দিল্লিতে করোনার তৃতীয় ঢেউকালে মৃতের সংখ্যার অধিকাংশ’ই কোমর্বিডিটিতে আক্রান্ত ছিলেন অথবা টিকার দুটি ডোজ নেননি। দিল্লি সরকারের তরফে কোভিডে মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে যাতে দেখা গেছে ১২ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮০০টির বেশি মৃত্যু হয়েছে যাদের বেশিরভাগই হৃদরোগে বা কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
এছাড়াও মোট মৃতের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ হয় টিকাহীন ছিলেন না হয় তাঁরা টিকার একটি মাত্র ডোজ নিয়েছিলেন। দিল্লি সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের ডেটা অনুসারে ১২ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোভিডের বলি হয়েছেন ৮৭৮ জন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৯১.৩৪ শতাংশ অন্যান্য জটিল রোগে ভুগছিলেন সেই সঙ্গে ১১ জন মারা গেছেন যারা গুরুতর দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে তাঁরা কোভিডে আক্রান্ত হন। ১৮ জন কোভিড আক্রান্তকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল।
ডেটাটি দেখায় কোমর্বিডিটিতে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে কোভিড কতটা ঝুঁকিপূর্ণ। সরকারী তথ্য দেখিয়েছে যে সংক্রমণে মারা যাওয়া ১৬৪ জন রোগীর আগে থেকেই হার্টের সমস্যা ছিল। ১৫২ জন রোগী কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। এছাড়াও সরকারি তথ্য অনুসারে অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে কোভিডের শিকার হয়েছেন এমন রোগীর সংখ্যাও নেহাতই কম নয় তাদের মধ্যে রয়েছে পারকিনসন রোগ বা এইচআইভি পজিটিভ (১৬৪), ফুসফুসের রোগ (১০০), লিভারের রোগ (৭০), ক্যান্সার (৬৩), যক্ষ্মা (৪৩) এবং স্নায়বিক রোগ (৪৬)। এই সময়ের মধ্যে প্রায় ৪৭ জন কোভিড রোগী (৫.৩৫%) মারা গিয়েছিলেন যাদের কোন কোমর্বিডিটি ছিল না।
সরকারি সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে মৃতদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ ছিলেন টিকাহীন অথবা টিকার একটি মাত্র ডোজ নিয়েছিলেন। ওমিক্রনের প্রভাব তুলনামূলক ভাবে কম হলেও কোমর্বিডিটিতে আক্রান্ত মানুষের পক্ষে ওমিক্রন যেকোন সময়েই বিপদ ডেকে আনতে পারে জানিয়েছে সরকারি এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক। স্বাস্থ্য দফতরের এক সিনিয়র আধিকারিক এপ্রসঙ্গে জানান, “সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা এখন কমছে তবে কোমর্বিডিটি যুক্ত মানুষদের এখনও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার।
আমরা জনগণকে টিকা নেওয়ার জন্যও অনুরোধ করব কারণ ভ্যাকসিনগুলি একটি দুর্দান্ত সুরক্ষা ঢাল হিসাবে প্রমাণিত হচ্ছে। এমনকি যদি লোকেরা সংক্রামিত হয়, তবে টিকাপ্রাপ্ত জনসংখ্যার মধ্যে তীব্রতা তাদের তুলনায় অনেক কম যারা টিকাহীন অথবা টিকার একটি মাত্র ডোজ নিয়েছেন”। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও একমত হয়েছেন যে কোভিডের তৃতীয় ঢেউকালে যারা মারা গেছেন তাদের অধিকাংশ’ই অন্যান্য নানা জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন। ডাঃ জুগল কিশোর, সাফদরজং হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, 'কোমর্বিডিটি যুক্ত ব্যক্তিদের টিকাদান সেই সঙ্গে বুস্টার ডোজ নেওয়া একান্ত প্রয়োজন। পাশাপাশি তাদের সব সময়ের জন্য কোভিড প্রটোকল মেনে চলা উচিত'।
Read in English