অর্থনীতিতে মন্দা। বাড়ছে বেকারত্বের হার। কর্মসংস্থানের চাহিদা তুঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে ১১ জুলাই প্রধানমন্ত্রী মোদী কাজের সন্ধান দিতে সরকারি পোর্টালের সূচনা করেছিলেন। দেখা গিয়েছে, মাত্র ৪০ দিনে সেই পোর্টালে নাম নথিভুক্তের সংখ্যা ৬৯ লক্ষ। কিন্তু, নথিভুক্তদের তুলনায় কাজ মিলেছে খুবই সামান্য। লকডাউন পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ শুরু হলেও বর্তমানে কর্মসংস্থানই যে সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় আর্থ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ তা স্পষ্ট।
গত এক সপ্তাহে (১৪-২১ অগাস্ট) সরকারি পোর্টালে ৭ লক্ষেরও বেশি নাম নথিভূক্ত হয়েছে। এর মধ্যে কাজ পেয়েছেন মাত্র ৬৯১ জন।
আত্মনির্ভর দক্ষ কর্মচারী কর্মদাতা ম্যাপিং পোর্টাল অনুযায়ী ৩.৭ লক্ষ চাকরি প্রার্থীর মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ কাজ পেয়েছেন। ৬৯ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক ওই পোর্টালে নাম নথিভুক্ত করেছেন। যার মধ্যে ১.৪৯ লক্ষ কাজের প্রস্তাব পেয়েছেন এবং কাজে যোগ দিতে পেরেছেন মাত্র ৭,৭০০ জন।
দক্ষতা উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়েছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষদের কাজ পেতে সহায়তা করাই এই পোর্টালের লক্ষ্য। নাম নথিভুক্তকারীরা কেবল পরিযায়ী শ্রমিক নন বলেও মত মন্ত্রকের। আত্মনির্ভর কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে দরজি, বিদ্যুতের কর্মী, সেলাইয়েক কাজ, ফিল্ড টেকনিশয়নদের চাহিদা তুঙ্গে। এছাড়াও ক্যুরিয়ার এগজিকিউটিভ, পরিস্কারের কাজ, সেলস এগজিকিউটিভের কাজেরও চাহিদা রয়েছে।
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, দিল্লি, তেলেঙ্গানা, হরিয়ানা থেকে সবচেয়ে বেশি পরিযায়ী শ্রমিক উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে চলে গিয়েছে। গত সপ্তাহেই কাজের সন্ধানে সরকারি ওয়েবসাইটে ৮০ শতাংশ নাম নথিভুক্ত হয়েছে। ১৪-২১ অগাস্ট নাম নথিভুক্তের সংখ্যা ২,৯৭ লক্ষ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩.৭৮ লক্ষ। তুলনায় এই সময়কালে চাকরিতে নিয়োগ হওয়ার পরিমান শতাংশের বিচারে বেড়েছে ৯.৮৭। চাকরি পাওয়ার সংখ্যা ৭,০০৯ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭,৭০০।
তবে পুরুষদের তুলনায় পোর্টালে গরীব কল্যাণ রোজকার অভিযানে নাম নথিভুরক্তকারী মহিলার সংখ্যা বেশ কম। নথিভুক্তদের মধ্যে মাত্র ৫.৪ শতাংশ মহিলা। জুন মাসে ১১৬ জেলায় গরিব কল্যাণ প্রকল্পের সূচনা হয়েছিল।
আত্মনির্ভর দক্ষ কর্মচারী কর্মদাতা ম্যাপিং পোর্টালে কাজ দেওয়ার জন্য ৫১৪ সংস্থা নাম নথিভুক্ত করেছে। এর মধ্যে ৪৪৩ সংস্থার ২,৯২ লক্ষ কাজের পোস্ট করেছে। এর মধ্যে ১.৪৯ শতাংশ কাজ প্রার্থীদের দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। যেসব সংস্থায় মাত্র এঅকতটি পোস্টে কাজের প্রয়োজন তাদের সংখ্যাও গত সপ্তাহে ৪১৯ থেকে বেড়ে ৪৪৩ হয়েছে। লজিস্টিক, হেল্থ কেয়ার, ব্যাংক, ফিন্যান্স সার্ভিস, বিমা, রিটেইল, নির্মাণ সংস্থার তরফে পোর্টালে কাজের প্রস্তাব সংখ্যা প্রায় ৭৩.৪ শতাংশ। কর্নাটক, দিল্লি, হরিয়ানা, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা থেকে কাজের প্রস্তাব সবচেয়ে বেশি (৭৭ শতাংশ)।
দক্ষতা উন্নয়মমন্ত্রকের মন্ত্রী মহেন্দ্রনাথ পান্ডে আশা প্রকাশ করে বলেছেন যে, 'আত্মনির্ভর ভারতের লক্ষ্যে এই পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে- যা কর্মপ্রার্থী ও দাতার সংযোগ রক্ষা করবে। এতে বাজার ও শিল্পেরও সুবিধা হবে।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন