Advertisment

'খালিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ প্রচার থেকে প্রাইভেট আর্মি', অমৃতপালের ভয়ঙ্কর কাণ্ড

অমৃতপাল সিংকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই অমৃতপাল সিংকে পলাতক বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Amritpal Singh, Waris Punjab De, Crackdown on Waris Punjab De, Crackdown on Amritpal Singh, Indian Express, India news, current affairs

'অমৃতপাল তৈরি করছিল নিজের খালিস্তানি সেনা, মানব বোমা স্কোয়াড। তদন্তে নেমে চোখ কপালে পুলিশের। পুলিশ ওয়ারিস পাঞ্জাব দে (ডব্লিউপিডি) সংগঠনের ১১২ জন সদস্যকে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করে। শনিবার ৭৮ এবং রবিবার ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে দাবি করা হচ্ছে, অমৃতপালের কাকা হারজিত সিং এবং গাড়ির চালক হরপ্রীত সিং পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।

Advertisment

দু’সপ্তাহ আগেই তৈরি ‘মাস্টার প্ল্যান’, অমৃতপালকে ধরতে শাহ-মান বৈঠকেই পড়ে চূড়ান্ত সিলমোহর। রবিবার পাঞ্জাব পুলিশ একটি নতুন এফআইআর দায়ের করে। তাতে অমৃতপাল সিং এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগ এবং পাশাপাশি মৌলবাদের প্রচার চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। অস্ত্র আইনে অমৃতপালের সাত সহযোগীকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পাঞ্জাব পুলিশ শনিবার অমৃতপালের বিরুদ্ধে একটি বড়সড় অভিযানে নামে।

রাজ্যজুড়ে বন্ধ রাখা হয় ইন্টারনেট পরিষেবা। শুক্রবার থেকেই পাঞ্জাব সরকার তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ শুরু করেছে। শনিবার দুপুর থেকে রাজ্যে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অতিরিক্ত মুখ্য সচিব (স্বরাষ্ট্র) অনুরাগ ভার্মা শুক্রবার নিজেই এই নির্দেশ দিয়েছেন। এরই মধ্যে পুলিশ অনেক তথ্য সামনে এনেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অমৃতপাল আনন্দপুর খালসা ফোর্স (AKF) গঠন করছিলেন। পুলিশ তার বাড়ি ও তার সহযোগীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের গায়ে একেএফ লেখাও দেখে। পুলিশের সন্দেহ করা হচ্ছে, অমৃতপাল একেএফের নামে তার 'প্রাইভেট আর্মি' গঠন করছিলেন।

একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন যে গ্রেফতার হওয়া সকলেই অমৃতপালের কনভয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। ছয়টি বন্দুক ও কিছু কার্তুজ ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। যা অবৈধ। তবে অমৃতপালকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। শনিবার জলন্ধর জেলায় কনভয় থামার সময় তিনি পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে যান। । পুলিশ ইতিমধ্যেই ২৩ ফেব্রুয়ারি অমৃতপাল এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আজনালার ঘটনায় একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, পাঞ্জাব সরকার সোমবার বিকেল পর্যন্ত রাজ্যে মোবাইল ইন্টারনেট এবং এসএমএস পরিষেবার বন্ধের নির্দেশ জারি রেখেছে। এছাড়াও নিরাপত্তার কারণে অমৃতপাল সিংয়ের চার সহযোগীকে রবিবার আসামের ডিব্রুগড় জেলায় আনা হয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। ডিব্রুগড়ের পুলিশ সুপার শ্বেতাঙ্ক মিশ্র জানিয়েছেন, গ্রেফতার হওয়া চারজনকে ডিব্রুগড়ে আনা হয়েছে। চারজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

বর্বোরোচিত তাণ্ডব চোখ কপালে তুলেছিল পাঞ্জাব পুলিশের। গত মাসে, অমৃতপাল সিং তলোয়ার, লাঠি ও বন্দুক নিয়ে সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে অমৃতসরের আজনালা থানায় চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। পরদিনই আদালতের নির্দেশে অমৃতপাল সিংয়ের সহযোগী লাভপ্রীত সিং ‘তুফান’কে মুক্তি দেওয়া এই সময় অমৃতপালের ‘ঘনিষ্ঠ’ মুক্ত করতে পুলিশের সঙ্গে তার সংঘর্ষও হয়।

এই পুরো বিষয়টি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে হতবাক করেছে এবং তখন থেকেই ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’ সংস্থার প্রধান অমৃতপাল সিং তদন্তকারী সংস্থার র‍্যাডারে রয়েছেন। অমৃতপাল সিং খোলাখুলিভাবে খালিস্তানের বিচ্ছিন্নতাবাদী ধারণাকে সমর্থন করার কথা বলেছেন।

অমৃতপাল সিং অমৃতসর জেলার জল্লুপুর খেদা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ২০১২ সালে কাজের জন্য দুবাই গিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে সম্প্রতি ভারতে ফিরে আসেন। এখন তিনি খালিস্তানি সমর্থক দীপ সিধুর সংগঠন ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’-এর প্রধান। সম্প্রতিক পথ দুর্ঘটনায় মারা যান দীপ সিধু। কৃষক আন্দোলনের সময় লাল কেল্লার হিংসার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন তিনি। অমৃতপাল সিং, একজন স্বঘোষিত খালিস্তানি সমর্থক, পৃথক শিখ রাষ্ট্রের দাবি করে আসছে এই সংগঠন এবং একাধিক উস্কানিমূলক বক্তব্যও নাম জড়ায় তার।

শনিবার সন্ধ্যায় পাঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে যে ‘ওয়ারিস পাঞ্জাব দে’ নামের একটি চরমপন্থী সংগঠনের বিরুদ্ধে অপারেশন জারি রেখেছে পাঞ্জাব পুলিশ। তারপর থেকেই খলিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংকে গ্রেফতারি অভিযানে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে পাঞ্জাব পুলিশকে। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে অমৃতপাল সিংকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই অমৃতপাল সিংকে পলাতক বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

Punjab
Advertisment