কিরঘিজস্থানের আবহাওয়া এখন বড়োই মনোরম। তাপমাত্রা ২১ ডিগ্রি। তবে এমন অনুকূল পরিবেশেও বরফ গলেনি দু'দেশের প্রধানমন্ত্রীদ্বয়ের। ভারত এবং পাকিস্তান। নরেন্দ্র মোদী এবং ইমরান খান বৃহস্পতিবার থেকেই ছিলেন কিরঘিজস্থানের রাজধানী শহর বিশকেকে। দু'জনের দেখা হয়েছিল সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন সামিটের মঞ্চে। বিশকেকের বিলাসবহুল রেস্তোরাঁয় দেখা হলেও কথা হল না দুই রাষ্ট্রপ্রধানের।
সূত্রের খবর বলছে, নৈশভোজের পর করসার্টেও সামনের সারিতেই বসেছিলেন মোদী এবং ইমরান দুজনেই। শুধু তাঁদের মাঝে ছিলেন অন্তত সাত দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। দু'দিন মিলিয়ে প্রায় ৯ ঘণ্টা একই ঘরে ছিলেন ওঁরা দুজন। ওটুকুই। মুহূর্তের কুশল বিনিময় ছাড়া আর কিছু কথাই হল না মোদী-ইমরানের।
পাক বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ কুরেশিকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন, "কতক্ষণ কথা হয়েছিল দু দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে"? এর জবাবে কুরেশির উত্তর, "আমার কাছে স্টপওয়াচ ছিল না"। কুরেশিই প্রথম জানান দুজনের মধ্যে করমর্দন, আর কুশল বিনিময়টুকু হয়েছে।
আরও পড়ুন, ডাক্তারদের আন্দোলনের পাশে এবার পাকিস্তান
সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন সামিটের মঞ্চেই চিনা প্রধানমন্ত্রী জি শিংপিং-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়। অন্যদিকে প্রতিবেশী পাকিস্তান নিয়ে মোদী বলেন দু'দেশের মধ্যে আলোচনা করতে গেলে পাকিস্তান কে সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। কিন্তু ইসলামাবাদের তরফে দিল্লি এখনও সেরকম আশ্বাস পায়নি বলেই জানিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী।
সূত্রের খবর বলছে, বিশকেকে উপস্থিত বাকি রাষ্ট্রনেতারা প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসে রাত কাটালেও নরেন্দ্র মোদী উঠেছিলেন ওরিয়ন হোটেলে (প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে)। আবার সমস্ত রাষ্ট্রনেতাদের তোলা ছবিতেও ভারত-পাক প্রধানমন্ত্রী নিজেদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রেখেছেন, মাঝে অন্তত চারজন রাষ্ট্রপ্রধান।
বছর দুয়েক আগেও দু’ দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের সমীকরণটা ছিল অন্যরকম। জুন’২০১৭ তে তৎকালীন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে এসসিও সামিট মঞ্চে দেখা হয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর। কুশল বিনিময় হয়েছিল দু’জনের মধ্যে। শরিফের সুস্বাস্থ্য কামনা করে পরিবারের খবরাখবরও নিয়েছিলেন মোদী।
আরও পড়ুন, মোদীর আমন্ত্রণে এবছর ভারতে আসছেন শি জিনপিং
বিশকেকের উদ্দেশে রওনা হবার আগে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান রুশ সংবাদসংস্থা স্পুটনিককে বলেন ভারত-পাক সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। এত খারাপ আগে কখনও হয়নি। তবে আমরা আশা করছি, ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দু’দেশের সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করবেন এবং কাশ্মীর ইস্যু সমাধানের পথে এগোবেন।
মোদীর সঙ্গে আলোচনায় তিনি প্রস্তুত কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে খান বলেন, “সেই ইঙ্গিত আমরা ভারতের নতুন লোকসভা গঠন হওয়ার পরপরই দিয়েছি। ভারতের লোকসভা নির্বাচনের আগেই আমরা সেই চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত পারিনি। মোদীর দল দেশের মানুষের মধ্যে ইসলাম বিরোধী মনোভাব জাগিয়ে তুলেছিল”।
Read the full story in English