প্রাণভয়ে কাশ্মীর ছেড়ে জম্মুতে চলে এসেছেন বহু সংখ্যালঘু সরকারি কর্মী। সরকার জীববনের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তাঁরা কাজে ফিরতে রাজি নন। এতে একদিকে যেমন সরকারি পরিষেবায় টান পড়ছে, তেমনই মুখ পুড়ছে সরকারেরও। তাই কাশ্মীর ছাড়া হিন্দু, শিখ সরকারি কর্মীদের কাজে ফেরাতে কড়া দাওয়াইয়ের পথে প্রশাসন। গত শনিবারই কাশ্মীরের ডিভিশনাল কমিশনার ১০ জেলার ডেপুটি খমিশনারদের উদ্দেশে নির্দেশিকা জারি করেছেন। জানা গিয়েছে সেখানে উল্লেখ, পরিযায়ী শ্রমিকরা (এক্ষেত্রে সংখ্যালঘু সরকারি কর্মী যাঁদের প্রধানমন্ত্রীর প্যাকেজে কাশ্মীরে সরকারি কাজে নিয়োগ করা হয়েছিল) যেন উপত্যাকা না ছাড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে। যদি কেউ অনুপস্থিত থাকে তবে তাঁর বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে হবে।
বেশ কয়েকজন ডেপুটি কমিশনার এই নির্দেশিকার কথা স্বীকারও করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডেপুটি কমিশনার জানিয়েছেন যে, সরকারি নির্দেশিকা হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা, তারপরই তা কার্যকর করা হবে। স্কুলের শিখ অধ্যক্ষা ও এক হিন্দু শিক্ষকের মৃত্যুতে কাশ্মীরে চাকুরিরত সরকারি সংখ্যালধু কর্মীদের মধ্যে প্রবল প্রাণভয়ের সঞ্চার হয়। ফলে ভয়ে তাঁরা উপত্যকা ছেড়ে জম্মুতে ফিরে যান। ডেপুটি কমিশনারদের মতে, ভয়ের কারণ নেই। শিখ ও হিন্দু সরকারি কর্মীরা ফিরে আসুন। প্রশাসন নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নিচ্ছে।
এই নির্দেশিকা সমন্ধে বলেতে গিয়ে প্রাণভয়ে কাশ্মীর থেকে জম্মুতে ফেরৎ সরকারি কর্মী সিদ্ধার্থ রায়না (নাম পরিবর্তীত) জানিয়েছেন, সরকারি কর্মীদের বেশিরভাগই শিক্ষক। এখন এনলাইনে ক্লাস চলছে। ফলে এই নির্দেশিকা জোর করে জারি করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, 'প্রাণ বাঁচাতে হিন্দু, শইখরা জম্মুতে ফিরেছে। নিরাপত্তা বিধাননের বদলে এখন প্রশাসন নির্দেশিকা জারি করছে। এটা ভালো হচ্ছে না।'
জম্মুকে ফেরৎ অন্য এক সরকারি কর্মী বলেন, 'ভাড়া বাড়িতে থাকতে হয়। সেখানে কর্মীদের নিরাপত্তা কীভাবে সুনিশ্চিত করবে সরকার? তা এখনও স্পষ্ট নয়।'
সরকারি সূত্রে খবর, এই সব বিষয় নিয়ে ইতিমধ্যেই কাশ্মীরের ডিসি ও এসপি-দের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কথা হয়েছে জিভিশনাল কমিশনারের সঙ্গেও। নিরাপত্তা পর্যোলেচনা করতে বলা হয়েছে ও সংখ্যালঘু সরকারি কর্মীদের নিরাপত্তাবিধানের সব পদক্ষেপও করতে বলা হয়েছে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গেও আলোচনা করতে বলা হয়েছে পুলিশ সুপারদের। এছাড়াও বলা হয়েছে যে, সংখ্যালঘু সরকারি কর্মীদের চিহ্নিত করা হবে। প্রশাসন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবে। হিন্দু, শিখদের যথাসম্ভব অপেক্ষাকৃত সুরক্ষিত এলাকায় নিয়োগ করা হবে। তবে, কাশ্মীরের ফিরে আসতে হবে তাঁদের, নয়তো পড়তে হবে কড়া শাস্তির মুখে।
আরও পড়ুন- ‘কে দেবে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা?’, প্রাণভয়ে কাশ্মীর ছাড়ছেন হিন্দু পণ্ডিত-শিখ সরকারি কর্মীরা
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন