের ট্রাস্টি প্রধান রাজেন্দ্র প্রধানের কথায়, 'অনেকেই শহরে নেই, আবার অনেকেই সব দিন খতিয়ে দেখছেন। আশা করছি আহামী বুধবারের পর থেকে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়বে।'
কুরলার একটি স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক জয়বন্ত কুলকার্নি বলেছেন, 'স্কুলগুলি পুনরায় খোলার ফলে কিছু শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে যে আত্মতুষ্টির পদ্ধতি গড়ে তুলেছিল তা ভেঙে যাবে। যারা ভাবতে শুরু করেছিল যে পরীক্ষা হবে না তারা এখন গুরুত্ব সহকারে পড়াশোনা করবে। যেহেতু এখন স্কুল শুরু হয়েছে,তাই তারা বুঝতে পারছে যে পরীক্ষা অফলাইনে হবে। ফলে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়বে।'
কিছু বেসরকারি স্কুল অফলাইন ক্লাসের জন্য পুনরায় চালু হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। এক্ষেত্রে আবহাওয়ার পরিস্থিতিও ফ্যাক্টর ছিল। শিশুবন স্কুলের প্রিন্সিপাল প্রাচী রণদিব বলেন, 'আবহাওয়ার কারণে অনেক পড়ুয়ার সর্দি-কাশি রয়েছে, সেটা ভেবেই আমরা সাবধানে পা ফেলছি।'
তবে, যেসব পড়ুয়া স্কুলে এসেছিল তাদের ও সেইসব অভইভাবকদের মধ্যে ভালোলাগার বিষয়টি নজরে পড়েছে। ওবেরয় ইন্টারন্যাশনাল স্কুললের এক অভিভাবক মনেশি শাহ-র কথায়, 'আমার মেয়ে জুনিয়র কেজিতে পড়ে। তার স্কুলে ভর্তির বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকে অনলাইনে ক্লাস চলছিল। শেষ পর্যন্ত সে স্কুলে যেতে পেরেছে। ফলে ওর মধ্যে একটা আলাদা উত্তেজনা কাজ করছিল।' স্কুল কীভাবে সরক্ষার আয়োজন করেছে? মনেশি বলেছেন, 'অভিভাবকরা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করছেন। কারণ ছোট বাচ্চারা তাদের বেড়ে ওঠার সময় বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সব শিশুই শেষ পর্যন্ত স্কুলে যাচ্ছে, এটাই আনন্দের।'
প্রথম দিনই শিশুদের মনে চাপ না দিতে প্রাক প্রাইমারি স্কুলে মূলত খেলার পরিবেশ বজায় ছিল। আঁকা, গান, বাজনাতেই সীমিত ছিল ক্লাস।
Read in English