ধাপে ধাপে লকডাউন তোলার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে সোমবার বৈঠক করেছেন প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ নিয়ে পঞ্চমবার তিনি ভার্চুয়াল বৈঠক করলেন। এদিনের মিটিং প্রত্যাশিতভাবেই ছিল দীর্ঘ। প্রায় ৬ ঘণ্টা ব্যাপী এই বৈঠকে অনেকটা সময় নেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশকুমার। অটলবিহারী বাজপেয়ীর সময়ে রেলমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা নীতীশ আংশিকভাবে প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালানোর ব্যাপারে তাঁর সঙ্গে আলোচনা না করায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
কোন রাজ্য কী চাইল, এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক
# মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, তেলেঙ্গানা ও পশ্চিমবঙ্গ চেয়েছে লকডাউন বাড়ানো হোক।
# ছত্তিসগড়, কর্নাটক, অন্ধ্র, বিহার এবং তামিলনাড়ু রেল বা বিমানে আন্তঃরাজ্য চলাচলে আপত্তি জানিয়েছে।
# পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং রাজস্থান চেয়েছে কোন কোন জেলা রেড, অরেঞ্জ বা গ্রিন জোনের আওতায় পড়বে, তা স্থির করার দায়িত্ব দেওয়া হোক তাদের উপরেই।
সমস্ত রাজ্যই অবশ্য আর্থিক কাজকর্ম শুরু করার জন্য লকডাউন আরও শিথিল করার পক্ষে বলেছে। বৈঠকে উপস্থিত এক মন্ত্রীর কথায় লকডাউন বাড়ানোর ব্যাপারে সকলেই ইঁদুর বিড়াল খেলেছেন। কোনও নির্দিষ্ট প্রস্তাব এ ব্যাপারে আসেনি বলে জানিয়েছেন ওই মন্ত্রী।
আরও পড়ুন, তামিলনাড়ুর হাল খারাপ হচ্ছে
* পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু থেকেই রণমূর্তি ধারণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন কেন্দ্র রাজনীতি করছে এবং এককভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। শুরুতেই তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিকে আক্রমণ শানান। বৈঠকে তিনি বলেন, অমিত সাহেব, রাজনীতি করবেন না। তিনি আরও অভিযোগ করেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা রাজ্যের আধিকারিকদের সঙ্গে সরকারকে না জানিয়েই ভিডিও কনফারেন্স করছেন।
* আরোগ্য সেতু অ্যাপ গোপনীয়তায় হানি ঘটাচ্ছে বলে তোলপাড় হওয়ার পর সরকার অ্যাপ ব্যবহারকারীদের ডেটা প্রসেসিংয়ের ব্যাপারে নতুন গাইডলাইন তৈরি করেছে। নতুন আইনে বলা হয়েছে কোনওভাবেই অ্যাপ ব্যবহারকারীর ডেটা ১৮০ দিনের বেশি সংরক্ষিত রাখা যাবে না এবং প্রত্যেক অ্যাপ ব্যবহারকারী ৩০ দিন পর তাঁর সম্পর্কিত ডেটা ৩০ দিনের মধ্যে ডিলিট করে দেওয়ার অনুরোধ জানাতে পারেন। এর আগে কোভিড রোগী সুস্থ হওয়ার ৬০ দিন পর পর্যন্ত ওই তথ্য রেকর্ড রাখার নিয়ম ছিল, অন্যদের ক্ষেত্রে এই সময়সীমা ছিল ৪৫ দিন।
* এরই মধ্যে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা বিলের প্রথম খশড়া কমিটির প্রধানের কাজ যিনি পরিচালনা করেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের সেই প্রাক্তন বিচারপতি বি এন শ্রীকৃষ্ণ সরকারের আরোগ্য সেতু ব্যবহার বাধ্যতামূলক করাকে সম্পূর্ণ বেআইনি বলে মত প্রকাশ করেছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে প্রাক্তন বিচারপতি বলেছেন, "কোন আইনের সুবাদে সকলকে এটা বাধ্যতামূলক করতে বলা হচ্ছে? এখনও পর্যন্ত এমন কোনও আইন নেই।"
*রাজ্য সভার সাংসদ রাজীব গৌড়াও সরকারের কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপ নিয়ে সাতটি প্রশ্ন তোলেন।
* এই পরিস্থিতিতে লকডাউন সম্পর্কিত বিধিনিষেধ যদি সম্পূর্ণ শিথিলও করে দেওয়া হয় তাহলে মাস্ক ও সামাজিক দূরত্ব বিধি করোনাভাইরাস নির্মূল হওয়া পর্যন্ত লাগু থাকবে। আপনি যদি মাস্ক পরতে অস্বস্তি বোধ করেন এবং হুয়ের কাদের মাস্ক পরা উচিত সম্পর্কিত বক্তব্যে স্থির থাকেন, তাহলে আরেকবার ভেবে দেখতে পারেন। একাধিক গবেষণা থেকে দেখা যাচ্ছে মাস্ক, এমনকি বাড়িতে তৈরি মাস্কও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, কারণ সংক্রমণ আটকাতে এর ভূমিকা অতীব কার্যকর।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন