মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বনাম মুম্বাইয়ের প্রাক্তন সিপির দ্বন্দ্ব এবার আদালত পর্যন্ত গড়াল। এই দুই জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চেয়ে বম্বে হাইকোর্টে দাখিল হল পিটিশন। আইনজীবী জয়শ্রী লক্ষ্মী পাটিল এই পিটিশন দাখিল করেছেন। তাঁর আবেদন, ‘মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, মুম্বাইয়ের প্রাক্তন সিপি পরমবীর সিংইয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত করুক কোনও স্বাধীন সংস্থা। সিবিআই কিংবা অন্য কোনও নিরপেক্ষ তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্তভার দেওয়া হোক।‘ ইতিমধ্যে পরমবীর সিংয়ের আনা ‘তোলাবাজির’ অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে সংসদে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন বিজেপি সাংসদরা।
এই মামলায় স্বতঃপ্রনোদিত হয়ে মালাবার হিলস থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন জয়শ্রী পাটিল। সেই অভিযোগকে এফআইআর হিসেবে ধরে তদন্তে নামুক পুলিশ। হাইকোর্টের কাছে এই আবেদনও করেছেন ওই আইনজীবী।
এদিকে, মহারাষ্ট্র সরকারের বদলির নির্দেশ রদের দাবি জানিয়ে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিং। হোমগার্ড বিভাগে তার স্থানান্তরের নির্দেশকে ‘বিধিবর্হিভুত’ এবং ‘বেআইনী’ বলে দাবি করেছেন তিনি। মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্টমন্ত্রী অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ করেছেন পরমবীর সিং। ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্তেরও আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
গত সপ্তাহের বুধবার পুলিশ কমিশনার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় পরমবীর সিংকে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয় হেমন্ত নাগরালেকে। মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি উদ্ধারের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের জন্যই এই বদলি করা হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ।
এরপরই শনিবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে চিঠি লিখে তিনি বলেন, ‘অম্বানীকাণ্ডে ধৃত সচিন ভাজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ প্রতিমাসে ১০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিলেন। এরজন্য তিনি বলেছিলেন যে মুম্বইয়ের ১৭ হাজারেরও বেশি বার, রেস্তরাঁ থেকে যদি ৩-৪ লক্ষ টাকা করে আদায় করা হয়, তবে মাসে ৪০-৫০ কোটি টাকা আদায় করা যাবে। বাকি টাকার ব্যবস্থা অন্যান্য জায়গা থেকে আদায় করা যাবে।’ এমনকী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে বহু তদন্তে হস্তক্ষেপেরও অভিযোগও করেন পরমবীর সিং।
আপাতত মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের দাবি ঘিরে অস্বস্তিতে মহারাষ্ট্রের শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট সরকার। কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে সরকারের স্থায়ীত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। যদিও টালমাটাল সরকারের সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছে জোট সরকারের নেতারা।