Advertisment

ভূমিধস! শ’য়ে শ’য়ে বাড়িতে ফাটল, প্রবল ঠান্ডায় আতঙ্কে দিশেহারা মানুষজন,নেপথ্যে কী কারণ?

অনেক জায়গায় ফাটল এক ফুট পর্যন্ত চওড়া । ঘটনার পর তৎপর প্রশাসনও।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Joshimath, Joshimath news, Joshimath cracks, Joshimath land subsidence, Uttarakhand news, Dehradun news, The Indian express, Uttarakhand government, Chief Minister Pushkar Singh Dhami"

'গেটওয়ে অফ হিমালয়' নামে পরিচিত জোশীমঠের একাধিক এলাকায় ফাটল

প্রকৃতি রুষ্ট। উত্তরাখণ্ডে বসে গেল মাটি, ফাটল প্রায় ৬০০ বাড়িতে। জোশীমঠের ভূমিধস! আবারও বাস্তুচ্যুতির ক্ষত সামনে উঠে এসেছে। গত এক দশকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ১৪৭৭ পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হলেও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের। রাজ্যে এমন ৪০০ টিরও বেশি গ্রাম রয়েছে, যেগুলি দুর্যোগপ্রবণ বলে পরিচিত। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ গ্রামের বাসিন্দাদের অবিলম্বে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করা প্রয়োজন।

Advertisment

গত বেশ কয়েক বছর ধরে ফাটল দেখা দেয় জোশীমঠে। আবারও বিপদের আভাস সংকেত দিচ্ছে প্রকৃতি। আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন, রাস্তাঘাট, মাঠে ফাটল দেখা দেওয়ায় এলাকাবাসী উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে যে অবিলম্বে ৯৩টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সাময়িকভাবে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

জোরালো হচ্ছে পুনর্বাসনের দাবিও। দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১২ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে, রুদ্রপ্রয়াগ, চামোলি, বাগেশ্বর, পিথোরাগড়, উত্তরকাশী, তেহরি জেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুসারে এখনও পর্যন্ত ১৪৭৭ টি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

বিপর্যয়ের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ৪০০ টিরও বেশি গ্রামের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও আবেদন জানানো হয়েছে। এমনিতেই ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা বলে পরিচিত।পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে রাস্তাঘাট, বেআইনি ভাবে পাহাড়ের ঢাল বরাবর বনভুমি কেটে হেটেল ব্যবসার রমরমা, সারা বছর মানুষের ঢল। এর ফলেই কী রুষ্ট প্রকৃতি উঠেছে প্রশ্ন। শয়ে শয়ে বাড়িতে ফাটল দেখা দিতেই প্রশ্নের মুখে সরকার।

উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে ভূমিধসের কারণে পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হতে শুরু করেছে। ভূমিধসে তলিয়ে গেছে এলাকার সবকটি ওয়ার্ড। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে, পিএমও ক্রমাগত বিষয়টির ওপর কড়া নজর রেখে চলেছে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় শুক্রবার সন্ধ্যায় উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক করেন। বিপর্যয় মোকাবিলা, সেচ, স্বরাষ্ট্র দফতরের আধিকারিক ছাড়াও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং জেলা প্রশাসনের একাধিক আধিকারিক এই বৈঠকে অংশ নেন।

স্থানীয়দের বিক্ষোভের পর, উত্তরাখণ্ড সরকার বৃহস্পতিবার পরিবারগুলিকে স্থানান্তরের কাজ শুরু করেছে, ফাটলের ফলে শয়ে শয়ে বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফে দ্রুত উদ্ধার ও ত্রাণকার্য পরিচালনার কাজ চলছে। ভূমিধসের কারণে যাদের ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। প্রায় ৭০টি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

'গেটওয়ে অফ হিমালয়' নামে পরিচিত জোশীমঠের একাধিক এলাকায় ফাটল।গত ডিসেম্বর এই অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। শহর এলাকায় ফাটলের পাশাপাশি কৃষি জমিও ভূমিধসের কবলে পড়েছে। অনেক জায়গায় ফাটল এক ফুট পর্যন্ত চওড়া । ঘটনার পর তৎপর প্রশাসনও। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি যৌথ দল গঠন করা হয়। দলটি দুদিন ধরে শহরের ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘর ঘুরে দেখেন।জোশীমঠ শহরে প্রায় দুই হাজার বাড়ি রয়েছে। রবিবার পর্যন্ত ভূমিধসের কারণে ৫৮১টি বাড়িতে ফাটল ধরেছে। সোমবার রাতে হঠাৎ করে অনেক বাড়িতে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিলে ধারাবাহিক ভূমিধসের ঘটনা সামনে আসে। এরপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা শহরে। বদ্রীনাথ হাইওয়েতেও দেখা দিয়েছে ঘন ফাটল।

ভূমিধসের ঘটনায় শুক্রবার রাজ্যের তরফে একটি উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। এর আগে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যও সামনে এসেছে। তিনি বলেন, "জোশীমঠে ভূমিধসের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিপ্তে আমরা পূর্ণ সচেতনতার সঙ্গে কাজ করছি, এবং আমরা একটি উচ্চ-পর্যায়ের আলোচনা সভার আয়োজন করে এই সমস্যা সম্পর্কিত বিষয়গুলির উপর আলোকপাত করে এটি সমাধানের জন্য কাজ করছি৷ আমি নিজে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখব।"  গাড়ওয়াল কমিশনার সুশীল কুমার নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে অবিলম্বে জোশীমঠে NDRF টিম মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছেন।

Uttarakhand Pushkar Singh Dhami Landslide
Advertisment