একবিংশ শতকেও অনাহার এবং তৃষ্ণায় মৃত্যু! এমনটাই সম্ভব হয়েছে রাজস্থানে। যদিও জল না পেয়ে মৃত্যুর এই ঘটনাকে অস্বীকার করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। উলটে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান সরকারের গায়ে ডায় চাপিয়েছে তারা। গ্রামীণ জল সংযোগ প্রকল্পে অনেক পিছিয়ে রাজস্থান। এমন অভিযোগ করেছে জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক।
ঠিক কী হয়েছিল, যার জেরে অকালে ঝরে গেল একটা প্রাণ? স্থানীয়রা বলছেন, ‘প্রায় ৩২ ঘণ্টা প্রচণ্ড গরম, পেটে খিদে আর তৃষ্ণা, এই তিনের কবলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে খুদে অঞ্জলির। তার দিদা সুখী দেবী অন্তত এক সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।‘ অঞ্জলির প্রাথমিক ময়না তদন্তের রিপোর্টে উল্লেখ, ডিহাইড্রেশনের কারণেই মৃত্যু হয়েছে ওই খুদের। অঞ্জলির পরিবার সূত্রে খবর, প্রায় ওই ৯ কিমি রাস্তা পারাপার করে অঞ্জলি। কিন্তু ৫ জুন বাড়ি থেকে জলের বোতল সঙ্গে না নিয়ে গিয়েই এই বিপত্তি।
মর্মান্তিক এই ঘটনায় রাজ্যের জনস্বাস্থ্য এবং কারিগরি দফতরের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার নীরাজ মাথুর বলেন, ‘সিরহি-জালর এলাকায় জলের ঘাটতি নেই। এই দুর্ঘটনার কারণ ওই দুজন জনবসতি থেকে দেড় কিমি দূরে ছিলেন। যেখান থেকে ওদের উদ্ধার করা হয়েছে, সেই জায়গা থেকে কাছের গ্রাম প্রায় ২ কিমি দূরে।‘ জানা গিয়েছে, সিরহি রায়পুরের বাড়ি থেকে ৫ জুন পায়ে হেঁটে ছোট মেয়ের বাড়ি ধুলিয়ার উদ্দেশে বেরোয় সুখী দেবী ও তাঁর নাতনি খুদে অঞ্জলি। সড়কপথে এই রাস্তা পায়ে হেঁটে ১৯ কিমি। কিন্তু মরুভূমি হয়ে বিকল্প পথে গেলে পায়ে হেঁটে সেই রাস্তা ৯ কিমি। প্রতিবার সেই পথেই যাতায়াত করেন সুখী দেবী ও পরিবারের অন্যরা।
কিন্তু ৬ জুন বিকেলের দিকে অচৈতন্য অবস্থায় রোডা গ্রামের সামনে দু’জনকে উদ্ধার করেন শেপার্ড নাগি রাম। যদিও ততক্ষণে প্রাণহীন অঞ্জলি। বিপদ বুঝে ছেলে রায়চাঁদকে খবর পাঠায় নাগি রাম। তাঁর ছেলে গিয়েই স্থানীয় গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানকে খবর দেন। পুলিশ ৫ জুন বাড়ি থেকে বেরনোর পর থেকে পরের ৩২ ঘণ্টা ঠিক কী হয়েছিল? তদন্ত করে খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন