সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমণে বেজিংয়ের প্রস্তাবেই ভারত-চিন বিশেষ প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনা হয়। গত রবিবার এই ফোনে কথা বলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও চিনা স্টেট কাউন্সিলর তথা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। ওই আলোচনায় উভয় পক্ষ নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি ও স্থীতাবস্থা বজায়ের লক্ষ্যে সেনা সরানোয় সম্মত হয়।
Advertisment
দুই দেশের বিশেষ প্রতিনিধিদের বৈঠকের আগে ভারত-চিনা সেনা ও কূটনৈতিকস্তরে আলোচনা জারি ছিল। কিন্তু, সেগুলি থেকে কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। এদিকে উত্তেজনার পারদও চড়ছিল। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনা-কূটনৈতিক পর্যায়ে বৈঠকের পাশাপাশি দ্রুত দুই দেশের বিশেষ প্রতিনিধিদের আলোচনার প্রস্তাব জানায় চিন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এমনটাই জানতে পেরেছে।
১৫ জুন নিয়ন্ত্রণরেখায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর উত্তেজনা প্রশমণে দুই দেশের সেনা ও কূটনৈতিতস্তরের আলোচনাতেই সমস্যা মিটবে। ভারত এই অবস্থান বজায় রেখেছিল। তবে, বৈঠক থেকে দ্রুত সমাধান সূত্র খুঁজে পেতে বেজিংই বিশেষ প্রতিনিধিস্তরের আলোচনায় জোর দেয়। এরপরই গত ৫ জুলাই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে চিনা স্টেট কাউন্সিলর তথা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-এর ফোনালাপ হয়।
রবিবারের আলোচনার পর চিনা বিদেশমন্ত্রকের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়, সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উভয় পক্ষের (ভারত-চিন) মধ্যে 'খোলামেলা ও বিস্তারিত' আলোচনা হয়েছে। দুই দেশই 'ইতিবাচক সমঝোতায়' পৌঁছেছে।
এর আগে ২০১৮ ও ১৯ সালে ভারত-চিনের বিশেষ প্রতিনিধি পর্যায়ের কথা হয়েছিল। ২০১৯ সালে অজিত দোভাল ও ওয়াং ই-র শেষ কথোপকথনে 'পারস্পরিক খোলামেলা' আলোচনার পক্ষে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। দুই পক্ষই সম্মত হয় এই বিষয়ে যে, সীমান্ত নিয়ে সেনা বা কূটনৈতিকস্তরে আলোচনা জারি থাকবে, কিন্তু তাতে চূডা়ন্ত সম্মতি জানাবেন বিশেষ প্রতিনিধিরাই।
গত ৬, ২৩ ও ৩০ জুন ইন্দো-চিন সেনা বৈঠকে বারতের হয়ে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ১৪ কর্পস কম্যান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরিন্দর সিং। চিনের তরফে প্রতিনিধিত্ব করেন পিপলস লিবারেশন আর্মির সাউথ শিনজিয়াং মিলিটারি রিজিয়ন-এর মেজর জেনারেল লিউ লিন। আপাত নিম্নস্তরের এই তিন বৈঠক থেকে কী উঠে এল, দুই দেশ কোন বিষয়ে সহমত, কোথায় বিরোধ- সেদিকে তীক্ষ্ণ নজর ছিল দিল্লির।
উল্লেখ্য, চিনের ক্ষমতা বিন্যাস অনুসারে বিদেশমন্ত্রীর থেকে বেশি ক্ষমতাধারী স্টেট কাউন্সিলর। ওয়াং ই এই দুই পদের দায়িত্বে থাকায় আলোচনার অগ্রগতিতে বিশেষ ফল মিলেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১৭ সালে বিবাদ প্রশমণেও ই-কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে দেখা গিয়েছিল। সেই সময় শুধু বিদেশমন্ত্রী ছিলেন তিনি।