Advertisment

পরপর চিতার মৃত্যু! রোধে বড় ভাবনা কুনো জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষের

কেন্দ্রের তরফে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়ার আন্তর্জাতিক চিতা বিশেষজ্ঞ এবং পশুচিকিৎসকদের কাছ থেকেও পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Kuno cheetah death, South African vet expert, case of ‘botulism’, PM Modi, Kuno national park, indian express, indian express news

গত বছর কুনো জাতীয় উদ্যানে স্থানান্তরিত নামিবিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ২০ টি চিতার মধ্যে মার্চ থেকে ছয়টি মারা গেছে।

পরপর চিতার মৃত্যুর জের! গলা থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে রেডিও কলার। গত সপ্তাহে মাত্র কয়েকঘন্টার ব্যবধানে দুটি চিতার মৃত্যু ঘিরে প্রশ্নের মুখে পড়ে ‘প্রজেক্ট চিতা’,। ময়না তদন্তের রিপোর্টে দেখা যায়,ত্বকের ক্ষতের কারণে সেখানে দিনের পর দিন মাছি বসে প্রাণঘাতী সেপ্টিসেমিয়ায় মৃত্যু হয়েছে দুটি চিতার। এরপরই চিতার গলা থেকে রেডিও কলার সরানোর বিষয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কুনো জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষ।

Advertisment

মধ্যপ্রদেশের প্রধান বন সংরক্ষক জে এস চৌহান দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, “আগামীকাল এই বিষয়ে আমাদের একটি বৈঠক রয়েছে আছে। বর্ষার মরসুমে রেডিও কলারের কারণে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি চিতা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন আর্দ্র আবহাওয়ায় চিতার গলায় লাগানো ‘স্যাটেলাইট কলার’প্রদাহ, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এবং সেপ্টিসেমিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে চিতাদের। তা থেকেই মৃত্যু হচ্ছে একের পর এক চিতার। মৃত্যুর পিছনে অন্য কোন কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে আমাদের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করা দরকার। সেকথা বিবেচনা করেই ১০টি চিতার গলায় লাগানো রেডিও কলার খুলে নেওয়ার বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করা হচ্ছে"। কেন্দ্রের তরফে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়ার আন্তর্জাতিক চিতা বিশেষজ্ঞ এবং পশুচিকিৎসকদের কাছ থেকেও পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।

শুক্রবার সকালে আফ্রিকান চিতা সুরজের মৃতদেহ উদ্ধার হল কুনোর জঙ্গলে। এই নিয়ে গত চার মাসে আটটি চিতার মৃত্যু প্রশ্নের মুখে ফেলেছে দেশের প্রজেক্ট চিতাকে। কিন্তু কেন এভাবে মরতে হচ্ছে একের পর এক চিতাকে, সেই নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। চিতা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন কুনো জাতীয় উদ্যানে চিতার মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ গলায় থাকা ‘স্যাটেলাইট কলার’। তাঁরা মনে করছেন ভারতের মত দেশে আর্দ্র আবহাওয়ায় চিতার গলায় লাগানো ‘স্যাটেলাইট কলার’প্রদাহ, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এবং সেপ্টিসেমিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে চিতাদের। তা থেকেই মৃত্যু হচ্ছে একের পর এক চিতার।

গত প্তাহেই মৃত্যু হয় দুটি চিতার। শুক্রবার এবং মঙ্গলবার কুনো জাতীয় উদ্যানে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় দুটি চিতাকে। ‘স্যাটেলাইট কলার’সম্পর্কিত সক্রমণের কারণে চিতাদের মৃত্যু হচ্ছে বলেই মনে করছেন চিতা বিশেষজ্ঞরা। এবিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক অ্যাড্রিয়ান টর্ডিফ বলেছেন, “দুটি চিতার ক্ষত নিশ্চিতভাবেই অন্য কোন প্রাণীর আক্রমণের কারণে ঘটেনি বরং এমন একটি সমস্যার কারণে ঘটেছে যা আমরা আগে থেকেই ভাবিনি। আমরা চিতাদের গলায় যে স্যাটেলাইট কলার লাগিয়েছি তা থেকেই আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে, কলারের নীচে জল জমে এবং ত্বক ক্রমাগত ভিজে থাকছে।সেই থেকেই তৈরি হচ্ছে ক্ষত। এর থেকেই সেপ্টিসেমিয়ায় মারা যাচ্ছে চিতাগুলি, প্রাথমিক ভাবে এমনটাই মনে করা হচ্ছে’।

মঙ্গলবার মৃত চিতার প্রাথমিক ময়না তদন্ত এবং উভয় মৃত চিতার ঘাড়ের কাছের ক্ষতের ভিডিও ক্লিপ থেকে এটা স্পস্ট ত্বকের ক্ষতের কারণে সেখানে দিনের পর দিন মাছি বসে প্রাণঘাতী সেপ্টিসেমিয়ায় মৃত্যু হয়েছে দুটি চিতার। চিতার গতিবিধি ট্র্যাক করতেই এই ধরণের স্যাটেলাইট কলার লাগানো হয়। টর্ডিফ আরও বলেছেন, ‘চিতাগুলিকে ট্র্যাক করার জন্য আমাদের অন্য উপায় ভাবতে হবে। কারণ এখন বর্ষার মরসুম। গলায়, ঘাড়ে কলারের কারণে জল জমার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি’। মঙ্গলবার মৃত চিতাটির প্রাথমিক ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে চিতাটির ঘাড়ে উপরিভাগের ক্ষত ছিল। হৃদপিণ্ড, ফুসফুস এবং কিডনি ফেলিওয়ের কারণে মৃত্যু হয়েছে চিতাটির। টর্ডিফ বলেন, ‘রিপোর্টে যা উল্লেখ করা হয়েছে তা সেপ্টিসেমিয়ার সঙ্গে একেবারেই সামঞ্জস্যপূর্ণ’।

Kuno National Park
Advertisment