টুলকিট-কাণ্ডে ধৃত দিশা রবিকে জামিন দিল দিল্লির একটি আদালত। দেশদ্রোহিতা-সহ একাধিক ধারায় অভিযুক্ত হিসেবে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এই তরুণীকে গ্রেফতার করেছিল দিল্লি পুলিশ। এই মামলায় আরও দুই অভিযুক্ত। যারা গ্রেফতারি এড়াতে আগাম জামিনে আছেন। থুনবার্গের ফ্রাই ডে ফর ফিউচার সংস্থায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন দিশা। দিল্লি পুলিশের অভিযোগ, ‘যে টুলকিট শেয়ার করে কৃষক আন্দোলনের পক্ষে ট্যুইট করেছিলেন থুনবার্গ, সেটা দিশার তৈরি। খলিস্তান-পন্থী সংগঠন পোয়েটিক জাস্টিস ফর্মুলেশনের সঙ্গে যোগসাজশে সেই টুলকিট তৈরি করা হয়েছিল। অভিযুক্তের উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বের কাছে ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা।‘ পুলিশের আরও অভিযোগ, ‘থুনবার্গকে খানিকটা বাধ্য করা হয়েছিল কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে ট্যুইট করতে।‘
এদিকে সোমবার পর্যন্ত জেল হেফাজতে ছিলেন দিশা রবি। সেদিন তাঁকে আদালতে তোলা হলে একদিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন বিচারক পঙ্কজ শর্মা। মঙ্গলবার ফের তাঁকে দিল্লির সিজেএম আদালতে তোলা হলে তাঁর জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। এদিন জামিন দিতে গিয়ে বিচারক বলেছেন, ‘দিশার বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো এবং দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুন্ন করার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি তাঁর মানবাধিকার রক্ষার তাগিদও রয়েছে। তাই অভিযোগ ও মানবাধিকার রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য রাখা উচিত। এমনকি, ঠিক কী হয়েছিল সেটা জানতে অন্য অভিযুক্তদের সঙ্গে দিশার মুখোমুখি বসা জরুরি ছিল। স্বচ্ছ তদন্তের স্বার্থে এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।‘ এমনকি এই মামলায় দিল্লি পুলিশের তদন্তকে ত্রুটিপূর্ণ বলেও এদিন সরব হয়েছিলেন বিচারক। অপরদিকে, এদিন সকালে দিল্লি পুলিশের সাইবার সেলের অফিসাররা নিকিতা জ্যাকব আর শান্তনু মুলুকের সঙ্গে দিশাকে জেরা করেছেন।
এদিকে, ট্যুইটের পর পরিবেশকর্মী কিশোরী গ্রেটা থুনবার্গের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছিল দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল। কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে করা তাঁর ট্যুইটের বিরুদ্ধে এই এফআইআর দায়ের হয়েছে। যদিও এই এফআইআরের পরেও নিজের অবস্থান থেকে একচুল সরতে রাজি ছিলেন না সুইডিশ ওই সমাজকর্মী। ফের তিনি ট্যুইটে লেখেন, ‘আমি এখনও কৃষকদের পাশে, তাঁদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের সমর্থনে। কোনও প্রকার ঘৃণা, হুমকি, মানবাধিকার লঙ্ঘন এই অবস্থানের বদল ঘটাবে না।”
মার্কিন পপ তারকা রিহানাও ভারতের কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে ট্যুইটারে সুর চড়িয়েছিলেন। যদিও রিহানা-গ্রেটার সমালোচনায় সরব হয়ে তীব্র ভাষায় এই ট্যুইটের বিরোধিতা করে বিদেশ মন্ত্রক। এরপরেই ভারতের সার্বভৌমত্বের সঙ্গে আপস না করার বার্তা দিয়ে ট্যুইটে সরব হয় বলিউড থেকে ক্রীড়াজগৎ। সেই তালিকায় নাম লেখান অক্ষয় কুমার, অজয় দেবগণ, লতা মঙ্গেশকর, শচিন তেণ্ডুলকর-সহ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, অনিল কুম্বলে, সাইনা নেহওয়াল।