যে সকল মানুষ আধার কার্ডের সঙ্গে আইডি লিঙ্ক করতে চান না তাদের জন্য সামনে এসেছে নয়া তথ্য। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে নির্বাচন কমিশন। এই বিষয়ে আইন মন্ত্রক জানিয়েছে 'আইন পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন নেই, নির্বাচন কমিশনের ব্যাখ্যাই যথেষ্ট'।
আপনি কি আপনার ভোটার আইডি কার্ড আধারের সঙ্গে লিঙ্ক করতে চান না? অনেকের মনে এও প্রশ্ন আছে ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধারের লিঙ্ক করাটা কি বাধ্যতামূলক? অনেকের আবার ধারণা আধারের সঙ্গে ভোটার আইডি লিঙ্ক না করলে ভোট দিতে পারবেন না। আধার কার্ড এবং ভোটার আইডি কার্ড স্বেচ্ছায় লিঙ্ক করতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। আপনি যদি ভোটার আইডির সঙ্গে আধার লিঙ্ক করতে চান তবে এর জন্য আপনাকে ফর্ম ৬বি পূরণ করতে হবে। এর সময়সীমা মার্চ ২০২৪ এর শেষ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার কয়েকদিন আগে ভোটার আইডির সঙ্গে আধার কার্ড লিঙ্ক করার জন্য একটি পরামর্শ জারি করেছিল। এরপরই এ নিয়ে আপত্তি তোলে বিরোধীরা। যার পর সরকার বলেছিল যে যারা ইচ্ছুক তারা আধারের সঙ্গে ভোটার আইডি লিঙ্ক করতে পারেন। ভোটার আইডির সাথে আধার লিঙ্ক করা প্রত্যেকের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।
ভারতের নির্বাচন কমিশন জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫০ এবং ভোটার তালিকাভুক্তির ফর্মগুলিতে সংশোধনী প্রস্তাব করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন করেছে কমিশন। বিধানটি একজন ভোটারকে তার ভোটার কার্ডের সঙ্গে আধার নম্বর না দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণ প্রদান করতে বাধ্য করে। সেই অংশ মুছে ফেলার জন্য আবেদন করা হয়েছে কমিশনের তরফে। যদিও, প্রস্তাবটি কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রক প্রত্যাখ্যান করেছে। যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট RP অ্যাক্ট, ১৯৫০ সংশোধন করার জন্য কোনও নির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়নি ৷
যদি আপনার ভোটার আইডি আধারের সঙ্গে যুক্ত নাও থাকে তাহলে ভোটার তালিকা থেকে আপনার নাম কখনই মুছে ফেলা হবে না। আধারের সঙ্গে ভোটার আইডি লিঙ্ক করার শেষ তারিখ ৩১ মার্চ। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে, তৎকালীন আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু সংসদে স্পষ্ট করেছিলেন যে যে সমস্ত ভোটারদের ভোটার আইডি আধারের সঙ্গে যুক্ত না থাকলেও তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে না এবং ভোটার আইডির সাথে আধার লিঙ্ক করা ব্যক্তিগত পছন্দ।
আসলে, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে, সারা দেশে ভোটার আইডিকে আধার কার্ডের সাথে লিঙ্ক করার অভিযান চালাচ্ছে । সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে একটি রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণকের মধ্যে এই মতবিনিময় হয়। যেখানে আবেদনকারী যুক্তি দিয়েছিলেন যে ফর্ম ৬ (নতুন ভোটার তালিকাভুক্তির জন্য), ফর্ম ৬বি (নথিভুক্ত ভোটারদের আধার নম্বর সংগ্রহের জন্য) এবং অন্যান্য সম্পর্কিত ফর্মগুলিতে ভোটারদের শুধুমাত্র দুটি বিকল্প দেওয়া হয়েছিল। প্রথম বিকল্পটি ছিল "আধার নম্বর প্রদান করা এবং দ্বিতীয়টি আমি আমার আধার জমা দিতে পারছি না কারণ আমার কাছে আধার নেই।"
অর্থাৎ, দ্বিতীয় বিকল্পটি বেছে নেওয়ার অর্থ হল আপনি আপনার আধার কার্ড নম্বর দিতে চান না, তাই আপনাকে মিথ্যা বলতে হবে যে আপনার কাছে আধার কার্ড নেই। যা RP Act, 1950 এর অধীনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যদিও নির্বাচন কমিশন গত বছর সুপ্রিম কোর্টকে বলেছিল যে ভোটার তালিকার সঙ্গে লিঙ্ক করার জন্য আধার নম্বর দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। নির্বাচন কমিশন আইন মন্ত্রককে আধার বিবরণ সম্পর্কিত বিকল্পটি সংশোধন করতে বলেছে যাতে ভোটাররা তাদের আধার নম্বর প্রদান করতে বাধ্য না হয়।