দুর্ঘটনা যেন ভারতীয় রেলের পিছু ছাড়ছে না। বুধবার বিকেলে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের চাকা গড়ানোর পর বিকল হয়ে যায় ট্রেনের এসি। বিকেল ৩ টে ২০ নাগাদ চেন্নাইগামী এই ট্রেন কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর নতুন করা যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু, তার মধ্যেই এসি বিকল হয়ে যাওয়া ক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন যাত্রীরা। শেষ পর্যন্ত সাঁতরাগাছি স্টেশনে ট্রেন দাঁড় করিয়ে এসি মেরামত করা হয়।
বুধবার বিকেলেই আবার হাওড়ায় বামনগাছি ব্রিজের নীচে দাঁড়িয়ে যায় কোল্ডফিল্ড এক্সপ্রেস। যাত্রীদের অভিযোগ, আচমকা ট্রেনটি বড় ঝাঁকুনি দেয়। ট্রেনে ফ্ল্যাশ হয়। আর, তারপরই দাঁড়িয়ে পড়ে ট্রেনটি। পরে জানা যায়, ট্রেনের ইঞ্জিনের প্যান্টোগ্রাফ ভেঙে পড়েছে। তাতে ওভারহেডের তার বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। বিকেল ৫টা ৩২ থেকে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেনটি। পরে মেরামতির পর ট্রেনটির চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বুধবার দুপুরে আবার ওড়িশার জাজপুর স্টেশনে ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যু হয় চার শ্রমিকের। ঝাড়খণ্ডের বোকারোয় আবার নয়াদিল্লি-ভুবনেশ্বর রাজধানী এক্সপ্রেস যাওয়ার সময় একটি ট্রাক্টর রেলপথ এবং রেলগেটের মধ্যে আটকে যায়। সন্ধ্যায় সাঁথলডিহ রেল ক্রশিংয়ে ঘটনাটি ঘটে। এর জেরে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। শেষ অবধি রেলরক্ষীরা ট্রাক্টরটি বাজেয়াপ্ত করেন। গেটম্যানকে সাসপেন্ড করা হয়। এফআইআর দায়ের হয়। প্রায় ৪৫ মিনিট ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়।
মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে আবার রেলের পণ্যবাহী ট্রেনের দুটি তেলের ট্যাংকার লাইনচ্যুত হয়। পশ্চিম মধ্য রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রাহুল শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে তেলের ট্যাংকারগুলো যখন ভিটনি রেলওয়ে স্টেশনের কাছে একটি তেল ডিপোর সাইডিং লাইনে ছিল, তখনই লাইনচ্যুত হয়। বুধবার দিনের আলো ফোটার পর ট্যাংকারটি লাইনে ওঠানোর কাজ শুরু হয়।
আরও পড়ুন- শতাধিক মৃতদেহ এখনও পড়েই, প্রকৃত দাবিদারের সন্ধানে শুরু ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ
গত শুক্রবারই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছে ওড়িশার বালেশ্বর। সেই ঘটনায় অন্ততপক্ষে ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১,০০০ জন। এখনও বহু মৃতদেহকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তার মধ্যেই একদিনেই এতগুলো বিপত্তি ভারতীয় রেলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।