কেন্দ্রের অনুমান, মে মাসের শেষ বা জুনের শুরুতে ফের করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়বে। সেই সময় ভারতে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে প্রায় ১২ দিন সময় লাগতে পারে। লকডাইনের মেয়াদ ৩ মে পর্যন্ত। কিন্তু, তারপর কী হবে? কোন পথে শিথিল হবে লকডাউন? করোনা সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি ও মৃত্যুর সংখ্যা বিবেচনা করে লকডাউন শিথিলতার কথা বিবেচনা করা হবে বলে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, পরিসংখ্যানের বিচারে বর্তামানে প্রায় ৭.৫ দিনে করোনা সংক্রমণের হার দ্বিগুণ হচ্ছে। লকডাউনের আগে এই হার ছিল ৩.৪ দিন। চলতি সপ্তাহের শেষে করোনা সংক্রমণের হার দ্বিগুণ বৃদ্ধিতে সময় লাগতে পারে প্রায় ১০ দিন। আর মে মাসের শেষ করোনা দ্বিগুণ ছাড়তে প্রায় ১২ দিন সময় লাগতে পারে।
আরও পড়ুন- করোনাক্রান্তের সংখ্যার দ্বিগুণ বৃদ্ধি, ভারতে ও অন্যত্র
সূত্রের খবর, 'ভারতে করোনা সংক্রমণের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ভাইরাস দ্বিগুণ হারে ছড়াতে ৩.৪ দিন লেগেছিল। অনুমান, এপ্রিলের শেষ বা মে মাসের শুরুতে ওই বৃদ্ধি বেড়ে হবে ১২ দিন। কিন্তু, মে মাসের ৩ তারিখের পর পর্যায়ক্রমিকভাবে লকডাউন শিথিল হতে শুরু হলে ধরে নেওয়া যায় সংক্রমণের হার বাড়বে। মে মাসের শেষ বা জুনের শুরুতে ফের একবার করোনাভাইরাসের বাড়বাড়ন্ত লক্ষ্য করা যাবে।' তবে এতে খুব ভয়ের কিছু নেই বলেই মনে করছে কেন্দ্র। সূত্র জানাচ্ছে, 'লকডাউনের ফলে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পারস্পরিক দূরত্ব, মাস্ক, স্যানিটাইজারের ব্যবহার প্রসঙ্গে মানুষ অভ্যস্থ হয়ে পড়েছে। অনুমান, মে মাসের শেষ বা জুনের শুরুতে করোনার প্রকোপ বাড়লেও তা দ্বিগুণ হতে কমপক্ষে ৫ দিন বা তার বেশি সময় নেবে।'
করোনা সংক্রমণের হার গ্রামের চেয়ে মেট্রো শহর বা শহরাঞ্চলে বেশি। সূত্র জানিয়েছে, 'তবে, মুম্বই, ইন্দোর এবং চণ্ডীগড় যেমন আমাদের দেখিয়েছে, করোনা মোকাবিলায় অনেক অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। কখনও শহরে মানুষের মধ্যে অসচেতনতার বোধ পরিলক্ষিত হয়েছে। ফলে সংক্রমণ ছড়িয়েছে বেশি। আবার কখনও শহরে বাসিন্দারা একযোগে করোনার মোকাবিলা করছে।'
৩ মে পর লকডাউন দেশের সর্বত্র একযোগে শিথিল হবে না। করোনা সংক্রমণের গতিপ্রকৃতির উপর তা নির্ভর করবে। এর জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করার কথাও ভেবেছে কেন্দ্রীয় সরকার। লকডাউন সম্পূর্ণ শিথিত হতে সেপ্টেম্বর হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, লকডাউন পর্যায়ক্রমিক শিথিলের ভাইরাস সংক্রমণের বৃদ্ধির হার বাড়লেও তা মার্চ মাসের পরিসংখ্যানকে অতিক্রম করবে না বলেই অনুমান স্বাস্থ্যমন্ত্রকের।
আরও পড়ুন- গ্রামীণ এলাকা সচল, তবে একশ দিনের কাজে পঁয়ষট্টি উর্ধ্বরা অনিশ্চিত
কেন্দ্র মনে করছে, মে মাসের শেষ পর্যায়ে করোনা দ্বিতীয় কামড়ের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো থেকে অন্যান্য বিষয়ে প্রথম পর্যায়ের থেকে ভাল অবস্থায় হবে। ৩ মে-র পরে লকডাউন শিথিলতার মানদণ্ডের বিষয়ে এখনও কিছু স্পষ্ট করা না হলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রক করোনা আক্রান্ত রেড, অরেঞ্জ এবং গ্রিন জোন এলাকার উপর কড়়া নজরদারি চালাচ্ছে।
বর্তমানে দেশে, ৩২১ জেলায় করোনা সংক্রমণ ঘটেনি। ৭৭ জেলায় নতুন করে করোনা সংক্রমণ হয়নি। ১৪ দিনে ৬২ জেলা থেকে, ২১ দিনে ১৭ জেলা থেকে, ও ২৮ দিনে করোনার প্রাদুর্ভাব জেলা থেকে নতুন সংক্রমণের কোনও খবর নেই। তবে, সরকারি এই জোন বিভাজনের নির্ণয় নিয়ে ভারসাম্যতার অভাব রয়েছে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। সরকার অবশ্য লকডাউনের পর ফের করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি রুখতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়া, চিন মডেলকে বিবেচনায় রেখেছে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন