পারকিনশন, করোনা-সহ একাধিক রোগে জর্জরিত হয়ে মৃত্যু সমাজকর্মী স্ট্যান স্বামীর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। ভীমা কোরেগাঁও মামলায় ইউএপিএ আইনে ধৃত স্ট্যানের শারীরিক অবস্থা জেলবন্দি অবস্থায় ক্রমশ অবনতি হয়েছিল। খানিকটা পরিবারের জোরাজুরিতে ২৮ মে আদালতের নির্দেশে মুম্বাইয়ের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হয়েছিলেন তিনি। সেই হাসপাতালেই ৪ জুলাই অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়। এদিন বেলার দিকে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
অধিকার রক্ষা-সহ বন্দিমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন স্ট্যান স্বামী। ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর এনআইএ তাঁকে ভীমা কোরেগাঁও মামলায় আটক করে। দেশ-বিরোধী আইনে মামলা রুজু হয় তাঁর বিরুদ্ধে। স্ট্যানের মুক্তি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠান সমাজকর্মীরা। সেই চিঠিতে সই করেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর-সহ সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরিও। এদিনই তাঁর জামিনে চেয়ে জরুরিভিত্তিতে বম্বে হাইকোর্টে আবেদন করেন স্ট্যানের আইনজীবী।
সেই আবেদনের শুনানিতে ৬ জুলাই পর্যন্ত রায়দান পিছিয়ে দেয় হাইকোর্ট। মেডিক্যাল বোর্ডকে মুখবন্ধ খামে তাঁর সাম্প্রতিক চিকিৎসার নথি পাঠাতে নোটিশ পাঠায় আদালত। সেই শুনানি চলাকালীন তাঁর মৃত্যুর খবর আদালতে এসে পৌঁছয়। পারকিন্সন-সহ ফুসফুসে সংক্রমণ এবং কোভিড পরবর্তী জটিলতায় এই মৃত্যু। এমনটাই হাসপাতাল সূত্রে খবর। শনিবার ভোরে তাঁর একবার হার্ট অ্যাটাক হয়। তখন থেকেই তাঁকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু সোমবার বেলা দেড়টা নাগাদ সব চেষ্টা ব্যর্থ করে প্রয়াত হয়েছেন আদিবাসী আন্দোলনের অন্যতম এই পথিকৃৎ।
জানা গিয়েছে, পারকিন্সন রোগী স্ট্যান জেলে একাধিকবার অসুস্থ হয়েছেন। তাঁর কানের সমস্যাও ছিল। হয়েছিল অস্ত্রোপচার। চিকিৎসাজনিত কারণে একাধিকবার তাঁর জামিনের আবেদন করা হলেও, এনআইএ সেই আবেদনের বিরোধিতা করে আদালতে। ফলে আটকে যায় জামিন। ১৮ মে মুম্বাই হাইকোর্টে বলা হয়েছিল, স্ট্যান স্বামী গুরুতর অসুস্থ। আদালতের নির্দেশে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। মে মাসেই করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। এরপর করোনা থেকে সেরে উঠলেও জুন মাসের শেষদিকে ক্রমশ তাঁর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। আর ৫ জুলাই মৃত্যু হয় তাঁর।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন