লিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধা ওয়াকারকে নৃশংস খুনের দায়ে জেলবন্দি আফতাব পুনাওয়ালার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে দিল্লি পুলিশ। ৬,৬০০ পাতার সেই চার্জশিটের ছত্রে ছত্রে রয়েছে নৃশংসতার দৃষ্টান্ত। কী ভাবে পাশবিক হত্যাকাণ্ড সবার অজান্তে ঘটিয়েছে আফতাব তা জানলে শিউরে উঠতে হয়।
প্রথমে পুলিশকে বিভ্রান্ত করে আফতাব, জানায় ১৮ মে ২০২২ সালে খুনের পর পাথর পেষার মেশিন দিয়ে তিনি শ্রদ্ধার শরীরের হাড় গুঁড়ো করেছিল। পরে জেরায় চাপ দিতেই আফতাব পুলিশকে জানায়, শ্রদ্ধার দেহ ১৭ টুকরো করে কয়েক মাস ধরে দেহাংশ ফেলতে শুরু করে সে।
যদিও আফতাবের আইনজীবী দিল্লি পুলিশের চার্জশিটে উল্লেখিত অভিযোগ নস্যাৎ করেছে। পুলিশ আফতাবের খাবার ডেলিভারি বিল দেখে জানতে পারে, খুনের দিন দুপুরে দুজনের জন্য খাবার অর্ডার করলেও রাতে শুধু একটা চিকেন রোল অর্ডার করেছিল সে। পুলিশকে জেরায় জানায়, যেহেতু শ্রদ্ধা নিহত তাই একজনের জন্য খাবার আনায় সে।
চার্জশিটে আরও উল্লেখ, ১৯-২০ এবং ২১ মে ২০ লিটারের ১৬টা জলের বোতল কেনা একেবারেই অদ্ভূত ছিল। কারণ শ্রদ্ধার দেহ টুকরো করার পর প্রচুর রক্ত ধুতে সেই জল ব্যবহার করে আফতাব। তার পর ১১ কেজি শুষ্ক বরফ কেনে আফতাব। সেই শুষ্ক বরফ দিয়ে শ্রদ্ধার দেহাংশ তাজা রাখত আফতাব। পুলিশের মতে, আফতাব শ্রদ্ধার সঙ্গে তুমুল ঝগড়া করে ১৮ মে। কারণ শ্রদ্ধা ডেটিং অ্যাপে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর দেখা করতে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন একচোখ হারিয়েও ভেঙে পড়েননি, যাঁরা পাশে থেকেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ দিচ্ছেন রুশদি
আফতাব পুলিশকে জানায়, খুনের পর হার্ডওয়্যারের দোকান থেকে একটা আয়রন স' তিনটে বড় ব্লেড, একটা হাতুড়ি এবং একটি প্লাস্টিক ক্লিপ কেনে। কব্জি থেকে পাঞ্জা কাটে সেই স' দিয়ে তার পর পলিথিনের ব্যাগে ভরে রাখে। আফতাব বলেছে, সে ছত্তরপুর পাহাড়ি জঙ্গলে শ্রদ্ধার একটা উরু ফেলে, পরের চার-পাঁচ দিন ধরে ১৭টা টুকরো (একটা হাতের তিন টুকরো, একটা পায়ের তিন টুকরো, মাথা, কোমরের অংশ এবং বুড়ো আঙুল) জঙ্গলে ফেলে আসত। খুনের পরের দিন ফ্রিজ কিনেছিল সে। তাতেই শ্রদ্ধার দেহের টুকুরোগুলো রাখত।