সোমবার থেকে বইয়ের দোকান, সেলুন, হোটেল, বাস চলাচল সহ বেশ কিছু ব্যবসা ফের চালুর অনুমতি দিয়েছে কেরালা সরকার। আর এতেই ক্ষুব্ধ কেন্দ্র। বিজয়ন সরকারের লকডাউন শিথিলের নির্দেশে কেন্দ্রীয় গাইডলাইন ভাঙা হচ্ছে বলে মনে করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। রীতিমতো চিঠি লিখে মন্ত্রক কেরালা সরকারকে অসন্তোষের কথা জানিয়েছে ও কারণ ব্য়াখ্য়া করতে বলেছে। তারপরই সুর নরম কেরালার বাম সরকার। বিযয়টিকে 'ভুল বোঝাবুঝি' বলে ব্যাখ্যা করেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী কাদাকাম্পাল্লি সুরেন্দ্রাণ। করোনার বিরুদ্ধে কেন্দ্র-রাজ্য একযোগে লড়াই চালাবে বলে জানান তিনি।
গত ১৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৩ মে পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির ঘোষণা করেন। সেদিনই তিনি জানান, ২০ এপ্রিলের পরে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হতে পারে। সেইমতো ১৫ এপ্রিল একটি গাইডলাইন প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কিন্তু এদিন সকালে জানা যায়, কেরালায় বিভিন্ন শহরের মধ্যে বাস চলাচলে ছাড় দিয়েছে রাজ্য সরকার। এছাড়াও, স্থানীয় কলকারখানা, বইয়ের দোকান, হোটেল, সেলুন, দু’জন যাত্রী বহনে সক্ষম এমন গাড়ি এবং দু’চাকার গাড়ি চলারও অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এরপরই কেরালার মুখ্যসচিব টম জোসকে চিঠি দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সচিব অজয় ভাল্লা। কেন্দ্রের বক্তব্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের গাইডলাইন অনুযায়ীই পদক্ষেপ করুক রাজ্যগুলোও।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরকেরালা সরকারকে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, 'দেকা যাচ্ছে যে কয়েকটি রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল বিপর্যয় মোকাবিলার আইন, ২০০৫ এর অধীনে দেওয়া নির্দেশিকায় অনুমতি দেওয়া হয়নি এমন কাজও শুরু করার নির্দেশ জারি করছে। কেন্দ্রের লকডাউন সংক্রান্ত নির্দেশিকা মেনেই রাজ্যগুলিতে লকডাউনে ছাড় দিতে হবে। সেগুলো ছাড়া নিজে থেকে অন্য কিছু চালুর নির্দেশ দেওয়ার এক্তিয়ার নেই রাজ্যের।'
আরও পড়ুন- গ্রামীণ এলাকা সচল, তবে একশ দিনের কাজে পঁয়ষট্টি উর্ধ্বরা অনিশ্চিত
এরপরই কেরালার পর্যটনমন্ত্রী কাদাকাম্পাল্লি সুরেন্দ্রাণ বলেন, 'কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা মোতাবেকই লকডাউন শিথিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আমি মনে করছি, এখানে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, যে কারণে কেন্দ্রের তরফে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। রাজ্যের তরফে ব্যাখ্যা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে পৌঁছলেই সমস্যা মিটে যাবে। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের অবস্থান এক। এক্ষেত্রে কোনও পারস্পর বিরোধীতা নেই।' লকডাউনের মত বিষয় একেবারেই নতুন হওয়ার দরুন এই সমস্যা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
কেরালার পাশাপাশি, মোদী সরকারের তরফে বেশ কয়েকটি রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে যে, লকডাউন ভাঙলে বিপদ বাড়বে। করোনা সংক্রমণ মোকাবিলা অসম্ভব হয়ে পড়বে। চিঠিতে উল্লেখ, মুম্বই, পুনে, ইন্দোর, জয়পুর, কলকাতা সহ বাংলার বেশ কয়েকটি এলাকার অবস্থা 'অত্যন্ত গুরুতর'। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে যে, বহু জায়গায় স্বাস্থ্যকর্মী চিকিৎসকদের উপর হামলা হচ্ছে, লকডাউন মানা হচ্ছে না। এগুলো রাজ্য সরকারের বিশেষভাবে নজর দেওয়া উচিত।।
কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান ও বাংলার বাস্তব অবস্থা খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় আন্তঃমন্ত্রণালয় দল যাবে। প্রয়োজনে জরুরি নির্দেশ দেওয়া হবে। এই দল রিপোর্ট দেবে কেন্দ্রকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, 'কেন্দ্রীয় আন্তঃমন্ত্রণালয় দল গাইডলাইন মেনে লকডাউন বলবৎ হচ্ছে কিনা তা দেখবে। এছাড়াও অত্যবশ্যকীয় পণ্যের যোগান, পারস্পরিক দূরত্ব, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, স্বাস্ব্যকর্মীদের সুরক্ষা ও গরীবদের ত্রাণ শিবিরের অবস্থা খতিয়ে দেখবেন।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন