/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/08/cats-196.jpg)
জম্মু ও কাশ্মীরে অশান্তি ছড়াতে কৌশল পাল্টেছে পাকিস্তান।সন্ত্রাসবাদের চেয়েও বড় হুমকি হয়ে উঠছে মাদক চোরাচালান। নিশানা করা হচ্ছে ১৩-৩০ বছরের যুবকদের। মাদক পাচার সমস্যার মোকাবিলা করতে না পারলে তা আগামীর জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। এমনই আশঙ্কার কথা প্রকাশ করলেন জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশের ডিজিপি দিলবাগ সিং।
দ্য ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন পাঞ্জাব এবং জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদের চেয়েও বড় হুমকি হয়ে উঠছে মাদক পাচার। তিনি আরও বলেন, ‘উপত্যকায় মাদকের মহামারী ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা যদি সময়মতো মনোযোগ না দিই এবং এখন থেকে মাদকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এগিয়ে না যাই, তাহলে কঠিন ভবিষ্যৎ আমদের জন্য অপেক্ষা করছে।
ডিজিপি দিলবাগ সিং বলেছেন যে পাকিস্তানী এজেন্সিগুলি, যারা আগে সন্ত্রাসবাদকে আশ্রয় দিত, তারা এখন একটি নতুন নীতি গ্রহণ করেছে এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের জন্য মাদককে ব্যবহার করছে। মাদকের মাধ্যমে সন্ত্রাসকে সামাজিক অপরাধের সঙ্গে মিশিয়ে সমাজের ক্ষতি করার চেষ্টা তাদের। জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণকে যারা সন্ত্রাসের চেয়ে শান্তি পছন্দ করেছে তাদের মধ্যে বিষ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তারা নতুন নীতি গ্রহণ করেছে।
জম্মু ও কাশ্মীরের ডিজিপি সতর্ক করে বলেন, শত্রুরা পাঞ্জাবেও একই নীতি গ্রহণ করেছে। শুধু মাত্র মাদক চোরাচালানের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নই শুধু নয়। মাদকের স্বর্গরাজ্য হয়ে ওঠায় জম্মু-কাশ্মীরে মাদকাসক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে হুহু করে। একই সঙ্গে হাসপাতালগুলিতে বছরে ৭৫% রোগী ভর্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্রীনগর ড্রাগ ডেডডিকশন সেন্টারের মেডিকেল অফিসার ডাঃ সারা খালিদ বলেছেন, “অল্পবয়সীরা মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছে। অনেকেই মাদকের ভয়ঙ্কর পরিণতির মুখে পড়ে নিজেদের জীবন হারিয়েছে, পরিবারের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের থেকেও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে এখন মাদক সমস্যা। যা নতুন প্রজন্মকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এটি শুধু জম্মু ও কাশ্মীরের নয়, জাতির সঙ্কট,”।
বারামুল্লায় মাদকের ওভার ডোজ প্রাণ কেড়েছে বছর ৩২-এর তরুণের। ছেলের মৃত্যু প্রসঙ্গে বাবা বলেন, “২০১৭ সালে ও একবার পুলিশের হাতে গ্রেফাতার হয়। যখন জেল থেকে ছাড়া পায় আমরা ওর আচরণে ব্যপক পরিবর্তন লক্ষ্য করি। লক্ষ্য করে যে প্রায়ই বাড়ি থেকে টাকা গায়েব হয়ে যায়। একদিন, ছেলের প্যান্টে কিছু গুঁড়োজাতীয় জিনিস দেখে ছেলেকে সতর্ক করেছিলাম। আমরা সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পেরেছিলাম ও ভুল পথ বেছে নিয়েছে। আমরা তাকে এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতেই উনি তাকে রিহ্যাব সেন্টারে পাঠানোর পরামর্শ দেন”।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে কুপওয়ারায় মাদকবিরোধী অভিযানে গড়ে ওঠা বিহ্যাব সেন্টারে যেখান মাত্র ৫ জন রোগী ছিল।এখন সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ২২০। কাশ্মীরে এক গ্রাম হেরোইনের দাম তিন থেকে চার হাজার টাকা। লাদাখে যা ২০ হাজারের বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের একটা বড় অংশের কাছে সন্ধ্যা কাটানোর অন্যতম উপায় হয়ে উঠেছে এই মাদক।
সীমান্তবর্তীগ্রামগুলিঅর্থনৈতিকসুবিধারজন্যলোকজনমাদকব্যবসায়যোগদিচ্ছে
ডিজিপি দিলবাগ সিংয়ের কথায়, ‘সহজে অর্থ উপার্জনের লোভে সীমান্ত এলাকার কিছু লোক মাদক ব্যবসায়ে যোগ দিয়েছেন। নগদের একটি অংশ পাকিস্তানে যায়। এমনকী স্থানীয়ভাবে ক্রিপ্টোকারেন্সিতেও কিছু পেমেন্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে’।এই কাজে জঙ্গি সংগঠন লস্কর, এবং কিছু ক্ষেত্রে জইশও জড়িত বলে প্রমাণ মিলেছে। পুলিশ চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই অভিযান চালাচ্ছে।