ব্রিটিশ জমানা, ১৮৪৯ সালের ২৯ মার্চ। পঞ্জাবের রাজা দুলীপ সিং তখন ছোট। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পেশ করা নথির বিশাল কূটনৈতিক তাত্পর্য সম্পর্কে ১১ বছরের রাজার পক্ষে বোঝা সম্ভব ছিল না। শিখ রাজ্যের বালক রাজা তখন সম্প্রতি মাতৃহারা। অ্যাংলো-শিখ যুদ্ধের সময় তাঁর রাজ্যের অভ্যন্তরে ভয়ানক লড়াই হয়েছিল। তবে, বয়স কম হওয়ায় এর ক্ষতিকারক প্রভাব তিনি খুব একটা বুঝতে পারেননি। ব্রিটিশদের নথিতে বলা হয়েছিল, দলীপ সিং তাঁর রাজ্য, পদবি, তাঁর ভবিষ্যৎ ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। পাশাপাশি, ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিচ্ছেন কোহিনুর হিরে।
'কোহিনূর' রত্নটি, যা শাহ সুজা-উল-মুলকের থেকে মহারাজা রঞ্জিত সিং ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত দুলীপ সিংহের স্বাক্ষরের দৌলতে সেই রত্ন লাহোরের মহারাজার কাছ থেকে চলে যায় ইংল্যান্ডের রানির কাছে। দলীপ সিংয়ের নথিতে স্বাক্ষরের পরই পঞ্জাব ব্রিটিশ অঞ্চলে পরিণত হয়। বিখ্যাত কোহিনুর রত্ন হয়ে যায় ব্রিটিশ সম্পত্তি।
শুধু তাই নয়, সমগ্র লাহোর কোষাগার ব্রিটিশরা লুঠ করেছিল। যার মধ্যে ছিল অনেক উন্নতমানের নকশা করা রত্ন। যেমন তৈমুরের রুবি এবং দরিয়া-ই-নুর। সবচেয়ে সুন্দর হিরে বলে পরিচিত কোহিনুর ছাড়াই পঞ্জাব সরকারের কোষাগারের আর্থিক মূল্য ছিল এক মিলিয়ন পাউন্ডের সামান্য কম। তবে কোহিনুরের ব্যাপারটাই আলাদা। কারণ, এর সঙ্গে জুড়ে ছিল নানা কাহিনি এবং উত্তরাধিকার। এই রত্ন ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্তাদের সবচেয়ে পছন্দের। গভর্নর জেনারেল লর্ড ডালহৌসি তাঁর ব্যক্তিগত ডায়েরিতে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- কে ধরবেন দলের হাল! কংগ্রেসের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্যতা গেহলট আর থারুরের?
কোম্পানি এই রত্ন দিয়ে ব্রিটেনের রাজবংশকে খুশি করেছিল। আর, ব্রিটেনের রাজবংশ সদস্যরাও এই রত্নের গুরুত্ব বুঝতে দেরি করেননি। রত্নটিকে স্থান দিয়েছিলেন মুকুটে। সেই সময় ফ্রান্সের সম্রাজ্ঞী ও রাশিয়ার ক্যাথরিন দ্য গ্রেটকে টেক্কা দেওয়ার মত কোনও বড় হিরে ব্রিটেনের রানি ভিক্টোরিয়ার কাছে ছিল না। তাই সুদূর প্রাচ্যের ভারত থেকে আসা কোহিনুর হিরে রানি ভিক্টোরিয়াকে রীতিমতো খুশি করেছিল।
Read full story in English