Gautam Adani Bribery Case: নিউইয়র্কের একটি আদালত ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানি এবং তার ভাইপো সাগর আদানির বিরুদ্ধে ঘুষ ও প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। মার্কিন প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেছেন যে আদানি গ্রুপ সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের বরাত পেতে ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের ২৬৫ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ২০২৯ কোটি টাকা) ঘুষ দিয়েছে।
ঘুষের মামলায় গৌতম আদানি এবং আরও সাতজনের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেওয়ানি ও ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। নিউইয়র্কের এক বিশিষ্ট আইনজীবী বলেছেন যে মামলার জেরে অস্বস্তিতে পড়তে হতে পারে শিল্পপতিকে। এমনকী এর ফলে আদানি সহ সাতজনকে প্রত্যর্পণের চেষ্টা করতে পারে আমেরিকা। মার্কিন বিচার বিভাগ গৌতম আদানি এবং তার ভাইপো সাগর আদানি সহ আরও সাতজনের বিরুদ্ধে অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ এনেছে। এ বিষয়ে কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
যদিও, আদানি গ্রুপ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে, বলেছে যে মার্কিন প্রসিকিউটরদের আনা অভিযোগগুলি 'ভিত্তিহীন' এবং গোষ্ঠী 'সমস্ত আইন মেনে চলে', গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর এখন যদি সেই দেশের সঙ্গে আমেরিকার প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকে, যেমন ভারতের আছে, তাহলে সার্বভৌম দেশগুলির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুসারে, দেশটিকে অবশ্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ তাকে হস্তান্তর করতে হবে। অবশ্যই তাকে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।”
আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে আমেরিকান ব্যাঙ্ক ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ঘুষের তথ্য গোপন করার অভিযোগ রয়েছে। আদানি ঘুষের মামলা কি ভারত-মার্কিন সম্পর্ক নষ্ট হবে? হোয়াইট হাউস এখন বিষয়টি নিয়ে নীরবতা ভেঙেছে। রিপোর্ট অনুসারে আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে হোয়াইট হাউস অবগত। হোয়াইট হাউসের তরফে দাবি করা হয়েছে, অন্যান্য সমস্যার মতো ভারত ও আমেরিকা এই বিষয়টিও সমাধান করবে। হোয়াইট হাউস আস্থা প্রকাশ করেছে যে এই বিষয়টি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে প্রভাবিত করবে না।
ভারতের ভর্ৎসনায় সুর বদল, 'প্রমাণ নেই', জানিয়ে দিল কানাডা
মার্কিন কৌঁসুলিরা দাবি করেছেন যে এই সত্যটি মার্কিন ব্যাঙ্ক এবং বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে লুকানো ছিল যাদের কাছ থেকে আদানি গ্রুপ সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল। আদানি গ্রুপ ২০ বছরে 2 বিলিয়ন ডলারের বেশি মুনাফা করবে বলে আশা করে। ২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ঘুষ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। আদানি গ্রুপ এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বলেছে যে তারা আইনগতভাবে বিষয়টি মোকাবেলা করবে।
নিউইয়র্কের একটি আদালতে দাবি করেছে যে প্রবীণ ব্যবসায়ী গৌতম আদানি এবং অন্যান্য সহযোগীরা তাদের নিজেদের সুবিধার জন্য বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। এর পাশাপাশি অভিযুক্তরা কোটি কোটি টাকার চুক্তি পাওয়ার জন্য ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তবে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তাকে নির্দোষ বলে গণ্য করা হবে।
ইন্দো-মার্কিন আইনজীবী রবি বাত্রা পিটিআই-কে বলেছেন, "আদানি এবং অন্য সাত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার ক্ষমতা মার্কিন অ্যাটর্নি ব্রায়ান পিসের রয়েছে৷ এর অর্থ এই যে এই অভিযুক্তরা যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য কোনও দেশে থাকেন, তাহলে সেই দেশটিকেও আমেরিকার আইন অনুযায়ী আমেরিকার কাছে হস্তান্তর করতে হবে, যদি সে দেশের সাথে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকে।" আদানিরা ঘুষের টাকার একাংশ আমেরিকার বাজার থেকে সংগ্রহ করেছে বলে অভিযোগ, যা বেআইনি। ফলে দায়ের হয়েছে মামলা।
আদালত আদানি ও তার ভাইপোর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে। তবে এর মানে এই নয় যে আমেরিকান পুলিশ এখন এসে আদানিকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাবে। আদানির কাছে বর্তমানে অনেক উপায় রয়েছে যার মাধ্যমে তিনি গ্রেফতারি এড়াতে পারেন।