লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি, ইসলামাবাদ, ফয়সালাবাদ, করাচি, সহ বিক্ষোভের আঁচ পড়েছে সমগ্র পাকিস্তানে, প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী এবং পিটিআই প্রধান ইমরান খানের গ্রেফতারের প্রতিবাদে, হাজার হাজার সর্মথক রাস্তায় নামে। বিক্ষুব্ধ জনতা বাড়িঘর, অফিস ও যানবাহনে পাথর ছোঁড়ে, ব্যানার ও টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এই সংক্রান্ত একাধিক ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্স (আইএসপিআর) ৯ মে- এর ঘটনাকে দেশের ইতিহাসে একটি "অন্ধকার অধ্যায়" বলে অভিহিত করেছে। বুধবার জারি করা এক বিবৃতিতে আইএসপিআর পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করে জানিয়েছে, বিক্ষোভে সেনাবাহিনীকে টার্গেট করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে হংসার ঘটনায় কাউকে রেয়াত করা হবে না।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নাটকীয় গ্রেপ্তারের ঘটনায় পাকিস্তান জুড়ে প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে, স্থানীয় মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে হিংসার ঘটনায় কমপক্ষে আটজন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। ফাওয়াদ চৌধুরী এবং আসাদ উমর সহ খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বুধবার, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেফতারের পর তার প্রথম ভাষণে দাবি করেছেন, পিটিআই প্রধানের বিরুদ্ধে "সমস্ত প্রমাণ" রয়েছে। তার ভিত্তিতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত চালাচ্ছে’।
ইমরান খানের গ্রেফতারির পর, করাচি, পেশোয়ার, রাওয়ালপিন্ডি এবং লাহোর সহ পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ তীব্র হয়, হিংসার ঘটনায় অন্তত একজন নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। স্থানীয় মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে পিটিআই সমর্থকরা রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদর দফতর এবং লাহোরে কর্পস কমান্ডারের বাসভবনে হামলা চালায়। সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর দেশব্যাপী হিংসাত্মক বিক্ষোভ শুরু হয়। এদিকে পাক দৈনিক ডন জানিয়েছে, ইসলামাবাদ হাইকোর্ট ইমরান খানের গ্রেফতারিকে বৈধ বলে ঘোষণা করেছে। ইসলামাবাদ পুলিশ এখন পর্যন্ত শ’খানে জন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে।
ইমরান গ্রেফতার হতেই পাকিস্তানজুড়ে সমর্থকদের তাণ্ডব, গুজব ঠেকাতে বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবাও। ইমরান খান গ্রেফতার হতেই পাকিস্তানজুড়ে শুরু হয়ে তীব্র অশান্তি। ইমরান সমর্থকরা পাকিস্তান সেনার সদর দফতর রাওয়ালপিন্ডির সেনা ছাউনিতে হামলা চালান। আবার লাহোরে কর্পস কমান্ডারের বাসভবনেও তাঁরা ঢুকে পড়েন।
পরিস্থিতি সামলাতে মোবাইল ডেটা পরিষেবা এবং ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছে পাকিস্তানজুড়ে। যার তীব্র নিন্দা করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তারা টেলিকম কর্তৃপক্ষকে মোবাইল পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার অনুরোধ করেছে। পাকিস্তান পুলিশ আবার জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে পাঁচ অফিসার আহত হয়েছেন। পাক পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মহসিন কাদরিও ইমরানের গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, এই গ্রেফতারি গণতন্ত্রের ওপর আঘাত।